খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের সর্বোচ্চ ধর্মগুরু ২৬৬তম পোপ ফ্রান্সিস ২০১৩ সালে নিয়োগ পান। বিশ্বের ১২০ কোটি ক্যাথলিক খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের আধ্যাত্মিক নেতা হিসেবে নিজেকে তুলে ধরেছেন বহুমাত্রিক পরিবর্তনের অগ্রদূত হিসেবে। প্রায় এক হাজার ৩০০ বছরের মধ্যে প্রথম অ-ইউরোপীয় পোপ ফ্রান্সিসের জন্মস্থান আর্জেন্টিনায়।
পোপের মৃত্যুর খবর আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ঘোষণা করে ভ্যাটিকান সিটি। কার্ডিনাল ক্যামেরলেঙ্গোর সামনে একজন চিকিৎসক পোপের পালস পরীক্ষা করেন। এরপর পোপের নাম ধরে তিনবার ডাকা হয়। সাড়া না মিললে অফিসিয়ালি মৃত্যু নিশ্চিত করেন পোপের পরের অবস্থানে থাকা কার্ডিনাল ক্যামেরলেঙ্গো। যদিও অতীতে পোপের মাথায় রুপোর হাতুড়ি দিয়ে তিন বার আঘাত করে মৃত্যু নিশ্চিত করা হতো।
মৃত ঘোষণার পর পোপের হাতে থাকে রিং অফ ফিশারম্যান খুলে নিয়ে তা নষ্ট করে দেয়া হয়। এই আংটি হলো পোপের পরিচয়। প্রত্যেক পোপের জন্য আলাদা করে তৈরি করা হয় রিং বা আংটি। পোপের মৃত্যুতে নয় দিনের শোক ঘোষণা করে চার্চ। নিয়ম অনুযায়ী পোপকে সমাহিত করতে হয় মৃত্যুর চার থেকে ছয় দিনের মধ্যে।
পোপের মৃত্যু ও নতুন পোপ নির্বাচনের মধ্যবর্তী সময়কে বলা হয় 'সেডে ভেকান্টে' অর্থাৎ আসন খালি। এ সময় কলেজ অব কার্ডিনালরা চার্চের প্রশাসন তত্ত্বাবধান করেন। তারাই নতুন পোপ বেছে নেয়ার যাবতীয় আয়োজন করেন। পোপের মৃত্যুর ১৫ থেকে ২০ দিন পর শুরু হয় নতুন পোপ নির্বাচনে ভোটাভুটি।
কেবল ৮০ বছরের কম বয়সী কার্ডিনালদের ভোট দেয়ার ক্ষমতা আছে। সাধারণত ভোটার সংখ্যা হয়ে থাকে ১২০ জন। ভোটের আগে তাদের সিস্টিন চ্যাপেলে নির্জনে এবং বাইরের প্রভাব থেকে মুক্ত রাখা হয়। পোপ নির্বাচিত হতে কার্ডিনালদের দুই তৃতীয়াংশ ভোট প্রয়োজন। এরপর ভোটার স্লিপ নির্দিষ্ট চুল্লিতে পুড়িয়ে দেয়া হয়। চিমনি দিয়ে কালো ধোঁয়া বের হওয়া মানে নির্দিষ্ট সংখ্যক ভোট নিশ্চিত হয়নি। আর সাদা ধোঁয়া নতুন পোপ নির্বাচনের ঘোষণা দেয়।
নির্বাচনে পর প্রার্থীকে পোপের নাম বেছে নিতে বলা হয়। এরপর সেন্ট পিটার্স স্কোয়ারের সামনে নতুন পোপকে পরিচয় করানোর পর জনতার উদ্দেশ্যে প্রথম আশীর্বাদ করেন পোপ।
ভ্যাটিকান সিটিতে পোপের নিয়মিত কিছু দায়িত্ব আছে। প্রতি রোববার পর্যটক ও তীর্থযাত্রীদের জন্য সাপ্তাহিক আশীর্বাদে উপস্থিতি থাকেন তিনি। যেখানে উপস্থিত থাকে প্রায় ৫ হাজার তীর্থযাত্রী। এছাড়া, ক্রিসমাস, ইস্টার সানডে ইত্যাদি ধর্মীয় উৎসবে সভাপতিত্ব করেন পোপ।
