গাজার পুনর্গঠনের প্রলোভন দেখিয়ে ফিলিস্তিনিদের উপত্যকাটি থেকে অন্যত্র সরিয়ে নেয়ার চেষ্টা চালাচ্ছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। দ্বিতীয়বার ক্ষমতা গ্রহণের আগেই হয়তো এ নিয়ে ছক কষেছেন তিনি। তাইতো যুদ্ধবিরতির চুক্তির নাটকীয়তার মধ্য দিয়ে এ পর্যায়ে এসে পুরো উপত্যকাটি গ্রাস করতে চান ট্রাম্প।
সোমবার মার্কিন সংবাদমাধ্যম ফক্স নিউজকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেন, ফিলিস্তিনিদের সাময়িকভাবে গাজা ছাড়তে বলা হয়েছে। আর তার এই পরিকল্পনার আওতায় ফিলিস্তিনিদের গাজায় থাকার কোন অধিকার নেই।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘প্রায় ১৯ লাখ ফিলিস্তিনির জন্য নতুনভাবে গড়ে তুলবো গাজাকে। তাদের জন্য নিরাপদ আবাস হবে এটি। এর মধ্যে গাজার নিয়ন্ত্রণ আমার হাতে থাকবে। পরে রিয়েল এস্টেট কোম্পানির হাতে দেয়া হবে।’
ফিলিস্তিনিদের গাজা থেকে বিতাড়িত করা নিয়ে ট্রাম্পের এমন বক্তব্য যুদ্ধাপরাধের সমান বলে দাবি করছেন আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা। যা ১৯৪৯ সালের জেনেভা কনভেনশনের ৪৯ নম্বর আর্টিকেলের পরিপন্থী।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রিন্সটন ইউনিভার্সিটির প্রফেসর কেনেথ রথ বলেন, ‘ফিলিস্তিনিদের বিতাড়িত করা নিয়ে ট্রাম্পের প্রস্তাব মানবাধিকার লঙ্ঘন ও যুদ্ধাপরাধের সমান। যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইল মিলে ফিলিস্তিনিদের নিজ ভূমি থেকে চিরতরে সরিয়ে দিতে চাইছে। এখানে ইসরাইলের হয়ে ট্রাম্প কাজ করছেন।’
এই বিশ্লেষকের মতে, গাজাবাসীকে অনৈতিকভাবে জোরপূর্বক প্রত্যাবাসনের মধ্য দিয়ে উপত্যকাটিতে থেকে ফিলিস্তিন জাতির নাম পুরোপুরি মুছে দিতে চাইছেন ট্রাম্প। ১৯৪৮ সালে নাকবার সময় ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে ইসরাইলিরা যা করেছিলো, তারই পুনরাবৃত্তি ঘটতে যাচ্ছে এবার।
কেনেথ রথ বলেন, ‘গাজায় ২০ লাখ ফিলিস্তিনি আরও একটি নাকবা দেখতে যাচ্ছে। তাদের নিজ ভূমি ছেড়ে চিরতরে চলে যেতে বলছে। এর চেয়ে লজ্জার আর কী হতে পারে।’
আসলে ফিলিস্তিনিদের নিয়ে কী করতে চান ট্রাম্প, তা বোঝা মুশকিল। প্রায় প্রতিদিনই উপত্যকাটি নিয়ে নতুন নতুন ঘোষণা দিচ্ছেন তিনি। এমনকি ট্রাম্পের এসব ঘোষণা স্রেফ কোনো কৌশল কিনা তা নিয়েও প্রশ্ন দেখা দিয়েছে নানা মহলে।