ইউরোপ
বিদেশে এখন
0

রাজা-রানি ও প্রধানমন্ত্রীর গায়ে কাঁদা ছুড়লেন স্পেনের বন্যার্তরা

স্পেনের রাজা-রানি ও প্রধানমন্ত্রীর গায়ে কাঁদা ছুড়লেন বন্যাদুর্গত এলাকার বিক্ষুব্ধ মানুষ। বন্যার আগে সতর্কতার অভাব ও পরে জরুরি পদক্ষেপ নিতে দেরি হওয়াতে সরকারের ওপর অসন্তুষ্ট বলে জানিয়েছেন ক্ষতিগ্রস্তরা। স্পেনের ভ্যালেন্সিয়া অঞ্চলে ভয়াবহ বন্যায় প্রাণহানির সংখ্যা বেড়ে ২১৭ জনে দাঁড়িয়েছে। মারাত্মক বিপর্যয়ের মধ্যে এখনও থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছে।

স্পেনের বন্যাদুর্গত এলাকা পরিদর্শনে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের রোষানলে পড়েন দেশটির রাজা ষষ্ঠ ফিলিপ, রানি লেতিজিয়া ও প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজ। তাদের গায়ে কাঁদা ছুড়ে মেরেছে বিক্ষুব্ধ জনতা। সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত ভ্যালেন্সিয়া প্রদেশের পাইপোর্তা শহরে ঘটেছে এই চাঞ্চল্যকর ঘটনা।

মুখে এবং কাপড়ে কাঁদা নিয়েই বিক্ষুব্ধ জনতাকে সান্ত্বনা দেয়ার চেষ্টা করেন রাজা এবং রানি। কিন্তু কোনো কিছুতেই নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছিলো না পরিস্থিতি। এক পর্যায়ে তাদের নিরাপদে সরিয়ে নিতে বাধ্য হন নিরাপত্তাকর্মীরা।

মূলত বন্যার আগে সরকারের সতর্কতামূলক পদক্ষেপের অভাব, বন্যার পর উদ্ধারকাজে ধীরগতি ও কর্তৃপক্ষের অপর্যাপ্ত সহায়তার জন্য ভ্যালেন্সিয়ার মানুষ অসন্তুষ্ট বলে জানা গেছে। আর এই কারণে রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানের সফরে বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন তারা। এমনকি রাজা, রানি ও প্রধানমন্ত্রীর সামনেই তাদের হত্যাকারী বলেও চিৎকার করে জানিয়েছেন প্রতিবাদ।

স্থানীয় একজন বলেন, 'শেষ ভয়াবহ দুর্যোগের সময় আমরা এখানে একা এবং ক্ষুধার্ত ছিলাম। আমরা কোনো দ্রুত খাবার ও সহায়তা পাইনি, এগুলো কি রাগ হওয়ার কারণ নয়?'

গত মঙ্গলবারের প্রবল বৃষ্টিপাতে পাঁচ দশকের মধ্যে ভয়াবহ বন্যার কবলে পরে স্পেন। আকস্মিক বন্যায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয় ভ্যালেন্সিয়া প্রদেশ ও আশপাশের এলাকা। বন্যার তোড়ে ভেসে যায় বিভিন্ন সেতু, সড়ক ও ভবন। ঘন কাঁদায় ঢেকে আছে অনেক এলাকা। এক সপ্তাহে প্রাণহানির সংখ্যা দুইশ' ছাড়িয়েছে। নিখোঁজ রয়েছেন অনেকেই।

বন্যাদুর্গত এলাকার মানুষের এই দুর্ভোগ কমাতে কাজ করছেন ১০ হাজারের বেশি সেনা, পুলিশ ও সিভিল গার্ডের সদস্যসহ আরও অনেক স্বেচ্ছাসেবক দল।

বন্যার্তদের মধ্যে একজন বলেন, 'বিগত দিনগুলোতে এখানে সেনাবাহিনী ছিল না। অথচ তাদের আগে শত শত স্বেচ্ছাসেবীরা এসেছে। এখন তারা এসেছেন এর জন্য কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। বেসামরিক জনগণ এরইমধ্যেই উদ্যোগ নিয়েছে। তারা আমাদের কাজ সহজ করে দিয়েছে। এখন আমাদের কাছে যাতায়াতের জন্য একটি রাস্তা রয়েছে। আমরা শেষ পর্যন্ত তাদের পাশে থাকব।'

স্পেনে এখনও বৈরি আবহাওয়া বিরাজ করছে। থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছে। প্রায় তিন হাজার পরিবার বিদ্যুৎহীন অবস্থায় রয়েছে।

এসএস