শুধু শাস্তি নয়, মানুষের আচরণ বদলানোই হবে প্রকৃতি রক্ষার মূল পথ: উপদেষ্টা রিজওয়ানা

উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান
উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান | ছবি: সংগৃহীত
0

নতুন আইনে বন্যপ্রাণী হত্যা মামলায় জামিন থাকবে না। কড়াকড়ি কার্যক্ষেপের মাধ্যমে বন্যপ্রাণী রক্ষার সংকল্প জানালেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন ও পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। তিনি বলেন, ‘শুধু শাস্তি নয়, মানুষের আচরণ বদলানোই হবে প্রকৃতি রক্ষার মূল পথ।’

রাজধানীর আগারগাঁওয়ের বন ভবনে আন্তর্জাতিক মিঠাপানির ডলফিন দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় আজ (রোববার, ২৬ অক্টোবর) এ কথা বলেন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।

তিনি বলেন, ‘নতুন বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইন প্রণয়ন প্রক্রিয়ায় এগিয়ে এসে বন্যপ্রাণী হত্যা, বিশেষ করে মেছোবিড়াল, ডলফিন বা অরন্যজ প্রাণীর উপর নির্বিচারে আক্রমণ সাধারণ অপরাধ নয়। এটিকে জাতীয় অপরাধ হিসেবে গৃহীত করা হচ্ছে। তাই সংশ্লিষ্ট ধারায় জামিনের সুযোগ না রাখার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে যাতে দমনে তাৎক্ষণিক ও কড়া বার্তা যায়।’

সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘মেছো বিড়ালকে মেছো বাঘ বলে ভুলভাবে দমন করা, প্রাণী নির্যাতন ভিডিও তুলে সামাজিক জালিকরণ, এসব আচরণগত অপরাধের ধারাবাহিকতা আমাদের প্রাকৃতিক ভারসাম্য নাশ করছে। আইনের ব্যতীত মনস্তাত্ত্বিক পরিবর্তনেও কাজ করতে হবে। মানুষকে প্রাণীর মূল্য বোঝাতে হবে।’

আরও পড়ুন:

উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘বনবিভাগ একা করে সব কাজ সম্পন্ন করতে পারবে না। এজন্য তারা নেটওয়ার্ক অব ভলান্টিয়ার্স গঠন করতে চান। এই নেটওয়ার্কে দেশের বিভিন্ন এনজিও, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ও বিশ্ববিদ্যালয়িভিত্তিক গবেষকরা যুক্ত হবেন। তারা মাঠ পর্যায়ে বন্যপ্রাণী রক্ষায় তাৎক্ষণিক সহযোগিতা, নজরদারি ও সচেতনতা কর্মসূচি চালাবেন।’

রিজওয়ানা বলেন, ‘বন্যপ্রাণী ইউনিট খুললে বনবিভাগ নিজস্ব উদ্যোগে নয়, স্বেচ্ছাসেবী নেটওয়ার্কের মাধ্যমে কার্যক্রম দ্রুত বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে।’

আলোচনায় বনরক্ষায় প্রযোজ্য প্রযুক্তি ও মানবিক উদ্যোগের কথাও উঠে আসে।

উপদেষ্টা বলেন, ‘পশুপালন ও বন এলাকায় মোবাইল মনিটরিং, হটলাইন ও পর্যটনশীল এলাকায় সচেতনতা কর্মসূচি বাড়াতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘একটি প্রাণীর অস্তিত্বের সঙ্গে অন্যটির অস্তিত্ব জড়িত, এজন্য আমাদের আচরণগত পরিবর্তন অবলম্বন না করলে যে কোনো আইনি পুরস্কারই অপ্রতুল হবে।’

সভার অন্যান্য বক্তারা প্রথমতায় বন্যপ্রাণী নিয়ে কাজ করা এনজিও প্রতিনিধি ও গবেষকরা বলেন, কঠোর আইনি ধারা থাকলেই অপরাধ কমবে, তবু তা মাঠে কার্যকর করতে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত রেঞ্জার, দ্রুত আইন প্রয়োগ ও সামাজিক অংশগ্রহণ অপরিহার্য। তারা বনবিভাগকে অনুরোধ করেন, স্বল্পসময়েই নিত্যনতুন মনিটরিং টিম গঠন ও জাতীয় হটলাইন চালু করতে।

সেজু