পূর্ণাঙ্গ নয়, শুধু ৩০ দিনের জন্য ইউক্রেনে হামলা বন্ধ রাখবেন পুতিন

ইউরোপ
বিদেশে এখন
0

তাৎক্ষণিক কিংবা পূর্ণাঙ্গ অস্ত্রবিরতি নয়, ৩০ দিনের জন্য শুধু ইউক্রেনের জ্বালানি অবকাঠামোতে হামলা বন্ধ রাখবেন পুতিন। ট্রাম্পের সাথে দেড় ঘণ্টার ফোনালাপে স্পষ্ট অস্বীকৃতি জানিয়েছেন মাসব্যাপী যুদ্ধবিরতির চুক্তি সইয়ে। মন্দের ভালো হিসেবে এ পদক্ষেপে সমর্থন দেবেন জানিয়ে ট্রাম্পের সঙ্গে ফোনালাপ চেয়েছেন জেলেনস্কিও।

২০২২ সালে সামরিক অভিযান শুরুর পর থেকে ইউক্রেনের জ্বালানি অবকাঠামো অন্যতম লক্ষ্য ছিল রুশ হামলার। ফলে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে হিমাঙ্কের নিচে তাপমাত্রায় অবর্ণনীয় দুর্ভোগের শিকার হয়েছে কোটি মানুষ।

সংঘাতে ইতি টানতে করণীয় নির্ধারণে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাথে বহুল প্রত্যাশিত ফোনালাপে ইউক্রেনের জ্বালানি অবকাঠামোতে এক মাসের জন্য হামলা স্থগিতে মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) সম্মতি দেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। কিন্তু রাজি হননি তাৎক্ষণিক বা পূর্ণাঙ্গ অস্ত্রবিরতির প্রস্তাবে।

সৌদি আরবে সাম্প্রতিক বৈঠকে ট্রাম্প প্রশাসনের কর্মকর্তারা যে মাসব্যাপী পূর্ণাঙ্গ অস্ত্রবিরতির পরিকল্পনা সাজিয়েছিলেন, তাতে সই করবেন না বলে সাফ জানান পুতিন। বলেন, ইউক্রেনে সামরিক সহায়তা এবং গোয়েন্দা তথ্য আদান-প্রদান বন্ধ করলে তবেই কেবল পূর্ণাঙ্গ অস্ত্রবিরতিতে সম্মতি দেবে রাশিয়া। ইউক্রেনের ইউরোপীয় মিত্ররা আগেই নাকচ করেছে এ প্রস্তাব। আপাতত প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে জ্বালানি অবকাঠামোতে হামলা বন্ধের সিদ্ধান্তকেই স্বাগত জানিয়েছেন পশ্চিমা নেতারা।

জার্মানির চ্যান্সেলর ওলাফ শোলজ বলেন, ‘জ্বালানি অবকাঠামোতে হামলা বন্ধের সিদ্ধান্ত শান্তির পথে প্রথম পদক্ষেপ হতে পারে। সাগরে অস্ত্রবিরতির জন্য আলোচনা শুরু করার সুযোগ এটি। পরবর্তী পদক্ষেপে অবশ্যই দ্রুততম সময়ে পূর্ণাঙ্গ অস্ত্রবিরতি নিশ্চিত করতে হবে।’

ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইম্যানুয়েল ম্যাক্রোঁ বলেন, ‘রুশ আগ্রাসনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধের লড়াইয়ে ইউক্রেনের সেনাবাহিনীকে সহযোগিতা দেয়া অব্যাহত রাখবো আমরা।’

নিজের মালিকানাধীন সামাজিক মাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে পোস্ট করে ট্রাম্প জানান, পুতিনের সাথে তার ফোনালাপ অত্যন্ত ভালো ও গঠনমূলক ছিল। শান্তিচুক্তির বিভিন্ন দিক নিয়ে দুই নেতার আলোচনার কথাও জানান তিনি। পূর্ণাঙ্গ অস্ত্রবিরতির আশা না মিললেও মন্দের ভালো হিসেবে জ্বালানি অবকাঠামোতে হামলা বন্ধের সিদ্ধান্তে সমর্থন দেবেন বলে জানিয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টও। আলোচনার স্বচ্ছতা নিশ্চিতে ট্রাম্পের সঙ্গে ফোনালাপে আগ্রহ জানান তিনি।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেন, ‘যুদ্ধ বন্ধের লক্ষ্যে যেসব পদক্ষেপ নেয়া হবে, সবগুলোই সমর্থন করি আমরা। কিন্তু সমর্থন দিতে হলে তো আগে জানতে হবে যে আসলে কী সমর্থন করছি। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প অত্যন্ত ব্যস্ত মানুষ। কিন্তু যখনই তিনি সময় পান, আমাকে ফোন করতে পারেন। তার কাছে আমার নম্বর আছে। পরবর্তী করণীয় নির্ধারণে কথা বলার জন্য আমরা আনন্দের সাথে প্রস্তুত।’

ট্রাম্পের সাথে কথা শেষে এরই মধ্যে ইউক্রেনের সকল জ্বালানি অবকাঠামোতে হামলা থেকে বিরত থাকতে পুতিন নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানিয়েছে ক্রেমলিন। ট্রাম্প-পুতিন ফোনালাপের পর পূর্ণাঙ্গ ও স্থায়ী শান্তি পরিকল্পনার অংশ হিসেবে তাৎক্ষণিক আলোচনা শুরু করবে বলে জানিয়েছে হোয়াইট হাউজ। মধ্যপ্রাচ্যে অনুষ্ঠেয় সে আলোচনায় অগ্রাধিকার পাবে কৃষ্ণসাগরে অস্ত্রবিরতি কার্যকরের বিষয়টি। তবে সে আলোচনায় ইউক্রেন অংশ নেবে কি না, তা এখনও স্পষ্ট নয়।

এসএস