অবশেষে পশ্চিমবঙ্গের মানুষের আবেগের কাছে হার স্বীকার করলেন মমতা। আর জি কর ইস্যুতে স্বাস্থ্য ভবন ঘেরাও এর তিন দিন পেড়িয়ে গেলেও দোষীদের শাস্তির আওতায় আনতে না পারা ও আলোচনার মাধ্যমে কোনো সিদ্ধান্তে আসতে ব্যর্থ হওয়ায় হাতজোর করে বাংলার মানুষের কাছে ক্ষমা চাইলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এদিন, বিকেলে পাঁচ দফা দাবি নিয়ে রাজ্য সরকারের সাথে আলোচনা করতে নবান্ন অভিমুখে যাত্রা শুরু করে আন্দোলনরত চিকিৎসকরা। জুনিয়র ডাক্তার ফোরাম শর্ত দেয়, ৩০ জন প্রতিনিধি অংশ নেবে বৈঠকে এবং বৈঠকটি সরাসরি সম্প্রচার করতে হবে। কিন্তু লাইভ স্ট্রিমিং এর শর্তে রাজি হয়নি রাজ্য সরকার। দুই ঘণ্টার স্নায়ু যুদ্ধ শেষে বৈঠক না করেই ফিরে যেতে হয়েছে তাদের।
দীর্ঘসময় অপেক্ষা করার পর জুনিয়র চিকিৎসকদের সাথে আলোচনায় বসতে না পারায় শেষ পর্যন্ত নবান্নে বিশেষ সংবাদ সম্মেলন করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। হাত জোর করে আন্দোলনকারীদের ডাক্তারদের উদ্দেশ্যে বলেন, দেশের মানুষের স্বাস্থ্যসেবার প্রশ্নে চিকিৎসকদের উচিত কর্মক্ষেত্রে ফেরত যাওয়া। আরও বলেন, মানুষ চাইলে পদত্যাগ করতেও রাজি আছেন তিনি। মনে করিয়ে দেন, তিনি রাজপথ থেকেই রাজনীতিতে এসেছেন।
রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, 'রাজ্য সরকারও চায় নির্যাতিতা বিচার পাক। কিন্তু মামলাটি আর রাজ্যের হাতে নেই। যারা নবান্ন পর্যন্ত এসে বৈঠক করলেন না তারা সরকারকে অসম্মান করেছেন। চলমান আন্দোলনের জেরে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে অনেক কুৎসা রটানো হয়েছে। যারা এমনটা করেছে তারা ক্ষমতা চায়, ন্যায়বিচার নিয়ে মাথাব্যথা নেই।'
এদিকে, বৈঠক না হওয়ায় নবান্নের সামনে বসে পড়েন ক্ষুব্ধ জুনিয়র চিকিৎসকেরা। আর, সংবাদ সম্মেলনের পরপরই নবান্ন ছাড়েন মমতা। আগামী ১৭ সেপ্টেম্বর সুপ্রিম কোর্টে মামলার শুনানি হলেও আপাতত রাজ্য সরকারের সামনে বড় চ্যালেঞ্জ আন্দোলনরত চিকিৎসকদের কর্মস্থলে ফেরত পাঠানো। মমতার এমন বক্তব্যের পর আন্দোলনকারীদের কর্মসূচিতে কোনো পরিবর্তন আসবে, নাকি বৈঠক করতে না পারায় বাড়বে ক্ষোভের তেজ- এখন সেদিকেই তাকিয়ে বিশ্ব।