ট্রাম্প-পুতিন বৈঠক ঘিরে মিশ্র প্রতিক্রিয়া, রুশ আক্রমণ বন্ধে গেম চেঞ্জার টমাহক!

টমাহক মিসাইল, ডোনাল্ড ট্রাম্প, ভ্লাদিমির পুতিন
টমাহক মিসাইল, ডোনাল্ড ট্রাম্প, ভ্লাদিমির পুতিন | ছবি: সংগৃহীত
1

ইউক্রেনীয় যোদ্ধারা মনে করছেন, রুশ আক্রমণ বন্ধে গেম চেঞ্জার হতে পারে মার্কিন ক্ষেপণাস্ত্র টমাহক। যুদ্ধবন্ধ ইস্যুতে ফের হতে যাওয়া ট্রাম্প-পুতিনের বৈঠকের আগে এ মন্তব্য করেছেন তারা। তবে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন বিশ্লেষকরা।

আলাস্কায় পুতিনের সঙ্গে বৈঠক করেও ইউক্রেন যুদ্ধ উত্তেজনার পারদ কমাতে পারেননি ট্রাম্প। বরং আরও বেড়েছে। এমন পরিস্থিতিতে এবার হাঙ্গেরিতে ফের রুশ প্রেসিডেন্টের মুখোমুখি বসতে যাচ্ছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।

যুদ্ধবন্ধ ইস্যুতে দ্বিতীয়বার ট্রাম্প-পুতিন বৈঠক হওয়ার আগে নতুন করে আলোচনায় টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র। রাশিয়াকে থামাতে দূরপাল্লার শক্তিশালী এ মার্কিন অস্ত্র গেম চেঞ্জার হবে বল মনে করছেন ইউক্রেনীয় যোদ্ধারা। এর মাধ্যমে পাল্টা হামলা চালালে রাশিয়াকে ইউক্রেনের ভূমি দখল অভিযান থেকে দূরে সরানো সম্ভব হবে বলে মনে করছেন তারা।

ইউক্রেনের একজন সেনা সদস্য বলেন, ‘আমি মনে করি এ মুহূর্তে আমাদের জন্য টমাহক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। এমনকি বিশ্বাস করি শক্তিশালী এ অস্ত্র আমাদের হাতে এলে যুদ্ধের মোড় ঘুরে যাবে। আমাদের জন্য ভালো কিছু হবে। কারণ এটি দূরের লক্ষ্যবস্তুতে নির্ভুলভাবে আঘাত হানতে সক্ষম।’

এ অবস্থায় টমাহকের কথা শুনেই মস্কো দ্রুত সংলাপে ফিরতে চাইছে বলে মনে করছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি। এখন বড় প্রশ্ন হলো- ইউক্রেন থেকে রুশ ভূখণ্ডে নির্ভুলভাবে আঘাত হানতে সক্ষম এ অস্ত্র কী আসলেই কিয়েভের জন্য গেম চেঞ্জার হবে? উত্তরে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণও।

আরও পড়ুন:

অস্ত্র বিশেষজ্ঞ ম্যাথিউ স্যাভিল বলেন, ‘রাশিয়ানরা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার সঙ্গে নিজেদের খাপ খাইয়ে নিয়েছে। আরও বিস্তৃত প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাও তৈরি করছে। তাই টমাহক কোনো আশ্চর্য অস্ত্র নয়। আর এটি এত পরিমাণে সরবরাহ করাও ওয়াশিংটনের জন্য সম্ভব হবে না, যা যুদ্ধক্ষেত্রকে আমূল পরিবর্তন করবে। তবে হ্যাঁ, এটি রাশিয়ার জন্য এমন এক চ্যালেঞ্জ, যা তাদের বিমান প্রতিরক্ষাকে গুরুত্বের সাথে বিবেচনায় নিতে হবে।’

চ্যাথাম হাউসের গবেষক কেয়ার গিলস বলেন, ‘ইউক্রেনের নিজস্ব দেশিয় প্রতিরক্ষা ক্ষমতার উন্নয়নে পশ্চিমা কোনো সহায়তাই বিকল্প হতে পারে না। যাতে রাশিয়াকে প্রতিরোধ করার মতো কিয়েভের কাছে দীর্ঘমেয়াদী এবং টেকসই উপায় থাকবে।’

পুতিনের সঙ্গে ফের বৈঠকে বসার ঘোষণা দেয়ার আগে সম্প্রতি ট্রাম্প জানান, ইউক্রেনকে টমাহক দেয়ার ব্যাপারে মোটামুটি সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছেন তিনি। এরপর রুশ প্রেসিডেন্ট সতর্ক করেছিলেন যে, কিয়েভে যদি ওয়াশিংটন টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ করে; তাহলে তা হবে বিপজ্জনক পদক্ষেপ। যা নতুন করে যুদ্ধ উত্তেজনাকে বাড়িয়ে তুলবে। এমনকি ট্রাম্পের সঙ্গে থাকা সু-সম্পর্কে ফাঁটল ধরবে বলেও ইঙ্গিত দিয়েছেন পুতিন।

এর মধ্য দিয়ে বোঝাই যায়, কিয়েভে ওয়াশিংটনের টমাহক সরবরাহ ঠেকাতে তৎপর রাশিয়া। মূলত টমাহক নিয়ে মস্কোর ভয়ের কারণ হলো, এটি এমন এক ক্ষেপণাস্ত্র যা ১৬শ' থেকে প্রায় আড়াই হাজার কিলোমিটার দূরের লক্ষ্যবস্তুতে নিখুঁতভাবে আঘাত হানতে পারে। শক্তিশালী এই ক্ষেপণাস্ত্র জাহাজ, সাবমেরিন ও স্থলভাগের লঞ্চার থেকে নিক্ষেপ করা যায়। যা মোকাবিলার সক্ষমতা নেই রাশিয়ার।

এসএস