পিরোজপুরের ইন্দুরকানীর বলেশ্বর নদীর সন্ন্যাসী ফেরিঘাট চালু হয় ২০০৫ সালে। তবে দুই বছরের মাথায় প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড় সিডরে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পর তা বন্ধ হয়ে যায়।
প্রায় ১৬টি বছর পেরিয়ে গেলেও এখনও বন্ধ পিরোজপুর-মোরেলগঞ্জ-মোংলা রুটের এই ফেরিঘাট। নদী পারাপারে এখন একমাত্র ভরসা ট্রলার। যা বর্ষা মৌসুমে ও বৈরি আবহাওয়ায় প্রায়ই বন্ধ থাকে। ফলে প্রতিদিনই ঝুঁকি নিয়ে নদী পার হচ্ছেন অসুস্থ রোগী, শিক্ষার্থীসহ যাত্রীরা।
ভুক্তভোগীরা বলেন, 'প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ যাতায়াত করে। একটু বাতাস হলেই আমরা ট্রলার পাই না। এখানে একটি ফেরির জোর দাবি জানাচ্ছি। যা জীবনমান উন্নয়নের জন্য অতীব জরুরি।'
সন্ন্যাসী ফেরিঘাট ফের সচল হলে বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ ও মোংলার সাথে পিরোজপুরের যোগাযোগ সহজ হবে। পাশাপাশি স্থানীয় ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার ঘটবে। এ অবস্থায় সড়ক ও জনপদ বিভাগের কর্তৃপক্ষ বলছে, ফেরিঘাট পুনরায় চালু করতে চেষ্টা চলছে।
উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী, সড়ক ও জনপদ বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী টি.এম রাজিমুল আলিম বলেন, 'ফেরিঘাট স্থাপনের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি দেওয়া হয়েছে। অনুমতি পেলে দ্রুতই এর কাজ শুরু করতে পারবো।'
এদিকে, পিরোজপুরের কচা নদীর বিভিন্ন স্থানে জেগে ওঠা ডুবোচরে মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে টগড়া-চরখালী নৌপথে ফেরি চলাচল। নিয়মিত ড্রেজিং না হওয়া ও ফেরিঘাট এলাকার সামান্য উজানে বেকুটিয়ায় সেতু নির্মিত হওয়ায় অবস্থা প্রকট হয়েছে।
এই ফেরিঘাট দিয়ে পারাপার হয় ঢাকাসহ দক্ষিণাঞ্চলের ১৪টি রুটের যানবাহন। বর্ষাকালে ফেরি চলাচল স্বাভাবিক থাকলে বিপত্তি বাঁধে শীত মৌসুমে। পানি কমে যাওয়ায় নদীতে দেখা দেয় অসংখ্য ডুবোচর। এতে প্রায় প্রতিদিনই আটকে পড়ে ফেরি।
স্থানীয়রা জানান, ফেরি চলাচলে খুব অসুবিধা হয়। ফেরি চরে আটকে গেলে সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় তাদের। ড্রেজিং করার দাবি তাদের।
জেলা প্রশাসন বলছে ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে কচা নদী ডুবোচর দ্রুত অপসারণ করা হবে।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মাধবী রায় বলেন, 'নাব্যতা কমে যাওয়ার কারণেই মাঝে-মধ্যে জনদুর্ভোগের সৃষ্টি হচ্ছে। খনন করার জন্য বিআইডব্লিউটিএকে চিঠি দিয়েছি।'
নদীবেষ্টিত পিরোজপুরসহ অন্যান্য জেলায় যাতায়াত সহজ করতে ফেরি চালুসহ ডুবোচর অপসারণে দ্রুত পদক্ষেপের দাবি স্থানীয়দের।