মধ্যপ্রাচ্য
বিদেশে এখন
0

'নেতানিয়াহু প্রশাসন কেবল একটি পাল্টা হামলা চালিয়ে ক্ষান্ত হবে না'

ইসরাইলি ভূখণ্ডে ইরানের হামলার জবাবে নেতানিয়াহু প্রশাসন কেবল একটি পাল্টা হামলা চালিয়ে ক্ষান্ত হবে না, বরং এটি বড় কোনো সংঘাতের সূত্রপাত বলে মনে করছেন আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা। তারা বলছেন, তেহরানের বিরুদ্ধে তেল আবিব যে কোনো সময় প্রতিশোধ নেবে, এমনটি অনুমেয় হলেও, ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী হামলার বিপরীতে হামলার নীতিতে বিশ্বাস করেন না। নির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুতে হামলা করার সক্ষমতা থাকার পরেও ইসরাইলের এই হামলা- ভিন্ন কিছুর ইঙ্গিত দেয় বলেও দাবি মধ্যপ্রাচ্য বিশ্লেষকদের।

লেবাননে সিরিজ পেজার ও ওয়াকিটকি হামলা, হিজবুল্লাহ নেতা হাসান নাসরাল্লাহ ও হামাস নেতা ইয়াহিয়া সিনওয়ারকে হত্যার বিপরীতে তেল আবিবে দু'টি আলাদা হামলা করে ইরান ও লেবানন। তিন সপ্তাহ আগে প্রথমবার ইসরাইলি ভূখণ্ডে ২শ'র বেশি ব্যালিস্টিক মিসাইল হামলা চালায় তেহেরান আর সবশেষ সিজারিয়ায় নেতানিয়াহুর বাসভবন লক্ষ্য করে ড্রোন হামলা চালায় বৈরুত। ফলে, ইরান ও ইরান সমর্থিত গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে যে কোনো সময় আবারও নড়েচড়ে বসবে তেল আবিব তার ইঙ্গিত দিচ্ছিলেন মধ্যপ্রাচ্য বিশেষজ্ঞরা।

শনিবার (২৬ অক্টোবর) ভোরে ইরানের রাজধানী তেহরান, কারাজ ও সিরাজসহ বেশ কিছু সামরিক ঘাঁটি ও মিসাইল ফ্যাসিলিটি লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালায় ইসরাইল। হামলায় তেমন কোনো ক্ষয়ক্ষতি বা হতাহতের ঘটনা না ঘটলেও পাল্টা হামলার জন্য ইরান প্রস্তুত বলে মনে করছেন আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা। তবে এমনটা হলে মধ্যপ্রাচ্য সংঘাত চূড়ান্ত পরিণতির দিকে এগিয়ে যাবে এই আশঙ্কাও করছেন তারা।

তবে শনিবার ভোরে ইরানের ভূখণ্ডে ইসরাইলের হামলার উদ্দেশ্য নিয়ে ভিন্নমত আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকদের। তারা বলছেন, নেতানিয়াহু শুধু অস্তিত্বের জানান দেয়ার নীতিতে বিশ্বাস করেন না। হামলার উদ্দেশ্য সম্পর্কে এত আগেভাগে কোনো সিদ্ধান্ত নেয়াটা উচিৎ হবে না বলেও মন্তব্য করেছেন তারা। বিশেষ করে ইসরাইলের যুদ্ধকালীন মন্ত্রীসভার কয়েক সপ্তাহের পরিকল্পনা ও যুক্তরাষ্ট্রকে হামলার বিষয়ে আগেভাগে জানানো অন্য কোনো ইঙ্গিত দেয়।

আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক জেরেমি ডায়মন্ড বলেন, 'গেল কয়েক সপ্তাহ ধরে ইরানের সেনা ঘাঁটিতে হামলার পরিকল্পনা করছিল ইসরাইলের যুদ্ধকালীন মন্ত্রীসভা। যুক্তরাষ্ট্রের সাথেও এ নিয়ে আলোচনা করেছে তেল আবিব। ইসরাইলি মন্ত্রীসভার একজন সদস্যের সাথে কথা বলে নিশ্চিত হয়েছি, দীর্ঘসময়ের পরিকল্পনার পর এই পাল্টা হামলার চালানো হয়েছে। বিশেষ করে ইসরাইলের জন্য হুমকি হতে পারে এমন সেনা ঘাঁটি বা স্থাপনা লক্ষ্য করে হামলার প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।'

প্রতিপক্ষের দুর্বলতার সুযোগ নিতে ভালোবাসে না বিশ্বে এমন কোনো পরাশক্তি নেই। গেল এপ্রিলে সিরিয়ায় ইরানের কনস্যুলেটে হামলা থেকে শুরু করে গেল ৫ মাসে হামাস-হিজবুল্লাহর বড় বড় নেতাকে সরিয়ে দেয়ার পরেও ইরান বড় ধরণের কোনো পাল্টা হামলা করতে পারেনি ইসরাইলে। ফলে, ইসরাইল তার প্রতিপক্ষের এই নীরবতাকে কাজে লাগাবে এটা খুবই স্বাভাবিক বলে মন্তব্য বিশেষজ্ঞদের।

এসএস

এই সম্পর্কিত অন্যান্য খবর