ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে বাণিজ্য ও শুল্কনীতির পরে সবচেয়ে আলোচিত-সমালোচিত মার্কিন অভিবাসন নীতি। এবার তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোর অভিবাসন প্রত্যাশীদের ওপর নজর মার্কিন প্রেসিডেন্টের।
গেল বুধবার (২৬ নভেম্বর) ওয়াশিংটন ডিসির ডাউনটাউনে দুই মার্কিন সেনা কর্মকর্তার ওপর গুলি চালায় এক আফগান অভিবাসী। এর জেরে তৃতীয় বিশ্বের দেশ থেকে অভিবাসন স্থায়ীভাবে বন্ধের হুমকি দিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।
যদিও ট্রুথ সোশ্যালে ট্রাম্পের পোস্ট থেকে স্পষ্ট হয়নি তৃতীয় বিশ্বের দেশ বলতে তিনি কি বুঝিয়েছেন। তবে, কোথা থেকে এলো এই তৃতীয় বিশ্বের ধারণা? তা জানতে যেতে হবে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী সময়ে।
আরও পড়ুন:
১৯৪৫ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অবসানের পর যুক্তরাষ্ট্র ও এর মিত্রদের সঙ্গে স্নায়ু যুদ্ধে জড়ায় তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন ও এর মিত্ররা। বিশ্বব্যাপী ক্ষমতার এই দ্বন্দ্ব শেষ হয়েছিল ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর। মার্কিন পশ্চিমা ব্লক আর সোভিয়েত নেতৃত্বাধীন পূর্ব ব্লকের বাইরের দেশগুলোকে সংজ্ঞায়িত করতেই প্রথম প্রয়োগ ঘটে তৃতীয় বিশ্ব শব্দটির।
প্রথম বিশ্বের অন্তর্ভুক্ত ছিল উত্তর আমেরিকা, পশ্চিম ইউরোপ, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া ও অস্ট্রেলিয়া। পশ্চিমা প্রভাবের কারণে আফ্রিকার কিছু অঞ্চলকেও এই তালিকায় ধরা হতো। আর নিরপেক্ষ হলেও সুইজারল্যান্ড, সুইডেন, অস্ট্রিয়া, আয়ারল্যান্ড ও ফিনল্যান্ড ছিল প্রথম বিশ্বের তালিকায়।
আর দ্বিতীয় বিশ্বে অন্তর্ভুক্ত ছিল সোভিয়েত ইউনিয়ন ও পূর্ব ইউরোপ যেমন, পোল্যান্ড, পূর্ব জার্মানি, চেকোস্লোভাকিয়া এবং বলকান অঞ্চল। সাথে ছিল চীন সমর্থিত এশিয়ার কমিউনিস্ট রাষ্ট্র, মঙ্গোলিয়া, উত্তর কোরিয়া, ভিয়েতনাম, লাওস ও কম্বোডিয়া। আর, আফ্রিকা, এশিয়া ও লাতিন আমেরিকার অপেক্ষাকৃত অনুন্নত দেশগুলোকে ধরা হত তৃতীয় বিশ্বের দেশ হিসেবে।
আরও পড়ুন:
মানব উন্নয়ন সূচক বিবেচনায় নিয়ে আফ্রিকার ৩২, এশিয়ার আটটিসহ ক্যারিবীয় ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় কয়েকটি দেশকে তৃতীয় বিশ্বের দেশ হিসেবে উল্লেখ করেছে গবেষণা প্রতিষ্ঠান ওয়ার্ল্ড পপুলেশন রিভিউ। এশিয়া মহাদেশের তালিকায় আছে আফগানিস্তান, বাংলাদেশ, মিয়ানমার ও নেপালের নাম। ওয়ার্ল্ড পপুলেশন ছাড়াও এমন তালিকা আছে একাধিক অলাভজন সংস্থার। যদিও অনুন্নত দেশগুলোকে তৃতীয় বিশ্বের দেশ আখ্যা দেয়াকে অসম্মানজনক বলে মনে করেন অনেকেই।
ফলে ট্রাম্পের এ তালিকায় কোন কোন দেশ অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে- তা এখনও স্পষ্ট নয়। চলতি বছরের জুনে ট্রাম্পের জারি করা নির্বাহী আদেশ ১২টি দেশের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়। আরও ৭টি দেশের ভ্রমণকারীদের ওপর আংশিক নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও, ১৯টি দেশের নাগরিকদের ইস্যু করা গ্রিন কার্ডগুলো পুনরায় পর্যালোচনা করবে ট্রাম্প প্রশাসন। যদিও তালিকাটি প্রকাশ করেনি ওয়াশিংটন।





