ট্রাম্পের অভিবাসন নীতির বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রে বিক্ষোভ, ভার্জিনিয়ায় অভিযান

উত্তর আমেরিকা
বিদেশে এখন
0

ডোনাল্ড ট্রাম্পের গণ অভিবাসন প্রত্যাবাসনের বিরোধিতা করে অভিবাসীদের 'ডে উইদআউট ইমিগ্রেন্টস' বিক্ষোভ হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন স্থানে। এরপরও অবৈধ অভিবাসীদের উচ্ছেদে অভিযান চালানো হয়েছে ভার্জিনিয়াতে। ট্রাম্পের এই উদ্যোগে ক্ষোভে ফুঁসছে মেক্সিকো, ভেনেজুয়েলাসহ অনেক দেশ। এদিকে, শুল্কারোপ স্থগিত করলেও ট্রাম্পের শর্ত অনুযায়ী, নজরদারি বাড়াতে যুক্তরাষ্ট্র সীমান্তে শত শত সেনা মোতায়েন করেছে মেক্সিকো।

মেক্সিকো আর কানাডার ওপর শুল্কারোপ স্থগিত করলেও সীমান্তে কড়াকড়ি নিয়ে দৃঢ় অবস্থানে ট্রাম্প প্রশাসন। চুক্তি অনুযায়ী, অনুপ্রবেশ ঠেকাতে যুক্তরাষ্ট্র সীমান্তে শত শত সেনা মোতায়েন করেছে মেক্সিকো। একইসঙ্গে, অনুপ্রবেশ, মাদক আর অস্ত্র চোরাচালানের হটস্পট হিসেবে পরিচিত সীমান্ত এলাকাগুলোতে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। মেক্সিকোর আমদানি পণ্যে ২৫ শতাংশ শুল্কারোপের সিদ্ধান্ত স্থগিত করার শর্তে সীমান্তে ১০ হাজার সেনা মোতায়েনের চুক্তি হয়েছে।

এরমধ্যেই লস অ্যাঞ্জেলেসে ট্রাম্পের অভিবাসন নীতির বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করছেন অভিবাসীরা। 'ডে উইদআউট ইমিগ্রেন্টস' শিরোনামের এই আন্দোলনে তাদের হাতে ছিল মেক্সিকো, গুয়াতেমালা আর এল সালভাদরের পতাকা। রাস্তা আটকে দেয়ায় এসময় বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয় পুলিশ।

নিউজার্সির আটলান্টিক সিটিতেও অভিবাসীদের সমর্থনে বিক্ষোভ করেছে শত শত বাসিন্দা। তাদের দাবি, অভিবাসীদের দেশে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া থামিয়ে যুক্তরাষ্ট্রেই তাদের জন্য ব্যবস্থা করতে হবে।

অভিবাসীরাই যুক্তরাষ্ট্রকে তৈরি করেছে দাবি করে, ডে উইদআউট ইমিগ্রেন্টস আন্দোলনে শিকাগোর ট্রাম্প টাওয়ারের সামনেও বিক্ষোভ হয়েছে। তারা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের কোনো খাতই পুরোপুরি অভিবাসীদের বাইরে না।

বিক্ষোভকারীদের একজন বলেন, ‘বাবা মায়ের কাগজপত্র নেই। নিজেদের অস্তিত্ব ভুলে যাই নি। আমরা যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক। নিজেদের জন্য কথা বলার অধিকার আমাদের আছে।’

আরেক বিক্ষোভকারী বলেন, ‘অভিবাসীরাই যুক্তরাষ্ট্র তৈরি করেছে। তারা কৃষিকাজ করে, আবর্জনা পরিষ্কার করে, বাথরুম পরিষ্কার করে, তারা অফিসে বসে না, সবকিছুর পেছনে তারাই।’

ট্রাম্পের অভিবাসননীতির বিরুদ্ধে বিক্ষোভ হয়েছে ফ্লোরিডায়ও। মায়ামিতে বিক্ষোভ করেছে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত ভেনেজুয়েলান-আমেরিকানরা। তারা বলছেন, 'টেম্পোরারি প্রোটেকশন স্ট্যাটাস' দিলেও প্রায় সাড়ে ৩ লাখ ভেনেজুয়েলার নাগরিক এপ্রিলের মধ্যে কাজ করার অনুমোদন হারিয়ে ফেলবে।

এদিকে, প্রথম দফায় যুক্তরাষ্ট্রের কুখ্যাত কারাগার গুয়ানতানামো বে'তে অভিবাসীদের নিয়ে গেছে মার্কিন সামরিক বিমান। যুক্তরাষ্ট্রের পরিকল্পনা, কিউবার গুয়ানতানামো বে'তে অস্থায়ী নিবাস তৈরি করে আশ্রয় দেয়া হবে হাজারো অভিবাসীকে। ১০ জন অভিবাসীকে এখন পর্যন্ত পাঠানো হয়েছে গুয়ানতানামোতে। মেক্সিকো আগে থেকেই সতর্ক করেছে, দেশের কোনো নাগরিককে সেই কারাগারে পাঠাতে পারবে না যুক্তরাষ্ট্র।

যুক্তরাষ্ট্রের গণ অভিবাসন প্রত্যাবাসনে ক্ষোভে ফেটে পড়েছে ভেনেজুয়েলা, নিকারাগুয়া আর কিউবা। যুক্তরাষ্ট্র সরকারের প্ররোচনায় প্রভাবিত না হয়ে শান্ত থেকে দাবি আদায়ের পরামর্শ দেশগুলোর রাষ্ট্র প্রধানের।

এতকিছুর মধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রের ইমিগ্রেশন এন্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট প্রস্তুতি নিচ্ছে ভার্জিনিয়াতে অবৈধ অভিবাসীদের উচ্ছেদ অভিযান চালানোর। ডোনাল্ড ট্রাম্প হোয়াইট হাউজের দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত দৈনিক ৯শ' থেকে ১২শ' অভিবাসীকে আটক করছে আইস।

এএম