কাজ মানুষকে খুন করা হলেও ভারতে বেশ জনপ্রিয় বিষ্ণোই গ্যাং। ভারতের একদল মানুষ তাদের কার্যক্রমকে দেশপ্রেমের নিদর্শন হিসেবে দেখে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের বিভিন্ন পোস্ট ও কমেন্টেও এর প্রমাণ পাওয়া যায়। বিষ্ণোই গ্যাংয়ের প্রতিষ্ঠাতা লরেন্স বিষ্ণোই কারাগারে থাকলেও তার অনুসারীরা চালিয়ে যাচ্ছে হত্যাকাণ্ড। মহারাষ্ট্রের সাবেক বিধায়ক বাবা সিদ্দিকির হত্যার দায় স্বীকার করেছে লরেন্স বিষ্ণোই গ্যাং। শনিবার রাতে দশেরা উদ্যাপনের সময় মুম্বাইয়ের বান্দ্রায় অফিসের বাইরে গুলি করে হত্যা করা হয় বাবা সিদ্দিকীকে।
এই বাবা সিদ্দিকী মহারাষ্ট্রের দল ন্যাশনাল কংগ্রেসের নেতাও ছিলেন। তবে রাজনীতির বাইরেও সালমান খান ও শাহরুখ খানসহ বলিউড তারকাদের সঙ্গেও ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল তার। পুলিশ জানায়, বান্দ্রায় দশেরার বাজি ফোটানোর সময় তিন বন্দুকধারী বাবা সিদ্দিকীকে গুলি করে।
ঘটনার মাস্টারমাইন্ড দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এদের মধ্যে একজন হরিয়ানার বাসিন্দা গুরমিত বালজিত শিং, আরেকজন উত্তর প্রদেশের ধর্মরাজ কশ্যপ। তবে তৃতীয় ব্যক্তি উত্তর প্রদেশের শিব কুমার এখনও পলাতক। এই শিব কুমার বাবা সিদ্দিকীকে লক্ষ্য করে ছয়টি গুলি করে। মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী একনাথ সিন্ধে জানিয়েছেন, তৃতীয় ব্যক্তিকে দ্রুতই গ্রেপ্তার করা হবে।
বিভিন্ন সূত্র ও ভারতীয় গণমাধ্যম বলছে, ৬৬ বছর বয়সী বাবা সিদ্দিকীকে হত্যার দায় স্বীকার করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট দিয়েছে ভারতের মাফিয়া বিষ্ণোই গ্যাং। গ্রেপ্তার হওয়া দুই ব্যক্তিও স্বীকার করেছেন তারা বিষ্ণোই গ্যাংয়ের জন্য কাজ করেন। পুলিশ জানায়, বাবা সিদ্দিকীর দেহরক্ষীদের চোখে মরিচের গুড়া ছোড়ে বন্দুকধারীরা। এরপরই তাকে গুলি করা হয়।
বিভিন্ন সূত্র বলছে, সালমান খানের সঙ্গে সখ্যতার কারণে লরেন্স বিষ্ণোইয়ের নির্দেশেই বাবা সিদ্দিকীকে হত্যা করা হয়। এর আগে সালমান খানের বাড়িতেও গুলি করে বিষ্ণোই গ্যাং। পুলিশ জানায়, এই হত্যাকাণ্ডের জন্য বন্দুকধারীদের প্রত্যেককে ৫০ হাজার রুপি করে দেয়া হয়।
অনেক মামলা মাথায় নিয়ে লরেন্স বিষ্ণোই বর্তমানে গুজরাটের একটি কারাগারে বন্দি আছেন। তবে তার চক্র মুক্তিপণের জন্য ব্যবসায়ীদের ফোন দিয়ে সংবাদের শিরোনাম হয়েছে। ১৯৯৮ সালের দুই কৃষ্ণসার হরিণ হত্যা মামলা থেকে সালমান রেহাই পেলেও, লরেন্স বিষ্ণোইয়ের কালো তালিকায় বহুদিন ধরেই আছেন তিনি। তার গোষ্ঠী কিছুদিন আগেই সালমানকে হত্যার হুমকি দিয়েছিলো।
পুলিশ বলছে, দাউদ ইব্রাহিম, ছোটা রাজন ও রবি পূজারীর নেতৃত্বে মুম্বাইয়ের আন্ডারওয়ার্ল্ড গ্যাং, যারা গত দেড় দশক ধরে নিষ্ক্রিয় রয়েছে, তাদের শূন্যতা পূরণের চেষ্টা করছে বিষ্ণোই গ্যাং। একইসঙ্গে উত্তরের রাজ্য পাঞ্জাব, হরিয়ানা, দিল্লি, রাজস্থান এবং উত্তর প্রদেশেও আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তারা।