বিশ্ববাণিজ্যের গুরুত্বপূর্ণ রুট লোহিত সাগর থেকে হুতি বিদ্রোহীদের দমনে ব্যস্ত পশ্চিমারা। এই সুযোগে সোমলিয়ান উপকূল আর এর আশপাশের সাগর এলাকায় আবারও ভয়ংকর হয়ে উঠেছে জলদস্যুরা। গত ৩ মাসে দেশটির উপকূলীয় নৌ-রুট থেকে অন্তত ১৫টি জাহাজ ছিনতাই ও নাবিকদের জিম্মি করা হয়। যার সবশেষ শিকার বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আব্দুল্লাহ।
বিশ্বব্যাংকের হিসাবে, ২০০৫ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত অন্তত ১৭৯টি জাহাজ ছিনতাই করে সোমালিয়ার কুখ্যাত জলদস্যুরা। আর এই সময়ে মুক্তিপণ বাবদ আয় হয় ৪০ কোটি মার্কিন ডলারের বেশি। এমনকি যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থা ওশেন বিয়ন্ড পাইরেসি তাদের প্রতিবেদনে দাবি করছে, জলপথে দস্যুতার কারণে বছরে বিশ্বে ক্ষতি হয় অন্তত ৭০ থেকে ১ হাজার ২০০ কোটি ডলার।
কিন্তু আন্তর্জাতিক নৌ-নিরাপত্তাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে জলদস্যুতাকে কীভাবে দেশের অর্থনৈতিক চালিকাশক্তিতে রূপ দিল সোমালিয়ার সাধারণ জেলেরা? এমন প্রশ্নের উত্তরে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। যেখানে দেখা যায়, শুরুতে জাহাজ জিম্মিতে কিছু অস্ত্র ও মাছ ধরার নৌকা ব্যবহার করা হলেও, পরবর্তীতে মুক্তিপণ থেকে অর্থ অর্জনের গতি বাড়াতে স্পিডবোট, ট্র্যাকিং ডিভাইস ও শক্তিশালী অস্ত্র ব্যবহার করে দলকে আধুনিকায়ন করতে শুরু করে জলদস্যুরা।
আক্রমণ চলে মূলত রাত কিংবা ভোরের সময়টায়। পরে জাহাজ নিয়ন্ত্রণে নিয়ে মুক্তিপণের জন্য আটকে রাখা হয় সোমালিয়ান উপকূলে। বিচিত্র সব কৌশলে দস্যুরা আদায় করে নেয় এই অর্থ।
অভিযোগ রয়েছে, বিশাল মুনাফার কারণে সোমালিয়ার অনেক যুদ্ধবাজ গোত্রের নেতারাই সুসংগঠিত উপায়ে শুরু করেছে জলদস্যুতা। কোনো উপায় না পেয়ে দস্যুদের দলে নাম লেখাচ্ছে দরিদ্র জেলেরা। জাহাজ আক্রমণকারী দস্যুরা লুটের অর্থের সামান্য ভাগ পেলেও বেশিরভাগ অর্থই চলে যায় পর্দার আড়ালে থাকা চক্রের মূলহোতার পকেটে।