ডাম্পিং পয়েন্টে প্রবেশাধিকার মিলছে না ফিলিস্তিনিদের, তাবুতে মানবেতর দিন কাটাচ্ছেন বাস্তুচ্যুতরা

তাবুতে ফিলিস্তিনিদের জীবনযাপন
তাবুতে ফিলিস্তিনিদের জীবনযাপন | ছবি: সংগৃহীত
0

আবর্জনার স্তূপ ও পয়ঃনিস্কাশন ব্যবস্থা ভেঙে পড়ায় মানবেতর দিন কাটাচ্ছে গাজার তাবুতে আশ্রয় নেয়া বাস্তুচ্যুতরা। বিষাক্ত বাতাস, দুর্গন্ধ ও মশা-মাছির উপদ্রবে পানিবাহিত নানা রোগ বাড়ছে প্রতিনিয়ত। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সীমিত লোকবল ও যন্ত্রপাতি নিয়ে বিপুল সংখ্যক ময়লা অপসারণে বেগ পেতে হচ্ছে তাদের। এদিকে, যুদ্ধবিরতির পরও গাজার কয়েকটি ডাম্পিং পয়েন্টে প্রবেশাধিকার মিলছে না ফিলিস্তিনিদের।

এভাবেই যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজার বিভিন্ন অংশে জমে থাকা পানি ও ময়লার স্তূপ থেকে জন্ম নিচ্ছে মাছি ও মশা। দুই বছর ধরে টানা ইসরাইলি বোমাবর্ষণের ফলে উপত্যকাটির বিভিন্ন অংশে পড়ে থাকা ছেঁড়া জামাকাপড় ও প্লাস্টিক, চারপাশের বাতাসকে করে তুলেছে বিষাক্ত। এছাড়া, পুরোপুরি ভেঙে পড়েছে পয়ঃনিষ্কাশন কার্যক্রম। বর্জ্যের বিপুল স্তূপের কারণে তা অপসারণে হিমশিম খেতে হচ্ছে পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের

এদিকে যুদ্ধবিরতি কার্যকরের পরও, ইসরাইলি বাহিনী বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষকে ডাম্পিং স্টেশনগুলোতে প্রবেশে বাঁধা দিচ্ছে। অন্যদিকে, যুদ্ধের সময় অনেক পরিচ্ছন্নতা কর্মীকেও হত্যা করে ইসরাইলি সেনাবাহিনী। সবকিছু মিলিয়ে ধীরগতিতে চলছে বর্জ্য অপসারণ কার্যক্রম। যার খেসারত দিচ্ছে ভিটেমাটি হারিয়ে তাবুতে ঠাই নেয়া বাস্তুচ্যুত মানুষেরা। দুর্গন্ধ আর পানিবাহিত নানা রোগে মানবেতর দিন কাটছে তাদের।

আরও পড়ুন:

স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, দুর্গন্ধের কারণে ঘুমাতে পারি না। বাচ্চারা সকালে ঘুম থেকে উঠে কাশি দেয়। শ্বাসকষ্ট অনুভব করে। প্রতিদিনই পরিবারের কোনো না কোনো সদস্য জ্বর, টাইফয়েড ও কলেরার মতো পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। এই সপ্তাহে বাচ্চাকে পাঁচবার হাসপাতালে নিয়ে গেছি। ডাক্তার বলেছে, আবর্জনা থেকে ছড়ানো ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়া থেকে এ রোগ ছড়িয়েছে। আবর্জনার কারণে দিনরাত পোকামাকড় ছড়াচ্ছে। শিশুরা প্রতিনিয়ত কষ্ট পাচ্ছে। কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই। বাধ্য হয়ে এখানে আছি।

জমে থাকা আবর্জনার কারণে গাজার হাসপাতালগুলোতে রোগীর সংখ্যা বাড়ছে বলে জানিয়েছে চিকিৎসকরা।

চিকিৎসকরা জানান, বেশিরভাগ তাবু ময়লা-আবর্জনার পাশে হওয়ায় চর্মরোগ ছড়িয়ে পড়ছে। এছাড়া সবসময় মশা-মাছির উপস্থিতির কারণে ব্যাকটেরিয়াজনিত রোগও চারপাশে ছড়াচ্ছে। যার একটি ইমপেটিগো।।

এদিকে গাজার বর্জ্য অপসারণ ও ধ্বংসস্তূপ সরাতে আরও উন্নতি প্রযুক্তি প্রয়োজন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের উন্নয়ন সংস্থা ইউএনডিপি।

ইউএনডিপি গাজা অফিসের প্রধান আলেসান্দ্রো ম্রাকিক বলেন, তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ গ্রহণ প্রয়োজন। পর্যাপ্ত যন্ত্রপাতি, সরঞ্জামাদির প্রবেশাধিকার পেলে আমরা মাঠ পর্যায়ে সঠিকভাবে কাজ সম্পাদন করতে পারব। পাশাপাশি, বর্জ্য থেকে শক্তিতে রূপান্তর করার নতুন প্রযুক্তির দিকে আমরা নজর দিচ্ছি।

গাজাজুড়ে প্রায় ২০ লাখ টন অপরিশোধিত বর্জ্য অপসারণে কাজ করছে ইউএনডিপি।

যুদ্ধের আগে গাজার বর্জ্য অপসারণের জন্য ইসরাইলি সীমান্তে তিনটি ডাম্পিং স্টেশন ছিলো। কিন্তু এগুলোতে বর্তমানে কোনো প্রবেশাধিকার পাচ্ছে না ফিলিস্তিনিরা ।

ইএ