দক্ষিণ আমেরিকা
বিদেশে এখন
0

অ্যামাজনের নদীগুলোর পানির স্তর ইতিহাসের সর্বনিম্নে পর্যায়ে

হুমকিতে পৃথিবীর ফুসফুস

জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাবে হুমকির মুখে পড়েছে অ্যামাজন। পৃথিবীর ফুসফুস খ্যাত রেইন ফরেস্ট থেকে সৃষ্ট নদীগুলোর পানির স্তর নেমে যাচ্ছে ইতিহাসের সর্বনিম্ন পর্যায়ে। সেখানে জেগেছে বিস্তীর্ণ চর। এতে নদীর ওপর নির্ভরশীল মানুষের জীবিকা উপার্জনের সব পথই বন্ধের দোরগোড়ায়।

পৃথিবীর ফুসফুস হিসেবে খ্যাত অ্যামাজন। পুরো পৃথিবীর ১৫০ থেকে ২০০ বিলিয়ন টন কার্বন নিজের মধ্যে ধারণ করে অ্যামাজন রেইন ফরেস্ট। এখানকার বনাঞ্চল থেকে সৃষ্ট নদীগুলোর ওপর নির্ভরশীল অ্যামাজন সংলগ্ন আট দেশের বাসিন্দা।

তবে, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে প্রাকৃতিক দুর্যোগে বিপর্যস্ত দক্ষিণ আমেরিকা মহাদেশ। এর সরাসরি প্রভাবে নিয়মিতই দাবানলের শিকার হচ্ছে অ্যামাজন। বছরের প্রথমার্ধ্বে ব্রাজিলের অ্যামাজনে দাবানল সৃষ্টি হয়েছে প্রায় সাড়ে ১৩ হাজার বার। যা গেল ২০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। দাবানলের ভয়াবহতায় চার দশকে ২০ শতাংশ এলাকা হারিয়ে গেছে অ্যামাজনের মানচিত্র থেকে। পাশাপাশি অস্বাভাবিক হারে কমছে পানির স্তর। প্রমত্ত নদীগুলোয় জেগেছে বিস্তীর্ণ চর।

অ্যামাজনের নদীতে দেখা দিয়েছে বিস্তীর্ণ চর। ছবি: সংগ্রহীত

অ্যামাজন থেকে সৃষ্ট সবচেয়ে বড় নদী মাদেইরা। ব্রাজিলে প্রবাহিত এই নদীর পানির স্তর খরার কারণে নেমেছে ইতিহাসের সর্বনিম্ন স্তরে। এতে ভয়াবহ দুর্যোগে মাদেইরার ওপর নির্ভরশীল মানুষের জীবন। নদী পানিশূন্য থাকায় থমকে গেছে কৃষিকাজ থেকে শুরু করে মৎস্য আহরণ। নৌ যোগাযোগের সেবা দেয়া জনগণও এখন বেকার।

স্থানীয় একজন বলেন, 'আমার বয়স ৫৭ বছর। এই সময়ে আমি কিংবা আমার বাবা, কেউই এমন খরা দেখি নি। পুরো নদীতেই চর জেগেছে। কৃষিকাজ এখানকার মানুষের জীবিকার অন্যতম প্রধান উৎস। কিন্তু পানি না থাকায় কৃষিকাজ করা সম্ভব হচ্ছে না। একই অবস্থা মৎস্যজীবীদের।'

ব্রাজিলের ভূতাত্ত্বিক সেবা সংস্থা এসজিবি'র প্রতিবেদন বলছে, অ্যামাজন অববাহিকার সকল নদীর পানির স্তর নেমে যেতে পারে সর্বনিম্ন স্তরে। আগামী কয়েকমাসে বৃষ্টির পূর্বাভাস না থাকায়, অ্যামাজন সংশ্লিষ্ট নদীগুলোতে পানি সংকট আরও তীব্র হবার শঙ্কা এসজিবির।

পূর্ববর্তী বছরগুলোর মতো এবার প্রত্যাশামতো শীতল হয়নি প্রশান্ত মহাসাগর। এতে আবারও পৃথিবীর বুকে ফিরে এসেছে এল নিনো। যা স্থায়ী হতে পারে পাঁচ থেকে সাত বছর। তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণে দাবানল ও খরার প্রভাব ভোগ করতে হচ্ছে আমাজন সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দাদের। জলবায়ু বিজ্ঞানীরা বলছেন, জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর নির্ভরশীলতা না কমালে বায়ুমণ্ডলের উষ্ণায়ন একসময় পরিণত হবে অগ্নিকুণ্ডে। যা প্রাণিকুলের বসবাসের অনুপোযোগী করে তুলবে ধরিত্রীকে।

এমএসআরএস

এই সম্পর্কিত অন্যান্য খবর