ইউরোপ
বিদেশে এখন
0

ইউক্রেনের বিদ্যুৎ অবকাঠামোয় রাশিয়ার হামলা, জ্বালানি সংকটে কিয়েভ

ইউক্রেনের বিদ্যুৎ অবকাঠামো লক্ষ্য করে অন্তত ৩শ'টি ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। এতে চরম জ্বালানি সংকটে ধুঁকছে কিয়েভ। প্রতিশোধ নিতে আজ (শনিবার, ১৪ ডিসেম্বর) রাতে রাশিয়ার ওরিওল অঞ্চলে জ্বালানি সংরক্ষণ অবকাঠামো লক্ষ্য করে সফল ড্রোন হামলার দাবি করছে ইউক্রেন। তবে রুশ বাহিনী সবদিক থেকে আক্রমণ জোরালো করায় কিছুটা বেকায়দায় রয়েছে ইউক্রেনীয় বাহিনী। নির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতা গ্রহণের পরে ইউক্রেনের বিষয়ে কি সিদ্ধান্ত তার অপেক্ষায় পুরো বিশ্ব।

ইউক্রেনের বিদ্যুৎ ব্যবস্থা লক্ষ্য করে শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) একদিনে প্রায় একশ মিসাইল ও ২০০ ড্রোন ছুঁড়েছে রুশ বাহিনী। ভয়াবহ এই হামলায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির শিকার হয়েছে ইউক্রেনের একটি তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র। পোল্যান্ডের সীমান্তবর্তী লভিভের পশ্চিমাঞ্চলে ছয়টি জ্বালানি সুবিধা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। নষ্ট হয়ে গেছে গুরুত্বপূর্ণ সরঞ্জাম।

পশ্চিমাদের দেয়া দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে রুশ ভূখণ্ড লক্ষ্য করে কিয়েভের চালানো হামলার প্রতিশোধ হিসেবে এই হামলা চালানো হয়েছে দাবি মস্কোর।

আর এটিকে ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি কিয়েভে মস্কোর পূর্ণমাত্রার হামলা শুরুর পর দেশটির বিদ্যুৎ অবকাঠামোর ওপর এটি অন্যতম বড় হামলা বলে দাবি ইউক্রেনের।

এর জবাবে শনিবার রাতে রুশ ভূখণ্ডে বেশ কয়েকটি ড্রোন হামলা চালিয়েছে কিয়েভ। এতে ওরিওল অঞ্চলে জ্বালানি সংরক্ষণ অবকাঠামো সুবিধা লক্ষ্য করে চালানো হয় এই হামলা।

তবে এক হাজার ২৪ দিনের যুদ্ধে ইউক্রেনে স্থল অভিযানও জোরালো করছে রুশ বাহিনী। ৩৩ মাসের যুদ্ধে দোনেৎস্ক এবং ডিনিপ্রোপেট্রোভস্ক অঞ্চল লাগোয়া পোকরোভস্ক শহরকে আক্রমণের প্রধান লক্ষ্যবস্তু করে তুলেছে মস্কো।

এতে তীব্র শীতের মধ্যে বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাসের অভাবে অসহায় হয়ে পড়েছেন শহরের বাসিন্দারা। তাই কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ এই শহর ছাড়তে বাধ্য হচ্ছেন অনেকেই।

শহরের বাসিন্দা বলেন, ‘এখানে বসবাস করার মতো অবস্থা নেই। এখন এমন কোথাও যেতে হবে; যেখানে মৌলিক অধিকার কিছুটা হলেও নিশ্চিত হয় এবং উষ্ণতার ব্যবস্থা আছে।’

সম্প্রতি রুশ বাহিনী দ্রুত এই শহরের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। এর আগে কেউ এটি আশা করেনি। তার ওপর এখন শীতকাল। এমন পরিস্থিতি দুর্ভোগ বাড়িয়ে দিয়েছে।

মূলত ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হিসেবে ক্ষমতায় আসার পর ইউক্রেনের জন্য সহায়তার পরিমাণ কমাবেন এমন গুঞ্জনে শীতের এই সময়ে কিয়েভকে দুর্বল করে তুলতে হামলার মাত্রা বাড়িয়েছে মস্কো।

এমনকি প্রতিকূল পরিস্থিতিতে ইউক্রেনীয় বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে রুশ বাহিনীর সদস্যরা কীভাবে সফল হবে; তার জন্য যুদ্ধের ফাঁকে চলছে প্রশিক্ষণও। এর মধ্য দিয়ে বিজয়ী হওয়ার ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী হয়ে ওঠে রুশ সেনারা।

এক রুশ সেনা বলেন, ‘আমি আশা করি, আমরা পুরো দোনেৎস্ক অঞ্চলকে আমাদের করে নেবো। এই যুদ্ধ অবসান খুব নিকটে। প্রশিক্ষণের মাধ্যমে বড় বাধা সহজভাবে অতিক্রম করার কৌশল শেখানো হচ্ছে। একটি বনে এবং আরেকটি কর্দমাক্ত ভূখণ্ডের যুদ্ধ কৌশল।’

এদিকে ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং ন্যাটোভুক্ত দেশগুলোসহ ইউক্রেন মিত্ররা নির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কার্যভার গ্রহণের জন্য অপেক্ষায়। কারণ ইতোমধ্যে ইউক্রেনে কীভাবে যুদ্ধ শেষ করা যায় তা নিয়ে আলোচনা কিছু ইউরোপীয় নেতারা সঙ্গে আলোচনা হয়েছে ট্রাম্পের।

এমনকি শেষ সময় এসে কিয়েভের জন্য প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের বিভিন্ন সহায়তা প্রতিশ্রুতিরও বিরোধিতা করতে দেখা গেছে। এছাড়া বৃহস্পতিবার প্রকাশিত টাইম ম্যাগাজিনের সাক্ষাৎকারে রুশ ভূখণ্ডে মার্কিনিদের দেয়া ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে ইউক্রেনের হামলার কঠোর সমালোচনা করেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।

এএম