ট্রাম্পের উদ্যোগে অবশেষে থামছে রাশিয়া-ইউক্রেনের দীর্ঘ ৩ বছরের যুদ্ধ। ৩০ দিনের অস্থায়ী যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবটিকে ইতিবাচক হিসেবে গ্রহণ করেছে ইউক্রেন। এবার রাশিয়া রাজি হলেই যুদ্ধ বন্ধের আলোচনার পথ খুলবে। যুক্তরাষ্ট্র বলছে, যুদ্ধ বন্ধ করে শান্তির পথ বেছে নেয়া এখন নির্ভর করছে মস্কোর ওপর।
যুদ্ধবিরতির বিষয়ে আলোচনার জন্য রাশিয়ায় যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের মার্কিন প্রতিনিধি দল। ইউক্রেনের সঙ্গে দীর্ঘ ৮ ঘণ্টার বৈঠকে কী কী বিষয় আলোচনা হয়েছে তা বিস্তারিত জানতে চায় মস্কো। সেগুলো বিচার-বিশ্লেষণ করেই সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলে জানায় ক্রেমলিন। যদিও পুতিনের কাছে থেকে ইতিবাচক সাড়া পাওয়ার আশা করছেন ট্রাম্প। আর পুতিন রাজি না হলে রাশিয়াকে কঠিন পরিণতি ভোগ করতে হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
তিনি বলেন, 'যুদ্ধবিরতি বিষয়ে আমার পক্ষ থেকে বা আমার প্রশাসনের পক্ষ থেকে রাশিয়ার সঙ্গে আলোচনা হয়নি। আমরা সবেমাত্র একটা উপায় বের করেছি এবং ইউক্রেন এতে রাজি হয়েছে। এ বিষয়ে আমরা শিগগিরই বিস্তারিত জানতে পারবো। তবে রাশিয়ার কাছে থেকে ইতিবাচক বার্তা আসবে।'
গেল ডিসেম্বরে রাশিয়ার গুরুত্বপূর্ণ কুরস্ক শহরের বেশিরভাগ অঞ্চল ইউক্রেন বাহিনীর দখলে চলে যায়। তবে সম্প্রতি রুশ হামলা জোরদার হওয়ায় পিছু হটতে থাকে ইউক্রেন সেনারা। তবে এখনো কুরস্কের চারপাশ ঘিরে রেখে ধ্বংসযজ্ঞ চালাচ্ছে ইউক্রেন। এমন পরিস্থিতিতে হুট করেই সামরিক পোশাকে কুরস্ক শহরে হাজির হন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। অবিলম্বে এই অঞ্চল পুরোপুরি রাশিয়ার দখলে আনার নির্দেশ দেন সেনাদের। এ সময় ইউক্রেনীয় সেনাদের সন্ত্রাসী বলেও আখ্যা দেন তিনি।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেন, 'এই মুহূর্তে রাশিয়া প্রধান কাজ হল যত দ্রুত সম্ভব কুরস্ক শহরে অনুপ্রবেশকারী ও সেখানে সামরিক অভিযান পরিচালনাকারী শত্রুদের সম্পূর্ণরূপে পরাজিত করা। এই ভূখণ্ডকে সম্পূর্ণরূপে শত্রুমুক্ত করে সীমান্ত নিরাপত্তা জোরদার করতে হবে। এই অঞ্চলের ভবিষ্যৎ ও জনগণ নিয়ে আমাদের এখনই ভাবতে হবে।'
রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গেল দুইদিনে কুরস্কে পাঁচটি ও দোনেৎস্কে দুইটি গ্রামের দখল নিয়েছে মস্কো। এছাড়া, কুরস্কের কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ সাদজা শহর নিয়ন্ত্রণে নিয়ে রুশ পতাকা উড়ানো হয়। এদিকে, রাশিয়ার শতাধিক ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলার প্রায় ৯০ শতাংশই সফলভাবে প্রতিহত করার দাবি করছে ইউক্রেন।
এদিকে ইউক্রেনের সহায়তায় ফ্রান্সের প্যারিসে বৈঠক করেছেন ইউরোপের বিভিন্ন দেশের প্রতিরক্ষামন্ত্রী। এরইমধ্যে ইউরোপের ১৫টি দেশ ইউক্রেনের জন্য নতুন নিরাপত্তা কাঠামো গঠনের বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। বৈঠকে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও ন্যাটো কর্মকর্তাদের ডাকা হলেও, আমন্ত্রণ জানানো হয়নি যুক্তরাষ্ট্রকে।