এবার প্রথমবারের মতো সম্মেলন হবে আমাজনের বনে। আমাজন পৃথিবীর বৃহত্তম বন এবং গুরুত্বপূর্ণ কার্বন সিল্ক। প্রকৃতি রক্ষা মানেই মানবতার রক্ষা। তবে সম্মেলনের আগে নানা সমস্যা, আকাশচুম্বী হোটেল ভাড়া, মানবাধিকার সংকট ও জীবাশ্ম জ্বালানি লবিস্টদের অধিক্যের উদ্বেগ কপ-৩০ এর আলোতে ছায়া ফেলছে। এর আগে আমাজন বন কেটে রাস্তা তৈরি নিয়ে বিতর্কও ছড়িয়েছে। কপ-৩০ ঘিরে ২৮ অক্টোবর রিও ডি জেনিরোর নিম্ন আয়ের এলাকায় পুলিশের অভিযানে অন্তত ১২১ জন নিহত হয়েছেন। অধিকাংশই কালো সম্প্রদায়ের বাসিন্দা।
প্রায় ৫০ হাজার প্রতিনিধি অংশ নিতে চললেও বেলেমের হোটেল সীমিত। শহরে মাত্র ১৮ হাজার হোটেল বেড থাকায় রাতের ভাড়া অনেক বেড়েছে। অনেক দেশ ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি ঠিকমত জায়গা জোগাতে পারছেন না।
ব্রাজিল সরকার উন্নয়নশীল ও গরীব দেশগুলোর প্রতিনিধিদের জন্য ক্রুজ জাহাজে বিনামূল্যে কেবিনের ব্যবস্থা করেছে। তবে সমালোচকরা বলছেন, এটি বৈশ্বিক জলবায়ু আলোচনায় চলমান বৈষম্যকে আরও স্পষ্ট করে। কপ-৩০ এ অংশগ্রহণ কখনোই ধন-সম্পদের ওপর নির্ভর করতে পারবে না।
সম্প্রতি আমাজন নদীর কাছে নতুন তেল খননের অনুমোদন কপ-৩০ এর আগে বিতর্ক সৃষ্টি করেছে। রাষ্ট্রায়ত্ত তেল কোম্পানি পেট্রোবাস প্রকল্পটি চালাচ্ছে। পরিবেশবাদীরা সতর্ক করেছেন, এটি সংবেদনশীল বাস্তুতন্ত্র এবং আদিবাসী সম্প্রদায়ের জীবন বিপন্ন করতে পারে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এটি ব্রাজিলের জলবায়ু নেতৃত্বের ভাবমূর্তিকে ক্ষুণ্ণ করতে পারে। এক জরিপে দেখা গেছে, ব্রাজিলের ৬১ শতাংশ মানুষ তেল খননের বিরোধিতা করছে, যেখানে ১৬–২৪ বছর বয়সী যুবকের মধ্যে বিরোধিতা সবচেয়ে বেশি।
পরিবেশের পাশাপাশি মানবাধিকারও কপ-৩০ এর বড় উদ্বেগ। হিউম্যান রাইটস ওয়াচ জানিয়েছে, ২৮ অক্টোবর রিও ডি জেনিরোর নিম্ন আয়ের এলাকায় পুলিশের অভিযানে অন্তত ১২১ জন নিহত হয়েছেন। অধিকাংশই কালো সম্প্রদায়ের বাসিন্দা।
পুলিশ অপরাধস্থল সংরক্ষণ করেনি এবং ফরেনসিক বিশ্লেষণও করেনি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সামাজিক বৈষম্য, বর্ণবৈষম্য ও রাষ্ট্রীয় সহিংসতা জলবায়ু ন্যায়বিচারের সঙ্গে গভীরভাবে যুক্ত।
জাতিসংঘ জলবায়ু ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন (ইউএনএফসিসি) নির্বাহী সচিব সাইমন স্টিয়েল বলেছেন, দেশগুলো যা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ তা পর্যাপ্ত নয়। এনডিসি পূর্ণ বাস্তবায়ন হলেও ২০৩৫ সাল পর্যন্ত বিশ্বব্যাপী নির্গমন মাত্র ১০ শতাংশ কমবে। এটি ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে সীমিত করার জন্য প্রয়োজনীয় ৬০ শতাংশের অনেক কম।





