গেল অক্টোবরের শেষে সুদানের আল ফাশের শহরের দখল নিতে গিয়ে নারকীয় হত্যাকাণ্ড চালায় আধাসামরিক বাহিনী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস। গণধর্ষণ, লুটপাট এমনকি জীবন্ত মানুষকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করে তারা। সেই রক্তের দাগ শুকানোর আগেই এবার আরএসএফের নজর দক্ষিণ করদোফান শহরেও ওপর।
দুই সপ্তাহ আগে করদোফানের উত্তরাঞ্চল পুনরুদ্ধার করতে শুরু করে সুদানের সেনাবাহিনী। পিছু হটতে বাধ্য হয় আরএসএফ। তবে পাল্টা হামলার জন্য মুখিয়ে ছিল তারা।
নভেম্বরে ৩ মাসের মানবিক যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হলেও গেল বৃহস্পতিবার থেকে আবারও আগ্রাসী ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে আরএসএফ। দক্ষিণ করদোফানের কিন্ডারগার্টেন, হাসপাতাল ও ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় ড্রোন হামলা চালিয়ে বহু বেসামরিক নাগরিককে হত্যা করছে আধাসামরিক এ বাহিনীটি। নিহতদের বেশিরভাগ শিশু বলে নিশ্চিত করেছে সুদান কর্তৃপক্ষ। ইউনিসেফ বলছে, নিহত শিশুদের অনেকেরই বয়স ৫-৭ বছরের মধ্যে।
শিশুদের লক্ষ্য করে চালানো এ বর্বর হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে ইউনিসেফ। আন্তর্জাতিক শিশু অধিকার আইনে এ হামলার তদন্তের দাবি সংস্থাটির। আর জাতিসংঘ বলছে, চলমান এ হামলা বন্ধ না হলে, আরেকটি আল ফাশারে পরিণত হবে করদোফান। যেখানে এক সপ্তাহের ব্যবধানে প্রায় ২ হাজার মানুষের রক্তপাত দেখেছে বিশ্ববাসী।
আরও পড়ুন:
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার ভলকার তুর্ক বলেন, ‘করদোফানে বিভিন্ন অঞ্চলে তীব্র লড়াই শুরুর প্রেক্ষাপটে সুদানে আরেক দফা নৃশংসতা ঘটার আশঙ্কা শুরু হয়েছে। আমরা করদোফোনকে আরেকটি আল ফাশের হতে দিতে পারি না। ২৫ অক্টোবর আরএসএফ যখন উত্তর কারদোফোনের একটি শহর দখল করে তখন দুই শতাধিক বেসামরিক মানুষের প্রাণহানির খবর নথিভুক্ত করেছি আমরা।’
এদিকে, নভেম্বরের যুদ্ধবিরতি টিকিয়ে রাখার বদলে অঞ্চল দখল-বেদখলের পথে হাঁটায় সুদানের সেনাবাহিনী ও আধাসামরিক আরএসএফের ওপর বিস্তৃত পরিসরে নিষেধাজ্ঞা আরোপের হুঁশিয়ারি দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। আর ট্রাম্পের প্রতিনিধি দুই পক্ষের মধ্যে একটি শান্তি চুক্তি করতে ব্যর্থ হওয়ায় মধ্যস্থতাকারী হিসেবে একটি বৈঠকের প্রস্তুতি নিচ্ছে নরওয়ে।
কয়েক সপ্তাহ ধরে করদোফানের উত্তর, পশ্চিম এবং দক্ষিণ অংশে তীব্র লড়াই চলছে সেনাবাহিনী ও আরএসএফের মধ্যে। দেশটির ১৮টি প্রদেশের মধ্যে শুধু দারফুরের ৫টি অঞ্চল নিয়ন্ত্রণ করছে আরএসএফ। উত্তরের কিছু অংশ এখনও বাগে আনতে পারেনি তারা। অন্যদিকে সুদানের দক্ষিণ, উত্তর, পূর্ব ও কেন্দ্রের বাকি ১৩টি প্রদেশের বেশিরভাগ এলাকার নিয়ন্ত্রণ সেনাবাহিনীর, যার মধ্যে রাজধানী খার্তুমও আছে।





