সময় স্বল্পতা, স্বীকৃতির অভাব এমনকি ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদ নিয়ে স্মৃতি কাতরতা, এই সবকিছুই দায়ী ট্রাম্পের হোয়াইট হাউজে প্রত্যাবর্তন আর কামালা হ্যারিসের ভরাডুবির পেছনে। ডোনাল্ড ট্রাম্পের তুলনায় প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসেবে মার্কিনিদের কাছে বেশ অপরিচিত ছিলেন কামালা। জনপ্রিয়তা হারানো বাইডেন প্রশাসনের কাছ থেকে সরে আলাদা কোন অবস্থান তৈরিও করতে পারেননি কামালা। এসব কারণেই নির্বাচনে ডেমোক্রেট প্রার্থীর এতো ভরাডুবি হয়েছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
রাজনীতি বিশ্লেষক আন্দ্রা গিলিস্পি বলেন, ‘অনেক কঠিন সময় পার করেছেন হ্যারিস নির্বাচন পর্যন্ত আসতে। ডোনাল্ড ট্রাম্পের তুলনায় তার বিষয়ে মার্কিনিরা রীতিমতো অজ্ঞ। কোভিডের আগে দেশের অর্থনীতি কেমন ছিল, সেটা নিয়েও মার্কিনিদের স্মৃতি স্পষ্ট। তাই তারা এটাই ভেবেছেন ট্রাম্পই তাদের দেশের অর্থনীতিকে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে নেবে।’
এবারের নির্বাচনে অন্য যেকোন সময়ের তুলনায় ভোটাররা প্রাধান্য দিয়েছেন অর্থনীতির কর্মপরিকল্পনা নিয়ে। মার্কিনিদের মধ্যে করোনা পূর্ববর্তী অর্থনীতি নিয়ে বেশ স্বস্তি কাজ করছিলো। যা ট্রাম্প প্রশাসনেই পেয়েছেন তারা। অন্যদিকে, সাধারণ মানুষের কামালা সম্পর্কে ধারণা ছিল খুবই কম। মার্কিনিরা জানতোই না, কামালা কীভাবে দেশ পরিচালনা করবে। বাইডেনের সময় দেশের অর্থনীতির অবস্থা খুব স্বস্তিদায়ক না থাকায় তাদের মধ্যে এই ধারণা থিতু হয়ে গিয়েছিলো, ট্রাম্প ক্ষমতায় আসলেই স্বস্তি ফিরবে দেশের অর্থনীতিতে।
আন্দ্রা গিলিস্পি আরো বলেন, ‘যারা ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট, তারা বলছেন, ট্রাম্প বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর ভোট বেশি পেয়েছেন। শ্বেতাঙ্গরা কামালাকে ভোট দেননি। বর্ণবাদ কিছুটা হলেও কাজ করেছে। অনেক মার্কিনিই এখন ভাবছেন তারা যুক্তরাষ্ট্রে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছেন, বিশেষ করে যারা সংখ্যালঘু। তবে শুধু সংখ্যালঘু নয়, ট্রাম্পের বিজয় প্রভাব ফেলতে পারে শ্বেতাঙ্গদের ওপরও। ট্রাম্প কি করেন, সেটাই দেখার অপেক্ষা তাদের।’
ডোনাল্ড ট্রাম্প এই মেয়াদে এশিয়ান আমেরিকান আর হিস্পানিকদের সমর্থন বেশি পেয়েছেন। ভোটারদের মনস্তত্ত্ব ছিল, বাইডেনের তুলনায় তারা ট্রাম্পের আমলেই ভালো ছিলেন। যে কারণে কামালাকে কোনভাবেই প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত করতে পারেননি তারা। এরমধ্যে মধ্যপ্রাচ্য নিয়ে স্পষ্ট কোন বার্তা না থাকায় মুসলিম ভোটারদের ভোট হারিয়েছেন তিনি। সব মিলিয়ে ভোটারদের মধ্যে কোন আস্থা তৈরি করতে না পারায় নির্বাচনে ভরাডুবি হয়েছে কামালা হ্যারিসের।