রাশিয়ার পূর্ব প্রান্তে সাইবেরিয়া এলাকার ছোট্ট শহর ইয়াকুতস্ক। রাজধানী মস্কো থেকে এর দূরত্ব প্রায় পাঁচ হাজার কিলোমিটার। বিশ্বের সবচেয়ে শীতলতম শহর ইয়াকুতস্ক। ভরা গ্রীষ্মে এ শহরের তাপমাত্রা থাকে মাইনাস ৪০ ডিগ্রি। শীতকালে পারদ নামে হিমাঙ্কের আরও ১০ ডিগ্রি নীচে।
হাঁড় কাঁপানো ঠান্ডার জন্য ইয়াকুতস্কের বাসিন্দাদেরও কষ্টের শেষ নেই। টুপি, গ্লাভস, প্রাণীর পশমের সমন্বয়ে কয়েক স্তরের পোশাক পরেন তারা। ঠান্ডা আবহাওয়া ও শুষ্ক হওয়ায় উন্মুক্ত অবস্থায় কোনো কিছু রাখলেই স্বল্প সময়ের মধ্যেই তা জমে যায়। আবার ১০০° সেলসিয়াসের ফুটন্ত গরম পানি বাইরে ছুড়ে মারলে মুহূর্তেই ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বরফ কণাতে পরিণত হয় পানি।
এবার এ ইয়াকুতস্ক শহরে বরফের মধ্যে সুইমিংপুল বানিয়ে আয়োজন করা হয়েছে সাঁতার প্রতিযোগিতা। প্রতিকূল পরিবেশে সাঁতার কেটে উচ্ছ্বসিত সাঁতারুরা। তাদের দাবি, ঠান্ডা পানিতে গোসল করলেই শরীরে হয় উষ্ণ অনুভূতি। শরীর শক্তিশালী হওয়ার পাশাপাশি শরীরে বাড়ে রোগ প্রতিরোধ সক্ষমতা।
আরও পড়ুন:
সাঁতারুদের মধ্যে একজন বলেন, ‘আমরা আমাদের মাতৃভূমির শীতলতম অঞ্চল থেকে সবাইকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। শীত শুরু হচ্ছে শহরে, আমাদের এতেই আনন্দ। উৎসবে সকলকে আমরা আমন্ত্রণ জানাচ্ছি। চলো সবাই সাঁতার কাটতে যাই।’
অন্য একজন বলেন, ‘পানিতে ভালো লেগেছে, কিন্তু যখন তুমি সাঁতার শেষে উপরে উঠবে, তখন তুমি খুব গরম অনুভব করবে। তবে খুব দ্রুত পোশাক পরে নিতে হবে।’
দক্ষিণ কোরিয়া থেকে আসা একজন সাঁতারু বলেন, ‘আমি দক্ষিণ কোরিয়া থেকে এসেছি। এই প্রথম অলৌকিক ঘটনা দেখলাম, শীতকালীন সাঁতার। আমি এটি ছবিতে দেখেছি, কিন্তু আজ প্রথমবারের মতো নিজের চোখে দেখছি। আসলেই মানুষের কাছে কিছুই অসম্ভব নয়।’
‘বরফের নরক’ হিসেবে খ্যাত রাশিয়ার এ শহরটিতে জনসংখ্যা প্রায় সাড়ে তিন লাখ। রাশিয়ার দ্রুত উন্নয়নশীল আঞ্চলিক শহরগুলির মধ্যে অন্যতম ইয়াকুতস্ক। শহরটিতে এখন পর্যন্ত সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় -৬৪.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।





