মিয়ানমারে ২৬৫টি অঞ্চলে নির্বাচনের আয়োজন; সমালোচনার মুখে জান্তা সরকার

মিয়ানমারে নির্বাচনের প্রচারণা
মিয়ানমারে নির্বাচনের প্রচারণা | ছবি: এবিসি নিউজ
0

মিয়ানমারের ৩৩০টি প্রশাসনিক এলাকার মধ্যে তিন ধাপের ২৬৫টি প্রশাসনিক অঞ্চলে নির্বাচনের আয়োজন করে সমালোচনার মুখে জান্তা সরকার। ভোট আয়োজনের মধ্যেও সামরিক অভিযান জোরদারের ঘোষণা দিয়ে আরও বেশি প্রশ্নবিদ্ধ মিন অং লাইং প্রশাসন। এ অবস্থায় নির্বাচনকে কমেডি শো বলে মন্তব্য করছেন পালিয়ে রক্ষা পাওয়া মিয়ানমারের তরুণরা।

২০২১ সালের সামরিক অভ্যুত্থানে অং সান সুচি সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর পাঁচ বছর ধরে চলমান গৃহযুদ্ধ পরিস্থিতির মধ্যে এবার ভোটের মাঠে মিয়ানমারে জান্তা সরকার। ২৮ ডিসেম্বর রোববার শুরু হতে যাওয়া তিন ধাপের সাধারণ নির্বাচন ঘিরে এরইমধ্যে ব্যাপক সমালোচনার মুখে মিন অং লাইং প্রশাসন।

জান্তা সরকার তৃতীয় ধাপের ভোটের দিন-ক্ষণ ও প্রশাসনিক এলাকা ঘোষণার পর নির্বাচন নিয়ে আরও বেশি সমালোচনার ঝড় বইছে। কারণ তিন ধাপে মিয়ানমারের ৩৩০টি প্রশাসনিক এলাকার মধ্যে ২৬৫টি প্রশাসনিক এলাকায় নির্বাচনের আয়োজন করার ঘোষণা দিয়েছে জান্তা সরকার। এছাড়াও ভোটের আগে জান্তা বিরোধী ও বিদ্রোহী সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মি নিয়ন্ত্রণে থাকা এলাকাগুলোয় স্থল ও নৌপথে অভিযান জোরদারের ঘোষণায় আরও বেশি প্রশ্নবিদ্ধ হলো মিন অং লাইংয়ের নির্বাচন আয়োজন।

এ অবস্থায় জান্তা সরকারের আসন্ন নির্বাচনকে একটি কমেডি শো হিসেবে দেখছেন মিয়ানমার থেকে পালিয়ে থাইল্যান্ডে অবস্থান করা তরুণরা। আল জাজিরার বিশেষ প্রতিবেদনে ওঠে এসেছে এ তথ্য। এছাড়াও মিয়ানমারের বেশিরভাগ মানুষই জান্তা সরকারের নির্বাচন আয়োজন নিয়ে শঙ্কিত। ক্ষমতা দীর্ঘায়িত করার জন্য বৈধতা দিতে জান্তা সরকার পাতানো নির্বাচনের আয়োজন করেছে বলেও অভিযোগ উঠেছে।

আরও পড়ুন:

তরুণদের মধ্যে একজন বলেন, ‘জান্তা সরকারের নির্বাচন জনগণের ওপর তাদের ক্ষমতা দীর্ঘায়িত করার জন্য করা হয়েছে। যা জনগণ এবং জাতিগত সংখ্যালঘু গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে তাদের অপরাধের দায়মুক্তির কৌশল।’

এমন পরিস্থিতিতে মিন অং লাইং প্রশাসনের ভোট আয়োজন করলেও দেশটিতে প্রকৃত শান্তি ফিরবে না বলেও শঙ্কা বিশ্লেষকদের।

থাইল্যান্ডের কাসেটসার্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাষক ললিতা হানওং বলেন, ‘আমি মনে করি যে এ নির্বাচন মিয়ানমারে নতুন কিছু বয়ে আনবে না। যেসব প্রতিরোধ গোষ্ঠী সর্বদা সামরিক জান্তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ও প্রতিরোধের অগ্রভাগে ছিল তারা তাদের সংগ্রাম চালিয়ে যাবে।’

এমনকি অং সান সু চিসহ অনন্যা নেতাদের কারাবন্দি রেখে জনপ্রিয় রাজনৈতিক দল ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্রেসি পার্টিকে নির্বাচন করার সুযোগ না দেয়ায়ও জান্তা সরকারের ভোট আয়োজন প্রশ্নের মুখোমুখি। ইতিহাস বলছে, ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসন থেকে ১৯৪৮ সালে স্বাধীনতা পাওয়ার পর মিয়ানমারে বেশির ভাগ সময় শাসন করে আসছে সামরিক বাহিনী।

এসএস