মানবজাতির চতুর্থ যুদ্ধক্ষেত্র মহাকাশ। এই মহাকাশে অস্ত্র প্রতিযোগিতা নতুন নয়। যে সে অস্ত্র নয়- একবারে পারমাণবিক অস্ত্র মোতায়েনের দৌড়ঝাঁপ চলছে অনেক আগে থেকেই। এই খেলায় লিপ্ত রয়েছে বিশ্বের ক্ষমতাধর পরাশক্তিগুলো।
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় থাকার সময়ে শত্রুর ছোঁড়া ক্ষেপণাস্ত্র চিহ্নিত করতে এবং তা আকাশেই ধ্বংস করতে একটি প্রকল্পে কয়েক বিলিয়ন ডলার বরাদ্দ দিয়েছিল। সে সময় মহাকাশে অস্ত্র মোতায়েনের মার্কিন সেই পরিকল্পনার নিন্দা জানায় রাশিয়া।
এবার মার্কিন গোয়েন্দা কর্মকর্তারা সেই রাশিয়ার বিরুদ্ধেই দিলো চাঞ্চল্যকর তথ্য। যেখানে দাবি করা হচ্ছে, মহাকাশে পারমাণবিক অস্ত্র মোতায়েনের পথে অনেক দূর এগিয়েছে মস্কো। ইউক্রেনের জন্য মার্কিন সামরিক সহায়তার প্রস্তাব নিয়ে মার্কিন কংগ্রেসে রাজনৈতিক টানাপড়েনের মধ্যে এমন খবর উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
মার্কিন কংগ্রেসের স্পিকার মাইক জনসন বলেন, 'এটি অত্যন্ত গুরুতর বিষয়। কারণ এখানে রাশিয়া জড়িত। অর্থাৎ খুব দ্রুতই এ বিষয়ে সমাধানে আসতে হবে।'
রিপাবলিকান নেতা মাইক টার্নার বলেন, 'আমি মনে করি প্রতিরক্ষা বিভাগ রাশিয়ান অ্যান্টি-স্যাটেলাইট অস্ত্রের বিষয়ে আরও তথ্য প্রকাশ করবে। তবে প্রশাসন এই বিষয়টির সমাধানে যেই পথে এগুচ্ছে তার ওপর আমার বিশ্বাস রয়েছে।'
মহাকাশের রুশ পারমাণবিক অস্ত্রটি স্যাটেলাইট বিধ্বংসী বলে দাবি করছে ওয়াশিংটন। বিশ্লেষকরা বলছেন, এটি মানুষের শারীরিক কোনো ক্ষতি করবে না। কিন্তু মহাকাশ থেকে চালানো নজরদারি, যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের সামরিক ও বাণিজ্যিক যোগাযোগকে বিকল করতে পারে। এছাড়া জিপিএস সিস্টেমসহ যোগাযোগ ব্যবস্থাও ধ্বংস করতে পারে। তবে এটি নিয়ে এখনই ভয় পাওয়ার কিছু নেই বলে জানিয়েছেন হোয়াইট হাউজের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন কিরবি।
তিনি বলেন, 'এটি এখনও সক্রিয় ক্ষমতা হয়ে ওঠেনি। যদিও রাশিয়ার এই বিশেষ ক্ষমতার অন্বেষণ উদ্বেগের। তবে কারো নিরাপত্তার জন্য তাৎক্ষণিক কোনো হুমকি নেই। তবে এটির মধ্য দিয়ে মহাকাশ চুক্তির লঙ্ঘন হবে। যেখানে রাশিয়াসহ ১৩০টিরও বেশি দেশ স্বাক্ষর করেছে।'
১৯৬৭ সালের আউটার স্পেস চুক্তির আওতায় মহাকাশভিত্তিক মানববিধ্বংসী অস্ত্র তৈরি ও ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়। আর যুক্তরাষ্ট্রের দেয়া নতুন খবর অনুযায়ী সেই চুক্তি থেকে রাশিয়া বেরিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে কি-না তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। তবে মার্কিন গোয়েন্দাদের মতে মস্কো খুব শিগগিরই অ্যান্টি-স্যাটেলাইট ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ করতে পারবে না।