দেশে এখন
মুঠোফোনের তরঙ্গের দাম টাকায় পরিশোধের তাগিদ
এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে ভেসে যায় কথকতা। ভাবনা ও তথ্যের অবাধ বিচরণ ইথারে। যন্ত্রের জাদুতে নিরবচ্ছিন্ন থাকে তরঙ্গে তরঙ্গে তথ্যের সম্প্রচার।

মোবাইল ফোন অপারেটর ভেদে মুঠোফোন সেবাদানে ভিন্ন ভিন্ন তরঙ্গের প্রয়োজন হয়। দেশে যার দাম নির্ধারণ করে বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশন (বিটিআরসি)। এ প্রতিষ্ঠান থেকে তরঙ্গ কিনে নেয় চার টেলিকম অপারেটর। গ্রামীণফোনের তরঙ্গ এখন ১০৭ দশমিক ৪০ মেগাহার্টজ, রবি ১০৪ মেগাহার্টজ, বাংলালিংক ৮০ মেগাহার্টজ ও টেলিটকের ৫৫ দশমিক ২০ মেগাহার্টজ।

বিটিআরসি ২০২২ সালের ৩১ মার্চ সবশেষ তরঙ্গ বরাদ্দের নিলাম আয়োজন করে। এতে দেশের চার অপারেটর মিলে ১০ হাজার ৬৪৬ কোটি টাকার তরঙ্গ কিনে নেয়।

কিন্তু তরঙ্গের দাম অপারেটরগুলোকে ডলারে মেটাতে হচ্ছে। আগে ডলারের দাম থেকে ৮৫ থেকে ৮৬ টাকার মধ্যে থাকলেও এখন তা বেড়ে ১১০ টাকার বেশি। এতে অতিরিক্ত ব্যয় হচ্ছে মোবাইল কোম্পানির। এ নিয়ে বিটিআরসিকে চিঠি দিয়েছে টেলিকম অপারেটরদের সংগঠন- অ্যামটব। তাতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ও পাকিস্তান বাদে দক্ষিণ এশিয়ার সব দেশই স্থানীয় মুদ্রায় তরঙ্গের দাম পরিশোধ করে। তাই বাংলাদেশের টেলিকম অপারেটররাও স্থানীয় মুদ্রায় বিনিময় করতে আগ্রহী।

অপারেটর রবি বলছে, তরঙ্গ কেনার চেয়েও প্রযুক্তিগত পরিচালনার জন্য দেড়গুণ বেশি খরচ করতে হয়। তরঙ্গের মূল্য উচ্চদরের ডলারে পরিশোধ করতে গিয়ে কোম্পানির ব্যয় বেড়ে যাচ্ছে। তাই দেশীয় মুদ্রায় সেটি পরিশোধের সুযোগ চায় বলে জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।

টেলিকম খাত ও তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ টি. আই. এম. নুরুল কবির বলেন, টাকায় ব্যবসা করে ডলারে তরঙ্গের দাম পরিশোধ করা এখনকার বাজারে দুঃসাধ্য। তাই তরঙ্গ কেনা যত সহজ হবে তত উন্নত ও নিরবিচ্ছিন্ন সেবা পাবে গ্রাহকরা।

বিটিআরসি’র কমিশনার শেখ রিয়াজ আহমেদ বলেন, বিষয়টি নিয়ে আলাপ-আলোচনা হলেও তরঙ্গের দাম ডলারে না স্থানীয় মুদ্রায় নেয়া হবে সে বিষয়ে এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি।

২০০৮ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত তরঙ্গের বেচাকেনা টাকায় হলেও পরে তা ডলারে নির্ধারণ করা হয়। তখন স্থানীয় বাজারে ডলারের দাম অনেকটাই সহনশীল ছিল। তাই অপারেটররা আপত্তি না জানালেও এখনকার পরিস্থিতিতে ডলারে লেনদেনে বাড়তি চাপ অনুভব করছে টেলিকম কোম্পানিগুলো।

এওয়াইএইচ