ঢাকার মেরুল বাড্ডায় ১৯৮১ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় আন্তর্জাতিক বৌদ্ধ বিহার। বাংলাদেশে বৌদ্ধদের ধর্ম, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য সংরক্ষণ এবং স্বধর্মের প্রচার ও প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছিল প্রতিষ্ঠানটি। আন্তর্জাতিক বৌদ্ধ বিহারে সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে নির্মিত হচ্ছে সম্প্রীতি ভবন। রোববার যার ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করলেন প্রধান উপদেষ্টা।
বাংলাদেশে বৌদ্ধ ধর্মের বেশিরভাগ লোকেরই বসবাস পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে। তাই প্রসঙ্গক্রমেই চলে আসে সেখানকার শান্তি শৃঙ্খলার কথা। অনুষ্ঠানে চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষায় কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা।
তিনি বলেন, 'বুদ্ধ ধর্মের এখনও ঠিকানা চট্টগ্রাম। আপনাদের সাথে দেখা হয়ে খুব খুশি হইলাম। ভবিষ্যতে যেন খানে কটা সুন্দর জিনিস হয়।'
তিনি জানান, নানা মত থাকলেও বাংলাদেশ ঐক্যবদ্ধ, সব ধর্মের মানুষ মিলে এক পরিবারের সদস্য। সম্প্রীতি ভবন বাংলাদেশের সম্প্রীতি ও মানবতার ঐতিহ্যকে ধারণ করে জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে গৌরবময় ভূমিকা পালন করবে বলেও প্রত্যাশার কথা জানান প্রধান উপদেষ্টা।
তিনি বলেন, 'নানা মত, ধর্ম, রীতিনীতির মধ্যেও আমরা এক পরিবারের সদস্য। এ দেশের হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান, পাহাড় সমতলের বিভিন্ন সম্প্রদায়, জনগোষ্ঠী সবমিলিয়ে দেশের মানুষের বিচিত্র ভাষা, সংস্কৃতি ঐতিহ্য।'
এসময় পহেলা বৈশাখকে সম্প্রীতির প্রতীক হিসেবে উল্লেখ করে প্রত্যেক ধর্ম এবং জাতের মানুষকে নিজ নিজ রীতিতে নববর্ষ উদযাপনের আহ্বান জানান ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
তিনি বলেন, 'আগামীকাল পহেলা বৈশাখ আমাদের এ সম্প্রীতির অন্যতম প্রতীক। প্রত্যেকে নিজ নিজ উপায়ে নিজেদের রীতি অনুযায়ী আগামীকাল উদযাপন করবো। আমরা সবাই সার্বজনীন এ উৎসবে অংশ নিবো।'
একই অনুষ্ঠানে সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান জানান, পার্বত্য চট্রগামে শান্তি প্রতিষ্ঠায় সবকিছু করতে প্রস্তুত সেনাবাহিনী।
ওয়াকার-উজ-জামান বলেন, 'আমরা চাই পার্বত্য চট্টগ্রামে যেন শান্তি বিরাজ করে। তার জন্য যা কিছু করতে হয় আমরা করতে রাজি আছি।'
নিজেদের মধ্যে নানা মতভেদ থাকলেও পরস্পরের প্রতি শ্রদ্ধায় বজায় রাখার আহ্বান জানান সেনাপ্রধান।
তিনি বলেন, 'সমগ্র দেশে এই সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষার জন্য যা কিছু করতে হয় সেটা করার জন্য আমরা সবসময় সদা প্রস্তুত থাকবো। আমি প্রধান উপদেষ্টাকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি তার অনেক কর্মব্যস্ততার মাঝেও উনি রাজি হয়েছেন এখানে এসে। এবং উনি আমাকে অনুপ্রাণিত করেছেন এ কাজের জন্য।'
বাংলাদেশ বুদ্ধিস্ট ফেডারেশন আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ধর্ম উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হাসান, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক উপদেষ্টা সুপ্রদীব চাকমা ও বৌদ্ধ ধর্মের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিরা। অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টার হাতে সম্মাননা স্মারক তুলে দেয় বাংলাদেশ বুদ্ধিস্ট ফেডারেশনের প্রধান।