গতকাল (মঙ্গলবার, ১৬ ডিসেম্বর) রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে আয়োজিত সর্বদলীয় প্রতিরোধ সমাবেশে হাসনাত তার বক্তব্যে বলেন, ‘ভারতকে স্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই, যারা বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব, সম্ভাবনা, ভোটাধিকার ও মানবাধিকারকে বিশ্বাস করে না, তাদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দিচ্ছেন। ভারতের যারা সেপারেটিস্ট আছে বাংলাদেশে আমরা তাদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়ে যে সেভেন সিস্টার রয়েছে সেটাকে ভারত থেকে আলাদ করে দেবো।’
এর পরপরই তার এই বক্তব্য আলোচনায় ছিলো আজ সারাদিন। আজ বিকেলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ‘সেভেন সিস্টার্স’ নিয়ে হাসনাত আবদুল্লাহর গতকাল দেয়া বক্তব্য প্রসঙ্গে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করেন।
তৌহিদ হোসেন বলেন, ‘প্রথমে প্রশ্ন হলো হাসনাত কি সরকারের অংশ? না সে তো সরকারের অংশ না। সরকারের বক্তব্য যদি হতো, হয় সেটা আমি বলতাম বা সরকারের যে সর্বোচ্চ অফিস, সেখান থেকেই বলতো। কাজেই এটা অনেকটাই অবান্তর।’
আরও পড়ুন:
ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক নিয়ে তিনি বলেন, ‘হ্যাঁ, এই ইস্যু নিয়ে কথাবার্তা হচ্ছে। আমরা তাদের হাইকমিশনারকে ডেকেছি, এ ব্যাপারে আমরা যা কিছু বলেছি তারা গ্রহণ করেনি। তাদের কিছু দ্বিমত আছে এই বিষয়ে। একইভাবে আমাদের হাইকমিশনারকেও তারা ডেকেছে। এটা খুব অপ্রত্যাশিত না, এটা ঘটে। একজনকে ডাকা, আরেকজনকে ডাকা হয়।
তিনি আরও বলেন, ‘এটা বাস্তবতাকে মেনে নেয়াই ভালো যে, আসলে এই সরকারের শুরু থেকে আজ পর্যন্ত (সম্পর্কে) টানাপোড়েন তো আছেই ভারতের সাথে।’ তবে সম্পর্কের এই টানাপোড়েন মেনে নিয়েই বর্তমান সরকার ভারতের সঙ্গে একটা ভালো সম্পর্ক তৈরি করার চেষ্টা করছে বলে জানান পররাষ্ট্র উপদেষ্টা।
তিনি বলেন, ‘তবে আমরা চাইলেই যে হবে, এমন কোনো কথা নেই। দুইপক্ষ থেকেই সম্পর্ককে এগোনোর চেষ্টা করতে হবে।’
তৌহিদ হোসেন বলেন, ‘ভারতের কিছু বক্তব্য এসেছে- সেখানে আমাদের কিছু নসিয়ত করা হয়েছে। যে নসিয়ত করা হয়েছে, সেটা আমাদের দরকার আছে বলে মনে করি না। আমরা বাংলাদেশে নির্বাচন কেমন হবে সেটা নিয়ে আমাদের প্রতিবেশীদের উপদেশ চাই না। এই সরকার প্রথম দিন থেকে স্পষ্টভাবে বলে আসছে, অত্যন্ত উচ্চ মানের মানুষ যেন গিয়ে ভোট দিতে পারে সেই পরিবেশ সৃষ্টি করতে চাই; যে পরিবেশ গত ১৫ বছর ছিল না।’
তিনি বলেন, ‘এখন ভারত আমাদের এটা নিয়ে উপদেশ দিচ্ছে। এটা আমি সম্পূর্ণ ‘অগ্রহণযোগ্য’ মনে করি। তারা জানে গত ১৫ বছর ধরে যে সরকার ছিল, যাদের সঙ্গে তাদের অত্যন্ত মধুর সম্পর্ক ছিল। তখন কিন্তু নির্বাচনগুলো প্রহসনমূলক হয়েছে তখন তারা একটি শব্দও উচ্চারণ করেনি। এখন সামনে একটা ভালো নির্বাচনের দিকে আমরা যাচ্ছি।’
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘এ মুহূর্তে আমাদের নসিয়ত করার দরকার নেই। আমরা জানি, আমরা কি করবো। আমরা একটা ভালো নির্বাচন করবো, মানুষ ভোট দিতে পারবে এবং যাদের ভোট দিবে তারাই নির্বাচিত হবে।’





