ঘণ্টায় ১০০ কিলোমিটার বেগে সুপার সাইক্লোন মিগজাউমের আঘাত সেই সোমবারের হলেও ঝড়ের ক্ষত এখনও বয়ে বেড়াচ্ছে দক্ষিণ ভারতের বাসিন্দারা। বন্যাকবলিত চেন্নাই শহরে জনজীবন স্বাভাবিক করতে হিমশিম অবস্থা প্রশাসনের। শহর ও আশপাশের এলাকায় চলছে পানি নিষ্কাশনের চেষ্টা।
অতিবৃষ্টি-বন্যা ফিরিয়ে এনেছে চেন্নাইয়ের ২০১৫ সালের দুঃসহ স্মৃতি, যেবার প্রাণ গিয়েছল ২শ'র বেশি মানুষের। এবার প্রাণহানি তার ১০ ভাগের একভাগও নয়। কিন্তু শিল্পনগরীতে সীমা ছাড়িয়েছে জনদুর্ভোগ। তীব্র জলাবদ্ধতার কারণে নিত্যপণ্যের সরবরাহ নেই বললেই চলে; অনাহার-অর্ধাহারে পিষ্ট বিপুলসংখ্যক মানুষ।
সাধারণ মানুষ বলেন, 'আমরা যে এলাকায় রয়েছি, সেটা পুরোপুরি তলিয়ে গেছে। গত কয়েকদিন ধরেই এখানে বিদ্যুৎ নেই। প্রয়োজনীয় জিনিস পাচ্ছি না। দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে। খাওয়ার পানি নেই। বন্যার পানি সরানোর ব্যবস্থা নিতেও কেউ আসেনি।'
ঝড়ের দাপটে তামিলনাড়ুতে প্রায় দেড় হাজার গাছ শেকড় উপড়ে পড়ে, যেগুলোর মধ্যে ২৫০ এখনও সরানো সম্ভব হয়নি। শহরের দুই প্রধান টার্মিনালে রেলসেবা পুরোপুরি চালু হয়েছে বৃহস্পতিবার। কিন্তু বিরামহীন বৃষ্টির কারণে ত্রাণ সরবরাহ ও উদ্ধারকাজে বিঘ্ন ঘটায় শুক্রবারও চেন্নাইয়ের সব স্কুল-কলেজ বন্ধ রেখেছে তামিলনাড়ু সরকার। রাজ্যে ত্রাণ ও উদ্ধার কার্যক্রমে যোগ দিয়েছে ৯ হাজারের বেশি কর্মকর্তা-কর্মচারী।
তামিলনাড়ু বিধানসভা সদস্য থোল থিরুমাভালাভান জানান, 'কেন্দ্রীয় সরকারের কাছ থেকে শক্তিশালী মোটর এনে পানি সরানোর চেষ্টা চলছে। দ্রুতই পানি নিষ্কাশনের কাজ শেষ হবে এবং সব মরদেহ উদ্ধার সম্ভব হবে বলে আশা করছি।'
তামিলনাড়ুর পর মঙ্গলবার (৫ ডিসেম্বর) অন্ধ্রপ্রদেশে আঘাতের পর শক্তি হারিয়ে গভীর নিম্নচাপে রূপ নেয় মিগজাউম। এর প্রভাবে তামিলনাড়ু-অন্ধ্র প্রদেশসহ কেরালা, পুদুচেরি, লক্ষদ্বীপসহ ভারতের কয়েকটি রাজ্য ও অঞ্চলে আরও কয়েকদিন বৃষ্টি অব্যাহত থাকবে, জানিয়েছে আবহাওয়া বিভাগ।