বিতর্কিত ওয়াকফ সংশোধনী আইন বাতিলের দাবিতে বিশাল গণজমায়েত হয়েছে ভারতের তেলেঙ্গানা রাজ্যের হায়দরাবাদ শহরে। শনিবার (১৯ এপ্রিল) রাতে মুসলিমদের অংশগ্রহণে জনসমুদ্রে পরিণত হয়েছে গোটা শহর। ভারতে ওয়াকফ সংশোধনী আইনের বিরুদ্ধে এটিই সবচেয়ে বড় জমায়েত।
অল ইন্ডিয়া মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমিনের সভাপতি ও লোকসভা সংসদ সদস্য আসাদুদ্দিন ওয়াইসির নেতৃত্বে হয় এই বিক্ষোভ। ওয়াকফ আইন বাতিলের দাবিতে এ গণজমায়েতকে ঐক্যের প্রতীক বলছেন আসাদুদ্দিন ওয়াইসি। সংবিধান বিরোধী ওয়াকফ সংশোধনী আইন বিজেপি সরকারকে অবশ্যই বাতিল করতে হবে বলে সাফ জানিয়ে দেন তিনি।
অল ইন্ডিয়া মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমিনের সভাপতি আসাদুদ্দিন ওয়াইসি বলেন, 'বিজেপি আইন নিয়ে প্রতারণা করছে। মুসলিম সংখ্যালঘুদের ধমকি দিয়ে চুপ রাখার চেষ্টা করছে এবং আদালতকে ধমকি দিয়ে ওয়াকফ আইন পাশ করিয়েছে বিজেপি। প্রধানমন্ত্রী মোদি যদি বিষয়টি এখনই না থামায় তবে ভারত তাকে কখনও ক্ষমা করবে না।'
সম্প্রতি ভারতের পার্লামেন্টে পাস হওয়া ওয়াকফ আইনের সংশোধনী নিয়ে দেশজুড়ে বিতর্ক ছড়িয়েছে। এই সংশোধনীর ফলে অ-মুসলিমদের ওয়াকফ বোর্ডে অন্তর্ভুক্ত করার সুযোগ তৈরি হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এই ইস্যুতে পশ্চিমবঙ্গে হিংসাত্মক সংঘর্ষে অন্তত তিনজন নিহত হয়েছেন, যা পরিস্থিতিকে আরও উত্তপ্ত করে তুলেছে।
যদিও বিজেপি সরকার সুপ্রিম কোর্টকে আশ্বাস দিয়েছে, আগামী ৫ মে মামলার পরবর্তী শুনানি না হওয়া পর্যন্ত ওয়াকফ বোর্ডে অ-মুসলিমদের অন্তর্ভুক্ত করা হবে না।
তবে মুসলিম সম্প্রদায় ও বিরোধী দলগুলোর দাবি, এই আইন সংখ্যালঘুদের ধর্মীয় অধিকার লঙ্ঘন করছে ও সংবিধানের মৌলিক নীতির পরিপন্থি।
মুসলিম জনগোষ্ঠী আছে, এমন বহু দেশে ওয়াকফ একটি ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠান, যার মাধ্যমে মসজিদ, মাদ্রাসা, কবরস্থান, এতিমখানা, হাসপাতাল ইত্যাদি পরিচালিত হয়। দেড়শ' কোটি জনসংখ্যার দেশ ভারতে সংখ্যালঘু ২০ কোটি মুসলিমের জন্যও মাথার ওপর ছায়া ওয়াকফ। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সরকার সেই ওয়াকফ বোর্ড নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে বিতর্কিত সংশোধনী আইন এনে তোলপাড় করে তুলছে পুরো ভারত।