রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘আমরা কোনো সহিংসতা চাই না- এটা আমার সমর্থকদের নতুন করে বলতে হবে না। অবশ্যই নির্বাচনে কোনো সহিংসতা হবে না। আমার সমর্থকরা কেউই সহিংস নন। আমি কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা দেখতে চাই না।’
নতুন প্রেসিডেন্ট হাল ধরবে দেশের অর্থনীতির, প্রতিষ্ঠা করবে গণতন্ত্র, নিশ্চিত করবে জাতীয় নিরাপত্তা, সমাধান হবে দেশের অভিবাসন সংকট। এত প্রত্যাশার বিশাল ঝুলি নিয়ে নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোট দিচ্ছেন মার্কিন নাগরিকরা।
দীর্ঘ প্রতীক্ষার পালা শেষে মঙ্গলবার স্থানীয় সময় সকাল ৬ টা থেকে যুক্তরাষ্ট্রের ৫০ টি অঙ্গরাজ্য আর ডিস্ট্রিক্ট অব কলোম্বিয়ায় পর্যায়ক্রমে শুরু হয় ভোটগ্রহণ।
টাইমজোনের কারণে সর্বপ্রথম ভারমন্টে শুরু হয় ভোট। পর্যায়ক্রমে ভোটগ্রহণ শুরু হয় নিউইয়র্ক, জর্জিয়া, পেনসিলভানিয়া, ওহাইয়ো, মিশিগান, নর্থ ক্যারোলাইনা, ওয়েস্ট ভার্জিনিয়াসহ সব অঙ্গরাজ্যে। সবশেষ অঙ্গরাজ্য হিসেবে হাওয়াইতে পোলিং স্টেশন উন্মুক্ত করা হবে স্থানীয় সময় বেলা ১২ টায়।
ওহাইয়োতে ভোট দিয়েছেন রিপাবলিকান ভাইস প্রেসিডেন্ট প্রার্থী জেডি ভ্যান্স। ভোট দিয়ে তিনি বলেন, ট্রাম্পকে ভোট দিলে যুক্তরাষ্ট্রকে সমৃদ্ধির চূড়ায় নিয়ে যাবেন তিনি।
এদিকে, ভোট দিতে এসে ভোটারদের মধ্যে দেখা যায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া। সুইং স্টেট মিশিগানে কৃষ্ণাঙ্গ ভোটাররা বলছেন, কামালা আসলে ইতিহাস সৃষ্টি হবে, ডোনাল্ড ট্রাম্প আসলে বাড়বে জাতিগত বিভাজন। আরেক সুইং স্টেট নর্থ ক্যারোলাইনার ভোটাররা বলছেন, সীমান্ত সংকট সমাধানে ট্রাম্পকে প্রয়োজন।
অন্যদিকে আরেক ব্যাটল গ্রাউন্ড অঙ্গরাজ্য পেনসিলভেনিয়ার ভোটাররা বলছেন, দেশের অভিবাসন সংকট সমাধান করে দেশের অর্থনীতিকে শক্তিশালী অবস্থানে নিতে ট্রাম্পের প্রয়োজন। অনেকে বলছেন, দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় কামালাকে প্রয়োজন।
এবারের নির্বাচনে নিরাপত্তা ঝুঁকি বিবেচনায় সারা দেশেই নেয়া হয়েছে জরুরি নিরাপত্তা ব্যবস্থা। ন্যাশনাল গার্ড সক্রিয় করে রাখা হয়েছে ১৯ টি অঙ্গরাজ্যে। ভোট শুরুর পরই দেশটির শেয়ারবাজারে চাঙাভাব দেখা যায়।
বুধবার স্থানীয় সময় রাত ১ টায় আলাস্কায় ভোটগ্রহণ শেষ হওয়ার মধ্য দিয়ে ৬০ তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের পর্দা নামবে। এবারের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে মোট ভোটার ২৪ কোটির বেশি। আগাম ভোট দিয়ে নিজের মত প্রকাশ করেছেন প্রায় ৮ কোটি ভোটার।
শুরুতে ডাকযোগে ভোট দেবেন এমন ঘোষণা দিলেও শেষ পর্যন্ত ফ্লোরিডায় সশরীরে উপস্থিত হয়ে ভোট দিয়েছেন রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প।
এবারের নির্বাচনের আগে থেকে ট্রাম্পের প্ররোচনায় রাজনৈতিক সহিংসতা ঘটতে পারে এমন ইঙ্গিত দিচ্ছিলেন ডেমোক্র্যাটরা।
এবার তার জবাব দিয়েছেন সাবেক এই প্রেসিডেন্ট। ভোট দেয়ার পর সাংবাদিকদের ট্রাম্প বলেন, তার সমর্থকরা কখনও সহিংসতার আশ্রয় নেবে না।
এছাড়া, নির্বাচনের স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন করলে ট্রাম্প বলেন, এখনও পর্যন্ত তার কাছে যা খবর এসেছে তাতে নির্বাচন সুষ্ঠুভাবেই অনুষ্ঠিত হচ্ছে বলে মনে করেন তিনি।
নির্বাচনে জিততে একজন প্রার্থীর প্রয়োজন ২৭০ টি ইলেকটোরাল ভোট। অন্যান্য অঙ্গরাজ্যে ভোট নিয়ে নিশ্চিত থাকলেও ব্যাটলগ্রাউন্ড অঙ্গরাজ্যগুলোতে কে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবে, তার ওপর নির্ভর করছে কে বসছেন হোয়াইট হাউজের মসনদে।