পৃথিবীর বাস্তুসংস্থান টিকিয়ে রাখতে যে-সব বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে বিশ্বব্যাপী জোর তৎপরতা চালাচ্ছে বিভিন্ন পরিবেশবাদী সংগঠন, সেখানে শত শত বন্যপ্রাণী হত্যা করে মানুষের খাবারের জোগান দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নামিবিয়ার সরকার।
ক্ষুধা সংকট মেটাতে হাতি, জলহস্তী, মহিষ, ইম্পালা, জেব্রাসহ আরও কিছু প্রাণী মেরে ফেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এরমধ্যে রয়েছে ৩ শ' জেব্রা ও ৮৩ হাতি। এরমধ্যেই দেড়শ' বন্যপ্রাণী হত্যা করা হয়েছে মাংসের জন্য।
এই নিয়ে চরম বিতর্কের মুখে পড়ে গেছে নামিবিয়া সরকার। জারি করা হয়েছে জরুরি অবস্থা। যদিও প্রাণী অধিকার বিভিন্ন সংগঠন আর প্রকৃতি প্রেমীরা নড়েচড়ে বসেছেন বিপর্যয়কর এই সিদ্ধান্তে।
তাদের দাবি, খরা আর খাদ্য সংকটের প্রধান কারণ খুঁজে বের করে সমস্যার সমাধান না করে প্রাণিকুল ধ্বংস করার সিদ্ধান্ত পরিবেশ বিপর্যয় ডেকে আনবে। যদিও দেশটির পরিবেশ মন্ত্রণালয় বলছে, সংবিধানে আছে দেশের মানুষের স্বার্থে প্রাকৃতিক সম্পদ ব্যবহার করা যাবে।
বর্তমানে আফ্রিকার দক্ষিণাঞ্চল মোকাবিলায় করছে শত বছরের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ খরার। জাতিসংঘ বলছে, দেশটির খাদ্যের মজুতের ৮৪ শতাংশই ধ্বংস হয়ে গেছে খরার কারণে। অন্তত ২৫ লাখ মানুষ চরম খাদ্য নিরাপত্তায় ভুগছে।
জুলাই থেকে সেপ্টেম্বরে যেই সংকট চরমে পৌঁছায়। বিজ্ঞানীরা বলছেন, সাধারণ সময়ের তুলনায় চলতি বছর ২০ শতাংশ বৃষ্টি কম হয়েছে এই অঞ্চলে।
এই অঞ্চলটি বরাবরই খরাপ্রবণ। তবে জলবায়ুর এল নিনো প্রভাবে সারাবিশ্বে উষ্ণায়ন বাড়ায় এই অঞ্চলে খরা ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। নামিবিয়া, জিম্বাবুয়ে, মালাওয়ি ও জাম্বিয়ায় জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে। বর্তমানে নামিবিয়া বিশ্বে বন্যপ্রাণী দিয়ে স্বয়ংসম্পূর্ণ, দেশটিতে ২৪ হাজারের মতো হাতি রয়েছে। আফ্রিকার দক্ষিণাঞ্চল ২ লাখের বেশি হাতির আবাস।