জো বাইডেনের প্রার্থিতা প্রত্যাহারের পর একের পর এক চমক দেখাচ্ছেন সম্ভাব্য ডেমোক্র্যাট প্রার্থী ও ভাইস প্রেসিডেন্ট কামালা হ্যারিস। কামালাকে 'ট্রাম্প-স্লেয়ার' বলেও আখ্যা দিচ্ছে মার্কিন গণমাধ্যমগুলো। যার অর্থ একমাত্র কামালা হ্যারিসের কাছেই ধরাশায়ী হতে পারেন সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। শুধু তাই নয়, শীর্ষ ডেমোক্র্যাট নেতাদের পর অর্থদাতাদের কাছ থেকে আদায় করছেন বিপুল সমর্থন।
শুক্রবার (২ আগস্ট) কামালার প্রচারদলের পক্ষ থেকে জানানো হয়, গেল জুলাই মাসে ভাইস প্রেসিডেন্টের নির্বাচনী তহবিলে জমা পড়েছে ৩১ কোটি মার্কিন ডলার। আর সেখানে ট্রাম্পের সংগ্রহ ১৪ কোটি মার্কিন ডলারেরও কম। অর্থাৎ শুধু জুলাই মাসের হিসেবে কামালার সংগ্রহ ট্রাম্পের চেয়ে দ্বিগুণেরও বেশি।
রয়টার্সের প্রতিবেদন বলছে, আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বাইডেন-কামালার প্রচারদল সম্মিলিতভাবে প্রায় ১০০ কোটি মার্কিন ডলারের তহবিল সংগ্রহ করেছেন যা নজিরবিহীন। এর আগে, এত কম সময়ে কোনো প্রার্থী এমন বিপুল তহবিল সংগ্রহ করতে সক্ষম হয়নি বলে দাবি ডেমোক্র্যাটদের।
তহবিল সংগ্রহের এই দৌড়ে ডেমোক্র্যাটদের তুলনায় সুবিধা করতে পারেনি রিপাবলিকানরা। জুনে ট্রাম্পের নির্বাচনী তহবিলে জমা পড়ে প্রায় ১১ কোটি মার্কিন ডলার। আর জুলাই পর্যন্ত তাদের মোট সংগ্রহ ৩২ কোটি মার্কিন ডলার। এ হিসেবে একমাসে সংগ্রহের পরিমাণ বেড়েছে ২৪ শতাংশ।
ট্রাম্পের প্রচারদল বলছে, পেনসিলভেনিয়ার নির্বাচনী সভায় হামলার কারণে নিজ দলের অর্থদাতাদের কাছ থেকেই কম সংগ্রহ হয়েছে। এছাড়া, পর্ণ তারকাকে অর্থ দেয়ার মামলায় ট্রাম্পের ব্যস্ততার কারণে গেল মে মাসেও তহবিল সংগ্রহ অভিযান বাধাগ্রস্ত হয়েছে।
এদিকে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীকে ব্যক্তিগত আক্রমণের পুরনো কৌশল নিয়ে আবারও ফিরেছেন ট্রাম্প। কামালা হ্যারিসের জাতিগত পরিচয় নিয়ে ঠাট্টা করছেন হরহামেশাই। বলছেন, নিজেকে কৃষ্ণাঙ্গ দাবি করে জনগণকে বিভ্রান্ত করছেন কামালা। তবে কামালার হুঁশিয়ারি, অপবাদ কিংবা অপপ্রচার- যাই চলুক না কেন প্রতিপক্ষকে এক ইঞ্চি জায়গা ছেড়ে দেয়া হবে না।
ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, 'সে সবসময় ভারতীয় ঐতিহ্য নিয়ে গর্ব করতো। ভারতের সংস্কৃতি নিয়ে প্রশংসা করতো। আমি জানতামই না সে কৃষ্ণাঙ্গ। এখন সে নিজেকে কৃষ্ণাঙ্গ হিসেবে পরিচয় দিতে চায়। কাজেই আমি সঠিকভাবে জানি না, সে কৃষ্ণাঙ্গ নাকি ভারতীয়। আমি কৃষ্ণাঙ্গ বা ভারতীয়দের সম্মান করি। কিন্তু কামালা এখন দাবি করছে সে কৃষ্ণাঙ্গ। সবারই এই বিষয়টি খতিয়ে দেয়া উচিত।'
কামালা হ্যারিস বলেন, 'ট্রাম্প যা বলেছেন সেটি অসম্মানজনক এবং তা বিভাজনের রাজনীতিকে উসকে দেয়। আমেরিকার মানুষ এর চেয়ে অনেক ভালো কিছু প্রত্যাশা করে। আমেরিকার মানুষ প্রত্যাশা করে তাদের নেতা সবসময় সত্য বলবেন। সত্য স্বীকার করতে যার মধ্যে কোনো প্রতিহিংসা ও ক্ষোভ থাকবে না। আমরা এমন একজন নেতা চাই, যিনি বুঝবেন জাতিগত পরিচয় দিয়ে দেশকে ভাগ করা যায় না। এই বৈচিত্রই আমাদের শক্তি।'
কাদা ছোড়াছুড়ি রাজনীতি মার্কিন মুলুকে নতুন কিছু নয়। কামালা হ্যারিসের আগে প্রেসিডেন্ট বাইডেনের শারীরিক সক্ষমতা নিয়ে কৌতুক করতে দেখা গেছে ট্রাম্পকে। তবে আগামী ১০ সেপ্টেম্বর নির্বাচনী বিতর্কে ট্রাম্পের শব্দবানের সামনে কতখানি প্রতিরোধ গড়তে পারবেন কামালা হ্যারিস এখন সেদিকেই বিশ্বের নজর।