রাশিয়ায় সামরিক কার্যালয় স্থাপন কিয়েভের

ইউরোপ
বিদেশে এখন
0

রাশিয়ার কুরস্ক অঞ্চলের একটি শহর দখল নিয়েছে ইউক্রেন। শুধু তাই নয়, সেখানে সামরিক কার্যালয় স্থাপন করেছে কিয়েভের সেনাবাহিনী। শহরের খুব কাছেই রাশিয়ার গ্যাস সরবরাহের টার্মিনাল থাকায় ইউরোপে গ্যাস সরবরাহ ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। এদিকে, রাশিয়ার অভ্যন্তরে ইউক্রেনের হঠাৎ হামলা, পশ্চিমা সমরাস্ত্রের ব্যবহারে জো বাইডেন পড়ে গেছেন উভয় সংকটে।

এতদিন ইউক্রেনে রাশিয়ার সেনা অভিযান বন্ধে আকুতি মিনতি করলেও হঠাৎই বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। ১০ দিন আগে হঠাৎ তার সেনাবাহিনী রাশিয়ার অভ্যন্তরে কুরস্ক অঞ্চলে ঢুকে পড়ে।

ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যম বিবিসি বলছে, কুরস্কে ৫ থেকে ১২ হাজার ইউক্রেনীয় সেনা আছেন। এখন পর্যন্ত ১ হাজার ১৫০ স্কয়ার কিলোমিটার এলাকা দখলে নেয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ইউক্রেনের সেনাপ্রধান ওলেক্সান্ডার সিরস্কি। ভলোদিমির জেলেনস্কি জানান, এই শহর থেকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে রুশ সেনাদের।

দখলে নেয়া কুরস্কের এই সুদঝা শহর গুরুত্বপূর্ণ, পশ্চিম সাইবেরিয়া থেকে এখানকার স্টেশনে আসে রাশিয়ার প্রাকৃতিক গ্যাস। যা ইউক্রেন হয়ে ইউরোপে যায়, এই পরিমাণ ইউরোপের মোট গ্যাস আমদানির ৩ শতাংশ। আন্তর্জাতিক অনেক গণমাধ্যম বলছে, ইউরোপে গ্যাস সরবরাহ ব্যাহত হতে পারে যেকোনো সময়। রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলছে, এই অঞ্চলের মানুষকে নিরাপত্তা দিতে আরও সেনাসদস্য পাঠাবে মস্কো।

এই অঞ্চলের জন্য অনেক বেশি ড্রোন হামলা করছে দুই দেশই। তবে ইউক্রেনের প্রক্রিয়া ভিন্ন। ইউক্রেনের সেনারা ড্রোনে ইলেক্ট্রনিক ওয়ারফেয়ার ব্যবহার করে রাশিয়ার ড্রোন জ্যাম করে দিচ্ছে আর হামলা চালাচ্ছে। যদিও রাশিয়া বলছে, কুরস্ক ও এর আশপাশে ইউক্রেনের ১১৭ টি ড্রোন আর ৪টি ক্ষেপণাস্ত্র ভূপাতিত করা হয়েছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এই প্রথম রাশিয়ায় সেনা অনুপ্রবেশের ঘটনায় হতবাক রুশ প্রশাসন।

পুতিন প্রশাসন যখন পাল্টা পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত, তখন ব্রিটেন বলছে, এই সেনা অনুপ্রবেশে তাদের সমরাস্ত্র ব্যবহার করতে পারে কিয়েভ। রাশিয়া বলছে, পশ্চিমাদের দেয়া হিমারস ধ্বংস করেছে তারা। যুদ্ধক্ষেত্রে পশ্চিমা সমরাস্ত্র ইউক্রেন ব্যবহার করছে কিনা, তা নিশ্চিত করেনি পেন্টাগন। অথচ রাশিয়া বরাবরই বলে আসছে নিজ দেশকে রক্ষার পরিবর্তে এই সমরাস্ত্র রুশ ভূখণ্ডে হামলায় ব্যবহার করা হলে পরিণতি হবে ভয়াবহ। সংবাদ মাধ্যম আল জাজিরা বলছে, যদি কুরস্কে পশ্চিমা সমরাস্ত্র ব্যবহার করা হয়, ইউক্রেনের জন্য সতর্ক সংকেত। রাশিয়ার রেড লাইন অবজ্ঞা করলে আরও বাড়তে পারে এই সংঘাত।

কুরস্কে ইউক্রেনের হামলা আর পশ্চিমা সমরাস্ত্র ব্যবহার আলোচনায় আসার পর উভয় সংকটে পড়ে গেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।

মার্কিন কর্মকর্তারা বলছেন, ইউক্রেন যদি যুদ্ধক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের সরবরাহ করা সমরাস্ত্র ব্যবহার করে, পাল্টে যাবে যুদ্ধক্ষেত্রের রাজনৈতিক আর সামরিক পটভূমি। এতোদিন পর্যন্ত ইউক্রেনকে সমরাস্ত্র দিলেও রাশিয়ার সঙ্গে সরাসরি কোন সংঘাতে জড়ায়নি যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু ইউক্রেনের কুরস্কে সেনা অনুপ্রবেশের ঘটনায় বেড়ে গেছে পুতিন আর পশ্চিমাদের সংঘাতের সম্ভাবনা। প্রশ্ন তৈরি হয়েছে, ওয়াশিংটনের নীতি উপেক্ষা করে কি ইউক্রেন পশ্চিমা সমরাস্ত্র রুশ ভূখণ্ডে ব্যবহার করবে? নাকি পশ্চিমাদের এই যুদ্ধে রেড লাইন উপেক্ষা করে টেনে নিয়ে আসবে কিয়েভ? বর্তমানে পুতিনের পাল্টা জবাবের অপেক্ষায় আছে যুক্তরাষ্ট্র।

tech