এশিয়া
বিদেশে এখন
0

’৭১ এ পাকিস্তানের আত্মসমর্পণের ছবি সরানোর এক মাস পর ভারতীয় সেনাপ্রধানের ব্যাখ্যা

ভারতীয় সেনাপ্রধানের কার্যালয় থেকে ১৯৭১ এ পাকিস্তানের আত্মসমর্পণের ছবিটি সরানোর এক মাস পর এর ব্যাখ্যা দিলেন সেনাপ্রধান উপেন্দ্র দ্বিবেদী। ছবিটি সেনাপ্রধানের আরেকটি নতুন লাউঞ্জে প্রতিস্থাপন করা হয়েছে বলে জানান দ্বিবেদী। প্রায় অর্ধশতাব্দী ধরে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর যৌথবাহিনীর কাছে পাকিস্তানের আত্মসমর্পণের ছবিটি ভারতীয়দের কাছে সবচেয়ে বড় সামরিক বিজয়ের প্রতীক ছিল। গেল ডিসেম্বরে ছবিটি ভারতীয় সেনাপ্রধানের কার্যালয় থেকে নামিয়ে টানানো হয় ফিল্ড অব ডিডস বা 'করম ক্ষেত্র' নামে নতুন একটি চিত্রকর্ম।

১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর দীর্ঘ ৯ মাস মুক্তিযুদ্ধের পর পাকিস্তানের আত্মসমর্পণের মাধ্যমে স্বাধীনতা পায় বাংলাদেশ। ঐতিহাসিক সেই দিনে যৌথবাহিনীর সামনে আত্মসমর্পণ দলিলে সই করেন পাকিস্তানের লেফটেন্যান্ট জেনারেল আমীর আবদুল্লাহ নিয়াজী। যৌথ বাহিনীর পক্ষে ছিলেন মিত্রবাহিনীর কমান্ডার ভারতীয় জেনারেল জগজিৎ সিং আরোরা। আত্মসমর্পণের আনুষ্ঠানিকতায় বাংলাদেশ সরকারের প্রতিনিধিত্ব করেন গ্রুপ ক্যাপ্টেন এ কে খন্দকার।

আত্মসমর্পণের ঐতিহাসিক মুহূর্তটি বাংলাদেশের মতো ভারতেও গৌরবের প্রতীক ছিল। প্রায় ৫৩ বছর ধরে ভারতীয়দের সবচেয়ে বড় সামরিক বিজয়ের স্মারক ছিল আইকনিক এই ছবিটি। ভারতীয় সেনাপ্রধানের কার্যালয়ে টানানো ছিল এটি। যা বিদেশি জেনারেল ও অন্য বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে তোলা ছবির পটভূমি হিসেবে ব্যবহৃত হতো।

গেল ১৬ ডিসেম্বর ছবিটি ভারতীয় সেনাপ্রধানের কার্যালয় থেকে সরিয়ে নিলে শুরু হয় বিতর্ক। পরে দেশটির সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয় ছবিটি কার্যালয় থেকে সরিয়ে পুনঃস্থাপন করা হয়েছে সেনাপ্রধানের আরেকটি লাউঞ্জ মানেকশ কনভেনশন সেন্টারে।

আর সেনাপ্রধানের কার্যালয়ে বর্তমানে শোভা পাচ্ছে ভারতীয় এক সেনার আঁকা ফিল্ড অব ডিডস বা করম ক্ষেত্র নামে নতুন চিত্রকর্ম। নতুন চিত্রকর্মটি দেশটির সেনাবাহিনীর অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যৎকে সংযুক্ত করার প্রতীক হিসেবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে।

ছবিটি নামানোর এক মাস পর এর ব্যাখ্যা দিলেন ভারতীয় সেনাপ্রধান উপেন্দ্র দ্বিবেদী। তিনি বলেন আত্মসমর্পণের ছবিটি সরানো হয়নি, বরং পুনঃস্থাপন করা হয়েছে। আর নতুন ছবিটি বর্তমান বাস্তবতা বিবেচনায় তৈরি করা হয়েছে।

ভারতের সেনাপ্রধান উপেন্দ্র দ্বিবেদী বলেন, ‘গেল ১৬ ডিসেম্বর আত্মসমর্পণের ছবিটি মানেকশ সেন্টারে প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। এটি একটি ঐতিহাসিক ছবি। তাই এটি নামানো বা সরিয়ে ফেলা উচিত হবে না। বর্তমানে যে ছবিটি টানানো হয়েছে সেটি নতুন প্রজন্মের জন্য। যেখানে ভারতের গৌরবময় ইতিহাসের তিনটি অধ্যায় ব্রিটিশ আমল, মুঘল আমল এবং তার আগের সময়কে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। যা ভারতীয় সেনাবাহিনীর দর্শনের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করেছে।’

নতুন চিত্রকর্মটির ব্যাকগ্রাউন্ডে তুষার ঢাকা পাহাড়, লাদাখের প্যাংগং লেক, বিষ্ণুর বাহন, কৃষ্ণের রথ এবং চাণক্যের উপস্থিতি রয়েছে। পাশাপাশি, শোভা পাচ্ছে আধুনিক সামরিক সরঞ্জাম। যেখানে ভারতের গৌরবময় ইতিহাসের সঙ্গে আধুনিকতার সংমিশ্রণ দেখানো হয়েছে।

এএইচ