সময় যতই গড়াচ্ছে অস্ট্রেলিয়ার বন্ডাই ট্রাজেডির হামলাকারীদের নিয়ে বেরিয়ে আসছে চাঞ্চল্যকর সব তথ্য।
সৈকতে যাওয়ার কয়েক আগে হামলাকারী বাবা-ছেলে উঠেছিলেন ক্যাম্পসি শহরের ছোট ইটের ঘরে। রোববার হামলার কয়েক মুহূর্ত আগে ঐ ঠিকানা থেকেই বাড়িতে টেলিফোন করেন ২৪ বছর বয়সী নাভিদ। মাকে বলেন, মাছ ধরা, সমুদ্রে সাঁতার কাটা আর স্কুবা ডাইভিং এর জন্য এসেছেন সৈকতে। তবে অনেক গরম থাকায় আর ঘর থেকে বের হবেন না।
এরপরই ১০৩ ব্রাইটন অ্যাভিনিউ ধরে বন্ডাই সৈকতের দিকে হাঁটতে শুরু করে নাভিদ ও তার বাবা সাজিদ। কিছুক্ষণ পর ধূসর হ্যাচব্যাগ গাড়িতে চড়েন তারা। সিসিটিভি ফুটেজ ও ফোনকল বিশ্লেষণ করে এই তথ্য সামনে এনেছে স্থানীয় গণমাধ্যম নাইন নিউজ।
ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে সময় নেন ৪০ মিনিট। আর বন্ডাই সৈকতে এলোপাথাড়ি গুলির শব্দ পাওয়া যায় এর ৯০ মিনিটের মধ্যেই।
আরও পড়ুন:
বন্ডাই সৈকতে মর্মান্তিক হামলার পর এই বাবা-ছেলের পরিচয় প্রকাশ করেছে নিউ সাউথ ওয়েলস পুলিশ। ২৪ বছর বয়সী নাভিদ মূলত রাজমিস্ত্রির কাজ করলেও এখন বেকার আর ৫০ বয়সী সাজিদ ছিলেন ফল বিক্রেতা। এরমধ্যে সাজিদের আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স ছিল এবং তিনি মোট ৬টি অস্ত্রের মালিক। ছিলেন একটি গানক্লাবের সদস্য।
পরে, অস্ট্রেলিয়ার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নিশ্চিত করে, ১৯৯৮ সালে শিক্ষা ভিসায় অস্ট্রেলিয়ায় আসেন সাজিদ। ২০০১ সালে একে পার্টনার ভিসায় পরিবর্তন করেন, এবং বিদেশ ভ্রমণের পর তিনবার রেসিডেন্ট রিটার্ন ভিসা পেয়েছেন তিনি। আর, ছেলে নাভিদের জন্ম অস্ট্রেলিয়াতেই।
তবে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থার বরাতে সিবিএস নিউজের দাবি, সাজিদের জন্ম পাকিস্তানে। আর ছেলে নাভিদ পাকিস্তানী বংশোদ্ভূত অস্ট্রেলীয় নাগরিক। বাপ-ছেলের সঙ্গে পাকিস্তানের যোগসূত্র নিয়ে একাধিক সংবাদ প্রকাশ পেয়েছে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে। এরসঙ্গে হামলার কোনো সম্পৃক্ততা আছে কী না তা কোথাও বলা হয়নি।
তবে, দ্য সিডনি মর্নিং হেরাল্ড পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনে দাবি করা হচ্ছে, হামলাকারী ঐ বাবা-ছেলের গাড়িতে পাওয়া গেছে নিষিদ্ধ সন্ত্রাসী সংগঠন ইসলামিক স্টেটের পতাকা। আরও উদ্ধার করা হয়েছে একটি পাইপ বোমা। বন্ডাই সৈকতে হানুক্কা উৎসব উদযাপনে ব্যস্ত ইহুদিদের ওপর এই হামলার সঙ্গে জাতিগত বিদ্বেষের কোনো সম্পর্ক আছে কী না তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। এছাড়া ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ৪টি আগ্নেয়াস্ত্র।
হামলার পর ঘটনাস্থলে গুলিবিদ্ধ নাভিদের ছবি দেখে ছেলেকে শনাক্ত করতে পারেননি তার মা। সিডনি মর্নিং হেরাল্ডকে বলেছেন, তার ছেলে এমন কাজ করতে পারে বলে বিশ্বাস করেন না তিনি। আর স্কুলের সহপাঠীদের বক্তব্য নাভিদ কারোর সঙ্গে তেমন মেলামেশা করত না।





