গত কয়েক সপ্তাহ ধরে খুলনার বাজার গুলোতে অস্বাভাবিক হারে ওঠানামা করছে ডিমের দাম। পাইকারি পর্যায়ে প্রতি পিস ডিম বিক্রি হয়েছে প্রায় ১১ টাকা থেকে ১০টাকা ৫০ পয়সা পর্যন্ত। যা খুচরা পর্যায়ে ক্রেতাদের কিনতে হয়েছে ১২ টাকায়।
বিক্রেতাদের একজন বলেন, ‘আমাদের ব্যবসা ছেড়ে দেয়ার অবস্থা হয়েছে। করপোরেট শাখাগুলো ইচ্ছামতো প্রতিদিন রেট করছে’।
ক্রেতাদের একজন বলেন, ‘মাছ আমাদের নাগালের বাহিরে থাকায় ডিম খেয়ে থাকি। এখন যদি ডিমের দামই বাড়তি হয় তাহলে আমরা কি খাবো’।
পোল্ট্রি শিল্প মালিক সমিতির দেয়া তথ্য অনুযায়ী, খুলনার ডুমুরিয়া, বটিয়াঘাটা, রূপসা সহ বিভিন্ন এলাকায় বর্তমানে ছোট বড় প্রায় দেড় হাজার ডিম উৎপাদনকারী খামার রয়েছে।
গত কয়েক বছরে নানা প্রতিবন্ধকতার মুখে পড়তে হচ্ছে খামারিদের। খামার পরিচালনার জন্য সব থেকে বেশি খরচ হয় মুরগির খাবারের জন্য। সয়াবিন ও ভুট্টা বেশি ব্যবহার করা হয় খামারে।
আরও পড়ুন:
বর্তমানে প্রতি কেজি সয়াবিন খামারিদের কিনতে হচ্ছে ৬৪ থেকে ৭০ টাকায়। যা গত ২ সপ্তাহ আগেও পাওয়া গেছে ৫০ টাকা কেজি দরে। বছর খানেক আগে যে ভুট্টা মাত্র ১৮ থেকে ২০ টাকা কেজি দরে পাওয়া যেতো তা এখন পৌঁছেছে ৩৩ টাকা পর্যন্ত। এছাড়া ওষুধ ও শ্রমিকের খরচতো বেড়েছেই। সে কারণে উৎপাদন খরচের তুলনায় বছরের পর বছর কম মূল্যে বাজারে ডিম সরবরাহ করতে হচ্ছে প্রান্তিক পর্যায়ের খামারিদের।
খুলনা এগ্রো ফার্ম প্রজেক্ট স্বত্বাধিকারী এমডি মামুনুর রহমান বলেন, ‘যে খাবার আমরা কিনতাম ৪০-৪৫ টাকা কেজি এখন সে খাবার কিনতে হচ্ছে ৬৫-৭০ টাকা কেজি। প্রতি কেজিতে ২৫-৩০ টাকা বেড়েছে। খাবার ম্যানুফেকচার কোম্পানি, ওষুধ কোম্পানিকে বললে তারা ডলার রেট, আন্তর্জতিক বাজারের দোহাই দেয়’।
প্রান্তিক পর্যায়ে মুরগির ডিম ও মাংস উৎপাদনকারী খামারিদের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো। এসব বড় বড় প্রতিষ্ঠান হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করছে পোল্ট্রি শিল্পতে। ডিমের বাজারে করপোরেট প্রতিষ্ঠানের আধিপত্য কমাতে সরকারের কঠোর তদারকি প্রয়োজন বলে মনে করছেন সংগঠনের নেতারা।
খুলনা পোল্ট্রি শিল্প মালিক সমিতির সভাপতি মাওলানা ইব্রাহিম ফয়জুল্লাহ বলেন, ‘সরকার প্রকৃতভাবে বাছাই করে, খামারিকে স্বল্পমূল্যে কৃষি ভর্তুকির টাকা যথাযথ জায়গায় দিতে পারলে দেশের মানুষ উপকৃত হতো।’
খুলনার ডিম ও মাংস উৎপাদনকারী মুরগীর খামারিরা দিনের পর দিন ভুগছেন নানা সমস্যায়। তাই সরকারি তদারকির পাশাপাশি প্রান্তিক পর্যায়ে এ শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে বিনিয়োগ সহায়তা চান খামারিরা।





