পোল্যান্ড থেকে ১০ ঘণ্টা ট্রেনযাত্রা শেষে ইউক্রেনে পদার্পণের মাধ্যমে ইতিহাস সৃষ্টি করলেন নরেন্দ্র মোদি। ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়ন থেকে স্বাধীনতা পাওয়ার পর প্রথম কোনো ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর ইউক্রেন সফর এটি।
রাজধানী কিয়েভে অবস্থিত মহাত্মা গান্ধীর ভাস্কর্যে শ্রদ্ধা জানানোর সময় স্থানীয় ভারতীয়দের উষ্ণ অভ্যর্থনা পান ভারতের সরকারপ্রধান। বন্ধুসুলভ ভঙ্গিতে সাক্ষাৎ করেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে। এ সময় ইউক্রেন যুদ্ধে নিহত শিশুদের স্মরণ করা হয়।
মোদির ইউক্রেন সফরকে ঐতিহাসিক বলার কারণ বিবাদমান দু'পক্ষকে সংলাপের টেবিলে বসানোর প্রচেষ্টা। শান্তি ফেরাতে দেশ হিসেবে ভারত, এমনকি ব্যক্তিগতভাবেও কাজ করতে প্রস্তুতের কথা জানান মোদি। যুদ্ধের বদলে আলোচনার টেবিলে বসার আহ্বানও ছিল ভারতের প্রধানমন্ত্রীর কণ্ঠে।
নরেন্দ্র মোদি বলেন, 'আমি আশ্বস্ত করতে চাই, শান্তি প্রতিষ্ঠায় ভারত সক্রিয় ভূমিকা রাখতে প্রস্তুত। ব্যক্তিগতভাবেও আমি শান্তি ফেরাতে কাজ করতে রাজি আছি। বন্ধু হিসেবে আমি কথাগুলো আশ্বস্ত করলাম।'
কিয়েভের সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক অখণ্ডতা সমর্থন করায় মোদি সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন জেলেনস্কি। জানান, শান্তি প্রস্তাব তৈরিতে কাজ করছে নয়াদিল্লি। পুতিনকে আটকাতে ভারত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে আশাবাদ ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের।
ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেন, 'আমার মতে ভারত বুঝতে পারছে, এই যুদ্ধটি শুধু একজন মানুষের সৃষ্টি। তিনি হলেন পুতিন। তিনি সমগ্র ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছেন। ভারত বড় দেশ, আপনাদের ভালো প্রভাব রয়েছে। তাই আপনারাই পুতিনকে রুখতে পারবেন।'
এদিকে সংবাদ সম্মেলনে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর জানান, মস্কোর কাছ থেকে জ্বালানি তেল কেনা রাজনৈতিক কৌশল নয়, বরং ব্যবসায়িক কৌশল।
এস জয়শঙ্কর বলেন, 'জ্বালানি তেলের বাজার ছোট হচ্ছে। ইরান ও ভেনেজুয়েলার মতো বড় জ্বালানি সরবরাহকারীরা বাজারে অবাধে কাজ করতে পারছে না। তাই এই বিষয়গুলো সবার মনে রাখা উচিত।'
ঐতিহাসিক এই সফরে খাদ্য ও ওষুধসহ চারটি সমঝোতা চুক্তি সই করেছে ভারত ও ইউক্রেন। দ্রুতই ভারত সফরের আশা প্রকাশ করেছেন ভলোদিমির জেলেনস্কি।