যুক্তরাষ্ট্রের কাছে টমাহক চেয়েছে ইউক্রেন, রাশিয়া বলছে রেডলাইন অতিক্রম

টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র
টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র | ছবি: সংগৃহীত
1

যুক্তরাষ্ট্রের কাছে ইউক্রেনের চাওয়া দূরপাল্লার টমাহক ক্ষেপণাস্ত্রকে রেডলাইন অতিক্রম হিসেবে দেখছে রাশিয়া। মস্কোর দাবি, যুক্তরাষ্ট্রের কার্যকলাপে রাশিয়ার বেধে দেয়া সীমা অতিক্রম করার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে রাশিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী দিমিত্রি মেদভেদেভও এ যুদ্ধে বিধ্বংসী অস্ত্র ব্যবহারের শঙ্কা তৈরি হতে পারে বলে সতর্ক করেছেন। আর বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ ক্ষেপণাস্ত্র পেলে রাশিয়ায় ইউক্রেনের হামলার ক্ষমতা কয়েকগুণ বেড়ে যাবে।

যুক্তরাষ্ট্রের কাছে ইউক্রেনের দূরপাল্লার টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র চাওয়ার বিষয়টি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে রাশিয়া। রুশ সরকারের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের এ ক্ষেপণাস্ত্র ইউক্রেনের জন্য গেম চেঞ্জার হবে না। বরং প্রশ্ন থেকে যাবে এর ব্যবহার কীভাবে হবে? এটি কারা পরিচালনা করবে? ইউক্রেনীয়রা নাকি মার্কিনীরা!

তবে যুক্তরাষ্ট্র মস্কোর নির্ধারিত রেডলাইন অতিক্রম করতে পারে বলেও ইঙ্গিত দিয়েছেন পেসকভ। এর আগে মস্কো জানিয়েছিলো, ইউক্রেনকে লক্ষ্যবস্তু নির্ধারণে বা হামলা চালানোর জন্য যুক্তরাষ্ট্র গোয়েন্দা তথ্য দিয়ে সাহায্য করলে-তা সীমা লঙ্ঘন হিসেবে বিবেচিত হবে।

সামাজিক মাধ্যম টেলিগ্রামের এক পোস্টে রাশিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী দিমিত্রি মেদভেদেভও সতর্ক করেছেন, যুক্তরাষ্ট্র এ সিদ্ধান্ত নিলে ইউক্রেনকে গণবিধ্বংসী অস্ত্রের সাথে মোকাবিলা করতে হতে পারে।

রাশিয়ার গভীরে হামলা চালাতে গেল সপ্তাহেই যুক্তরাষ্ট্রের কাছে দীর্ঘপাল্লার টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র সহায়তা চাওয়ার পর এমন প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন রুশ নেতারা। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ফাঁকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকে টমাহক অস্ত্র সহায়তার অনুরোধ জানান ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি।

ইউক্রেনকে টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র দেয়ার বিষয়টি গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করছে বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স বলেন, ‘টমাহকের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। যুক্তরাষ্ট্রের সর্বোত্তম স্বার্থে যা করনীয় তিনি তাই করবেন। এটাই তার পররাষ্ট্রনীতি ও প্রতিরক্ষা নীতির মূল দিকনির্দেশনা। টমাহক নিয়ে সিদ্ধান্তও সেই একই নীতিতে হবে। তবে আমরা এ মুহূর্তেই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করছি।’

আরও পড়ুন:

দীর্ঘপাল্লার ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র টমাহক- জাহাজ, সাবমেরিন বা স্থলভিত্তিক লঞ্চার থেকে ছোড়া যায়। সাড়ে ১২ শ’ থেকে আড়াই হাজার কিলোমিটার দূর থেকে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করতে সক্ষম। এটি মিলিটারি বাঙ্কারের মতো শক্তিশালী লক্ষ্যবস্তুকে ভেদ করার জন্য উচ্চমাত্রার বিস্ফোরক বহন করে। এমনকি আঘাত হানার সময় কম উচ্চতার মধ্যেও রাডারকে ফাঁকি দিতে সক্ষম উচ্চগতিসম্পন্ন এ ক্ষেপণাস্ত্র।

বিশ্লেষকরা বলছেন, যদি ইউক্রেন টমাহক পায়, তবে তাদের সক্ষমতা বহুগুণ বাড়ে যাবে। এতে রাশিয়ার ভেতরের সামরিক ঘাঁটি, লজিস্টিক হাব, এয়ারফিল্ড এবং কমান্ড সেন্টারও টার্গেটে পরিণত হবে। তবে এর ফলে রাশিয়া ইউক্রেনে হামলা চালানো বন্ধ করবে এমন সম্ভাবনা খুবই কম।

এদিকে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি বলেছেন, রাশিয়ায় হামলা চালাতে ব্যবহার না করলেও, এসব ক্ষেপণাস্ত্রের উপস্থিতি আলোচনায় বসতে মস্কোর ওপর চাপ তৈরি করবে।

অন্যদিকে রাশিয়ার হুমকিতে উদ্বিগ্ন ইউরোপ। সম্প্রতি পোল্যান্ড, এস্তোনিয়া, ডেনমার্কসহ বিভিন্ন ন্যাটো সদস্য দেশের আকাশসীমায় রুশ ড্রোনের অনুপ্রবেশের ঘটনা ঘটেছে। জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রেডরিখ মার্জ বলেছেন, ইউরোপ যুদ্ধাবস্থায় নেই, তবে শান্তিতেও নেই।

এসএস