শুধু সরকারি হিসেবেই ঢাকায় ২০ লাখের বেশি নিবন্ধিত গাড়ি আছে। এর বাইরে প্রতিদিন অন্যান্য শহর থেকে রাজধানীতে যাওয়া আসা করে আরও প্রায় ৮ থেকে ১০ লাখ যানবাহন।
বাংলাদেশে সব ধরনের ইঞ্জিনচালিত গাড়ির জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার হয় গ্যাস ও তেল। প্রায় ৩০ লাখ গাড়িতে তেল ও গ্যাসের যোগান দিতে রাজধানী ও এর আশপাশে ফিলিং স্টেশন আছে মাত্র ৯৮টি। তাই তেল-গ্যাস নিতে স্টেশনগুলোতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়।
বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, গ্যাস কিংবা তেল সব স্টেশনেই গাড়ি নিয়ে চালকদের দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করতে হচ্ছে। চালকরা বলেন, ঢাকায় গাড়ির তুলনায় ফিলিং স্টেশনের সংখ্যা খুবই কম। তাই সিরিয়াল দিয়ে গ্যাস ও তেল নিতে প্রতিদিন ২ থেকে ৩ কর্মঘণ্টা নষ্ট হচ্ছে।
তবে সবচেয়ে বেশি অভিযোগ সিএনজি ব্যবহারকারী চালকদের। তারা বলছেন, দিনে নির্দিষ্ট সময় ছাড়া গ্যাস না দেয়ায় তাদের দৈনিক আয়ের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে।
ঢাকার বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, প্রয়োজন অনুযায়ী অনেক এলাকাতেই কোন ফিলিং স্টেশন নেই। আবার যেখানে প্রয়োজন নেই, সেখানে একাধিক স্টেশন আছে। গাবতলী এলাকায় ৬টি স্টেশন থাকলেও ধানমন্ডি ও মোহাম্মদপুরের ভেতরের মূল সড়কে একটিও ফিলিং স্টেশন নেই। আর ফার্মগেটের আশপাশে কোন স্টেশন চোখে পড়ে না।
আবার যাত্রবাড়ী-কাঁচপুর সড়কে ১৪টি স্টেশন থাকলেও নগরীর প্রাণকেন্দ্র মগবাজার, মালিবাগে হাতেগোনা ১ থেকে ২টি আছে। একইসঙ্গে মহাখালী ও তেজগাঁও এলাকায় ১৩টি স্টেশন থাকলেও গুলশান, বনানী ও বারিধারা এলাকায় নেই বললেই চলে।
বাংলাদেশ পেট্রোল পাম্প মালিক সমিতির সভাপতি মো. নাজমুল হক বলেন, ঢাকা শহরে ফিলিং স্টেশন করতে যে পরিমাণ বিনিয়োগ প্রয়োজন সে অনুযায়ী মুনাফা না আসায় সবাই এই ব্যবসা গুটিয়ে নিচ্ছেন। আগামীতে আরও ফিলিং স্টেশন কমে যাওয়ার শঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, সরকারের কাছে ফিলিং স্টেশন করার মতো জায়গা নেই। আর ভবিষ্যতে তেলের গাড়ি থাকবে কি-না সেটা প্রশ্নের বিষয়। তেল ও গ্যাস ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় সরকার আগামীতে সব যানবাহন বিদ্যুৎচালিত করার পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছে বলে জানান তিনি।