ক্যালিফোর্নিয়ার ওশান বিচ থেকে স্যাক্রামেন্টোর ব্যক্তিগত সুইমিং পুল গতকাল (বৃহস্পতিবার, ৫ ডিসেম্বর) সাত মাত্রার ভূমিকম্পের প্রভাবে এভাবেই কেঁপে ওঠে অঙ্গরাজ্যটি।
প্রাণ বাঁচাতে খোলা মাঠে আশ্রয় নিতে বাধ্য হন হাজার হাজার মানুষ। রাস্তায় গাড়ি ফেলে নিরাপদ স্থানে ছুটতে শুরু করেন চালকরা। ক্যালিফোর্নিয়ার পাশাপাশি অরেগনে জারি করা হয় সুনামি সতর্কতা। পরে তা তুলে নেয়া হলেও গভীর আতঙ্কে পড়েন অঙ্গরাজ্য দুটির অন্তত ৪৭ লাখ বাসিন্দা।
মার্কিন আবহাওয়া দপ্তরের তথ্য বলছে, সাত মাত্রার এই ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল ক্যালিফোর্নিয়া উপকূলের উত্তরে ফার্নেন্দেল শহরের ৩৯ কিলোমিটার পশ্চিমে। উৎপত্তিস্থল থেকে ১০ কিলোমিটার এলাকা পর্যন্ত ভূমিকম্পের তীব্রতা সবচেয়ে বেশি অনুভূত হয়েছে।
আর ফার্নেন্দেল শহরের ৬৩ কিলোমিটার এলাকা পর্যন্ত ভূকম্পন অনুভূত হয়। স্থানীয় সময় সকাল পৌনে এগারোটার দিকে ভূমিকম্প আঘাত হানলে ঠিক এর ৯০ মিনিট পর ক্যালিফোর্নিয়া ও অরেগনের ৮০০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে সুনামি সতর্কতা জারি করা হয়, যদিও পরে তা বাতিলও করা হয়েছে।
সুনামির আশঙ্কা না থাকলেও আশ্বস্ত হতে পারছেন না আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা। বলছেন, ভূমিকম্পের প্রভাবে সাগরের পানি ফুলে ওঠার পাশাপাশি, বাড়তে পারে জোয়ারের তীব্রতা। উপকূলে আছড়ে পড়তে পারে মারাত্মক ঢেউ। ক্যালিফোর্নিয়ার উত্তরে উপকূলীয় শহরগুলো ঘনবসতিপূর্ণ হওয়ায় ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে।
একজন আবহাওয়া বিশেষজ্ঞ বলেন, ‘যেহেতু ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চলগুলোতে সুনামি সতর্কতা তুলে নেয়া হয়েছে, আপনারা আপাতত কিছুটা নিশ্চিন্ত থাকতে পারেন। কিন্তু নৌভ্রমণ, সাঁতার কাটা কিংবা সার্ফিংয়ের জন্য এটা উপযুক্ত সময় নয়। কারণ যে কোনো সময় বড় ঢেউ উপকূলে আছড়ে পড়তে পারে।’
এরই মধ্যে ক্ষয়ক্ষতি পুষিয়ে নিতে জরুরি সেবাদানকারী সংস্থার সাথে কাজ শুরু করছে ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ফার্নেন্দেলের বাসিন্দারা।
স্যান দিয়াগোর একটি সীমান্ত পরিদর্শন শেষে ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়ানোর আশ্বাস দিয়েছেন ক্যালফোর্নিয়ার গভর্নর গ্যাভিন নিউসম। সুনামি সতর্কতা থেকে দুর্গতদের পুনর্বাসনে এরই মধ্যে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর গ্যাভিন নিউসম বলেন, ‘আমরা ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে উদ্বিগ্ন। বিশেষ করে অঙ্গরাজ্যটির উত্তরাঞ্চলীয় কয়েকটি কাউন্টিতে ভূমিকম্পের বিরূপ প্রভাব পড়েছে। সুনামি সতর্কতা তুলে নিলেও, জরুরি অবস্থা জারি করেছি। এতে করে আমরা প্রয়োজনীয় সরঞ্জামের পাশাপাশি ন্যাশনাল গার্ড সদস্যদের সহায়তাও পেতে যাচ্ছি।’
ভূমিকম্পের প্রভাবে স্যান ফ্রান্সিকো ও এর আশেপাশের উপকূলীয় এলাকার পাশাপাশি হামবোল্ট কাউন্টিতে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন কয়েক হাজার বাসিন্দা। পাওয়ার আউটেজ ডট ইউএসের তথ্য বলছে, এরই মধ্যে হামবোল্টের ১৯ হাজার গ্রাহকের বাড়িতে বিদ্যুৎ সরবরাহ সচল করা হয়েছে।