সাধারণত রমজানে চাহিদা কম থাকায় স্থিতিশীল থাকে চালের বাজার। তবে, এবার হঠাৎ কেজিতে ২ থেকে ৪ টাকা দাম বৃদ্ধি ভোক্তাদের কাছে ছিল অনেকটাই অপ্রত্যাশিত। গেল জানুয়ারির মাঝামাঝি সময় অস্থিতিশীল চালের দাম নিয়ন্ত্রণে নানা পদক্ষেপ নেয় সরকার। যার দু'মাস না যেতেই আবারও বাজার চড়া বাঙালির প্রধান এই খাদ্যপণ্যের।
আমন মৌসুমে ধান কাটা-মাড়াই শেষ হয়েছে অনেক আগে। হাট-বাজারেও কমেছে ধানের সরবরাহ। প্রতি মণ ধানের দাম বেড়েছে ১০০ টাকা পর্যন্ত। এই অজুহাতে শস্যভাণ্ডার খ্যাত উত্তরের জেলা নওগাঁর পাইকারি মোকামে প্রকারভেদে কেজিতে ২-৩ টাকা বেড়েছে চালের দাম।
এদিকে, খুচরা বাজারে এখন পর্যন্ত প্রতিকেজি চালে বেড়েছে ১ থেকে ২ টাকা।
বিক্রেতারা জানিয়েছেন, সব ধরনের চালের দাম আগের থেকে বেশি। বাজারে তেমন বেচা বিক্রি নেই।
চট্টগ্রামের সর্ববৃহৎ চালের বাজার পাহাড়তলীতে প্রতিদিন প্রায় ৭শ' টন চাল বিক্রি হয়। সরবরাহে ঘাটতি না থাকলেও ৫০ কেজির বস্তায় দাম বেড়েছে ১৫০ টাকা পর্যন্ত। ঈদের পর যা আরও বাড়ার আভাস দিচ্ছেন বিক্রেতারা। তারা জানান, মৌসুমের শুরুতেই ধান সংগ্রহ হয়, তাই এখন মিল মালিকদের ধানের দাম বৃদ্ধির দাবি অযৌক্তিক।
পাহাড়তলী বণিক সমিতির সহ-সভাপতি জাফর আলম সওদাগর বলেন, 'এই মুহূর্তে চালের দাম বাড়ার কোন কারণ খুঁজে পাচ্ছি না। মিল মালিকরা ধান যা কেনার আগেই কিনে নিয়েছে। এখন তো বৃদ্ধি হওয়ার কথা না।'
পাহাড়তলী বণিক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এস এম নিজাম উদ্দীন বলেন, 'বোরো মৌসুম না আসা পর্যন্ত চালের দাম এমনই থাকবে। মে মাসের দিকে চালের বাজার কমতে পারে।'
আবারও ঊর্ধ্বমুখী চালের বাজার। ছবি: এখন টিভি
দেশের অন্যতম সরু চালের মোকাম কুষ্টিয়ার খাজানগরেও বেড়েছে চালের দাম। মিলগেটে মিনিকেট, কাজললতা, বাসমতিসহ সবধরনের চালে কেজিতে বেড়েছে ২ থেকে ৪ টাকা। মিল মালিকরা বলেন, '১০০ থেকে ১৭০ টাকা পর্যন্ত ধানের দাম বেড়েছে। যার কারণে আমাদের কম দামে চাল দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।'
তবে, দাম বৃদ্ধির প্রভাব পড়েনি খুচরা বাজারে। বিক্রেতারা জানান, দাম বেশি হওয়ায় মিলগেট থেকে চাল কিনছেন না তারা।
খুচরা বিক্রেতারা বলেন, আগে যে দামে চাল কিনেছিলেন সেই দামে বিক্রি করছেন। আগের চাল শেষ হওয়ার পরে নতুন চাল কিনলে তখন দাম বাড়তে পারে।'
যশোরে চালের দাম বাড়ায় ক্ষুব্ধ ক্রেতারা। কমেছে বিক্রি। ব্যবসায়ীদের দাবি মিল মালিকদের কারসাজিতে বাড়ছে দাম।
এমন অবস্থায় চালের দাম সাধারণের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখতে মোকামে নজরদারির পাশাপাশি, প্রয়োজনে চাল আমদানির দাবি জানান ক্রেতারা।