ভারতের উত্তর প্রদেশে মহাকুম্ভ মেলায় অংশ নিতে প্রতিদিনই দেশ বিদেশ থেকে আসছেন লাখ লাখ ভক্ত অনুরাগী। গেল দুই সপ্তাহে প্রায় ১৫ কোটি মানুষ এতে অংশ নেন।
বুধবার (২৯ জানুয়ারি) মেলার সবচেয়ে শুভ দিন হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এ কারণে মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) মধ্যরাত থেকে কোটি কোটি ভক্ত কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে অমৃত স্নানের জন্য নদীর তীরে জড়ো হতে থাকেন। এ সময় প্রচণ্ড ভিড়ে শুরু হয় হুড়োহুড়ি। ভিড় ঠেলে সামনে এগিয়ে যাওয়ার সময় পদপিষ্ট ও শ্বাসরোধ হয়ে ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান বেশ কয়েকজন। হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, স্নানের জন্য যাওয়া-আসার বিষয়ে স্পষ্ট কোনো দিক নির্দেশনা ছিল না। একদল স্নানের জন্য ঘাটের দিকে যাচ্ছে এবং অন্যরা তখন ঘাট থেকে তাবুর দিকে ফিরছিলেন। প্রবল ভিড়ে শুরু হয় ধাক্কাধাক্কি। এ সময় বেশ কয়েকটি ব্যারিকেড ভেঙে নিচে পড়ে যান বহু পুণ্যার্থী। তাদের মাড়িয়েই এগোনোর চেষ্টা করেন অন্যরা। এ ঘটনায় নিখোঁজ রয়েছেন বহু নারী ও শিশু।
ঘটনাস্থলে একের পর এক অ্যাম্বুলেন্সে আসে। হতাহতদের উদ্ধার করে নেয়া হয় স্থানীয় একটি হাসপাতালে। স্ট্রেচারে করে অ্যাম্বুলেন্সে তোলা হয় মরদেহগুলো। এ সময় স্বজনেরা কান্নায় ভেঙে পড়েন।
মেলায় আসা একজন বলেন, 'হুট করেই প্রচণ্ড ভিড়ের মধ্যে আমরা আটকে যাই। এ সময় ধাক্কাধাক্কি শুরু হলে অনেকেই পদদলিত হয়।'
জনসমুদ্রের মধ্যে পরিস্থিতি সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন নিরাপত্তা কর্মীরা। উদ্ধারকাজে মোতায়েন আছে বিশেষ ইউনিট র্যাপিড অ্যাকশন ফোর্সের সদস্যরা। বাতিল করা হয়েছে অমৃত স্নানের অনুষ্ঠানও। তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিতে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথকে নির্দেশ দিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষের বিশ্বাস, তিন নদীর সঙ্গমস্থলে স্নান করলে তারা পাপমুক্ত হবেন এবং জন্ম ও মৃত্যুর চক্র থেকে মুক্তি পাবেন। এবার প্রয়াগরাজে আয়োজন করা হয় ৪০ কোটি পুণ্যার্থীর জন্য মহাকুম্ভ মেলা। ১৩ জানুয়ারি থেকে শুরু হওয়া এই মেলা চলবে ২৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত।