থাইল্যান্ড–কম্বোডিয়া সংঘাত: আসিয়ানের বিশেষ সভা স্থগিত, এক সপ্তাহে নিহত অন্তত ৪০

আসিয়ান সম্মেলন লোগো
আসিয়ান সম্মেলন লোগো | ছবি: সংগৃহীত
0

থাইল্যান্ড-কম্বোডিয়ার চলমান সংঘাতে আসিয়ানের বিশেষ সভা স্থগিত করেছে মালয়েশিয়া। বন্ধ হয়ে আছে দুই দেশের হাজারের বেশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। সীমান্ত সংঘাতের জেরে লাওসের জ্বালানি পরিবহনের একটি স্থল রুট বন্ধের পাশাপাশি সমুদ্রপথও বন্ধ করে দিয়েছে থাইল্যান্ড। এক সপ্তাহের চলমান সংঘাতে দুই দেশে প্রাণ হারিয়েছে অন্তত ৪০ জন।

সীমান্তবিরোধ নিয়ে গেল কয়েক মাস ধরে উত্তেজনা বইছে থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার মধ্যে। দুই প্রতিবেশি দেশের ৮১৭ কিলোমিটার স্থলসীমান্তের প্রায় প্রতিটি পয়েন্টেই চলছে সংঘর্ষ। যুদ্ধবিরতি নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের হস্তক্ষেপের পরও শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। ভেঙে পড়েছে সব ধরনের কূটনৈতিক প্রচেষ্টাও।

এমন অবস্থায় দুই দেশের চলমান সংঘাতের জেরে বিশেষ আসিয়ান সভা স্থগিত করেছে মালয়েশিয়া। আসিয়ান সদস্য রাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠকটি ১৬ ডিসেম্বর থেকে পিছিয়ে নির্ধারণ করা হয়েছে ২২ ডিসেম্বর। যুদ্ধ বন্ধে দুই দেশের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন মালয়েশিয়া প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম।

চলমান সংঘাতে কম্বোডিয়ার ছয়টি প্রদেশে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে এক হাজারের বেশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এতে বিপাকে পড়েছে প্রায় আড়াই লাখ শিক্ষক ও শিক্ষার্থী। এদিকে, থাইল্যান্ডে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে ছয় শতাধিক স্কুল ও হাসপাতাল।

থাইল্যান্ডের একজন নাগরিক বলেন, ‘সন্তানদের পড়াশোনা নিয়ে আমরা চিন্তিত। স্কুল আবার শুরু হলেও তারা পড়াশোনা চালিয়ে যেত পারবে কি না তা নিয়ে সংশয় রয়ে গেছে।’

আরও পড়ুন:

অন্য একজন বলেন, ‘যুদ্ধের কারণে আতঙ্কের মধ্যে অনেকের স্কুলে যাওয়া বন্ধ হয়ে গেছে। এখানে বাস্তুচ্যুত শিশুদের পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা চলছে।’

শুধু তাই নয় থাই উপসাগরকে উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চল ঘোষণা করে সমুদ্রপথ বন্ধের পদক্ষেপ নিয়েছে থাইল্যান্ডের সামরিক বাহিনী। তাদের দাবি, এতে তৃতীয় দেশ থেকে আসা জাহাজগুলো আক্রান্ত হবে না।

এদিকে লাওসের সঙ্গে সীমান্তের একটি চেকপয়েন্ট বন্ধ করে দিয়েছে থাইল্যান্ড। তাদের আশঙ্কা, এ রুটে সরবরাহ হওয়া জ্বাললিগুলো কম্বোডিয়ায় যাচ্ছে, যা দিয়ে সীমান্তে তীব্র লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে দেশটি। সীমান্তে আটকে আছে জ্বালানি তেলের ট্যাংকার।

থাইল্যান্ডের নাগরিকদের কজন বলেন, ‘জানি না কতক্ষণ বা কতদিন এখানে আমাকে অপেক্ষা করতে হবে। পরবর্তী নির্দেশনার জন্য রাস্তায় বসে আছি।’

প্রতিবেশি দুই দেশের সংঘাতে বাস্তুচ্যুত প্রায় আট লাখ মানুষ। কম্বোডিয়ার ব্যস্ত সীমান্ত শহরগুলোতে এখন সুনশান নিরবতা। বন্ধ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও দোকানপাট। আতঙ্কে বাসিন্দারা কেউ বাইরে বের হচ্ছেন না। সংঘাতের জন্য একে-অপরকে দোষারোপ করছে থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়া।

এসএস