দেশটির গিজায় অবস্থিত এই প্রতিষ্ঠানে শিল্পবর্জ্যের মাধ্যমে তৈরি হচ্ছে আসবাব। যা সুলভমূল্যে কিনতে পারছেন বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিরা।
প্রথম দেখায় যে কেউই দোকানটিকে ভেবে নেবেন মোটরযানের সারাইখানা। তবে মিশরের এই পুনঃপ্রক্রিয়াজাতকরণ প্রতিষ্ঠান কাজের দিক দিয়ে ভিন্ন। কারণ মোটরযানসহ বিভিন্ন শিল্পবর্জ্য দিয়ে এখানে তৈরি হচ্ছে গাজার বাস্তুহীনদের জন্য বিভিন্ন আসবাবপত্র। গেল বছরের ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হয়েছে হামাস-ইসরাইল যুদ্ধ।
এতে ধ্বংসস্তুপের নগরীতে পরিণত গাজা উপত্যকা। ৪০ হাজারের বেশি নিহতের পাশাপাশি বাস্তুচ্যুত উপত্যকার শতভাগ ফিলিস্তিনি। ১ লাখের বেশি গাজাবাসী আশ্রয় নিয়েছেন প্রতিবেশী মিশরে। এমন বাস্তুচ্যুত গাজাবাসীর আসবাবপত্রের ব্যবস্থা করছেন ইব্রাহিম আবুগেন্দি।
মিশরীয় এই নাগরিক মোটরযানসহ বিভিন্ন শিল্প বর্জ্যের মাধ্যমে তৈরি করছেন খাট, চেয়ার ও টুলসহ বিভিন্ন আসবাবপত্র। এই যেমন খাটের পায়া তৈরিতে ব্যবহার হচ্ছে গাড়ির টায়ার।
ওয়াশিং মেশিনের ইনার ড্রামকে পরিণত করা হয়েছে চুলায়। মানবিক কারণেই নিজের শখের প্রতিষ্ঠানকে মোবিকইয়্যা কোম্পানিতে পরিণত করেছেন মিশরীয় এই উদ্যোক্তা।
গিজার মোবিকইয়্যা কোম্পানির সত্ত্বাধিকারী ইব্রাহিম আবুগেন্দি বলেন, ‘শিল্প বর্জ্যের কারণে অনেকে ঝামেলায় পড়েন। এদিকে আমাদের ভাইদেরও আসবাবপত্র দরকার। তাই এখানে আশ্রয় নেয়া গাজাবাসীর জন্য স্বল্পমূল্যে আসবাবপত্র তৈরি করছি। দিন শেষে আমাদের ভাইদের জন্য মানবিক গল্প তৈরি করতে চাই।’
মিশরে ম্যাট্রেসসহ একটি বিছানা বিক্রি হয় ১০০ ডলারে। আর বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের জন্য এই অর্থ দিচ্ছে কয়েকটি এনজিও। এতে শিল্প বর্জ্যকে পুন:প্রক্রিয়াজাত করে অর্থ পাচ্ছেন ইব্রাহিম ও তার কর্মীরা। অন্যদিকে আসবাবপত্র পাচ্ছেন বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিরা।
ফিলিস্তিনের এক নাগরিক বলেন, ‘মিশরে আসার পর এই বাসা ভাড়া নিলাম। আসবাবপত্রের দাম বেশি হওয়ায় কিনতে পারছিলাম না। সোশ্যাল মিডিয়ায় এই প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন থেকে কিনে ফেললাম। আসবাবগুলো নকশা ও গড়ন সুন্দর।’
স্থাপত্যবিদ্যা নিয়ে পড়াশোনা করা ইব্রাহিম চান শিল্পবর্জ্য দিয়ে একদিন তৈরি করবেন পরিবেশবান্ধব ভবন।