এশিয়া
বিদেশে এখন
0

ভারতের ত্রিপুরার বন্যায় মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩১

ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যে বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলেও মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩১ জনে। বন্যার পানি এখনও বিপজ্জনক অবস্থায় থাকায় এখনও আশ্রয়কেন্দ্রে আছেন এক লাখের বেশি মানুষ। মণিপুরেও অতিরিক্ত বৃষ্টিতে কয়েকটি স্থানে বন্যা দেখা দিয়েছে। টানা দুই দিনের বৃষ্টিপাতে রাস্তাঘাট তলিয়ে গেছে গুজরাটেও। পরিবেশ বিজ্ঞানীরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ভবিষ্যতে এই অঞ্চলে দুর্যোগ আরও বাড়বে।

স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়েছে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্য। ভারতের সেভেন সিস্টার্সের একটি হিসেবে পরিচিত রাজ্যটিতে এরইমধ্যে রেকর্ড বৃষ্টিপাতে বহু হতাহতের পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন প্রায় ১৭ লাখ মানুষ। আগামীকালও (মঙ্গলবার, ২৭ আগস্ট) ভারি বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। তবে বৃষ্টিপাত কমায় তুলে নেয়া হয়েছে লাল সতর্কতা।

বন্যার পানি কমায় বাড়ছে রোগের পানিবাহিত রোগের প্রাদুর্ভাব। লক্ষাধিক মানুষকে আশ্রয় দিতে খোলা হয়েছে পাঁচ শতাধিক আশ্রয়কেন্দ্র। এই বন্যায় রাজ্যের আর্থিক ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে পাঁচ হাজার কোটি রুপিতে। দুর্গতদের উদ্ধার, ত্রাণ আর পুনর্বাসনে রাজ্য সরকার বরাদ্দ দিয়েছে ৪০ কোটি রুপির প্যাকেজ। পরবর্তী নির্দেশনা না দেয়া পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে সব সরকারি, বেসরকারি অফিস আর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।

এদিকে, সেভেন সিস্টার্সের আরেক রাজ্য উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় মণিপুরেও অতিরিক্ত বৃষ্টিপাতে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। ডুবে গেছে গ্রামের পর গ্রাম। স্থানীয়দের সরিয়ে নেয়া হয়েছে আশ্রয়কেন্দ্রে। হিমালয়ের পাদদেশে অবস্থিত এই রাজ্যে নদীর পানি বেড়ে ভেসে গেছে ফসলি জমি ও বসতবাড়ি।

এছাড়াও, ভারতের পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য গুজরাটেও গেলো দু'দিনের অতিবৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে রাস্তাঘাট। আজ (সোমবার, ২৬ আগস্ট) রাজ্যটিতে জারি করা হয়েছে রেড আ্যালার্ট। পরিস্থিতি মোকাবিলায় রাজ্যের জন্য পর্যাপ্ত সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। এর মধ্যেই নিম্নচাপের কারণে ভারি বৃষ্টির সতর্কতা জারি করা হয়েছে দক্ষিণবঙ্গের সব জেলায়।

পরিবেশ বিজ্ঞানীরা বলছেন, খুব অল্পসময়ে অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত, আর দীর্ঘসময় ধরে অনাবৃষ্টি ভারত আর দক্ষিণ এশিয়ার জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। উষ্ণায়নের কারণে জলীয়বাষ্প ঘনীভূত হয়ে বায়ুমণ্ডলেই মজুত হচ্ছে বিপুল পরিমাণ মেঘ, যার নাম দেয়া হয়েছে উড়ন্ত নদী। নদী, সমুদ্রসহ জলাশয় থেকে বাষ্পীভূত বিপুল পরিমাণ পানি বায়ুমন্ডলে থেকে খুব অল্প সময়ে বৃষ্টি হয়ে ভূপৃষ্ঠে পড়ে দেখা দিচ্ছে ভয়াবহ বন্যা। ভারতে উড়ন্ত নদী তৈরি করছে ভারত মহাসাগর। ফলশ্রুতিতে অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত হচ্ছে জুন থেকে সেপ্টেম্বর মৌসুমে।

tech