অবৈধ মাদক নেতা অ্যাখা দিয়ে কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্টের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা

নিষেধাজ্ঞার প্রতিবাদে কলম্বিয়ার জনসাধারণের অবস্থান | ছবি: এখন টিভি
0

অব্যাহত মাদকবিরোধী অভিযানের মধ্যেই দক্ষিণ আমেরিকায় সামরিক শক্তি আরও জোরদার করলো যুক্তরাষ্ট্র। নতুন করে সেখানে একটি বিমানবাহী রণতরী ও ৫টি যুদ্ধজাহাজ মোতায়েনের ঘোষণা দিয়েছেন মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী। এদিকে পুতিন, মাদুরোর পর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার তালিকায় যোগ হলো কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্টের নাম। নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে তার পরিবারের সদস্যদের ওপরও।

ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের পর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার অধীনে থাকা বিশ্ব নেতাদের তালিকায় যুক্ত হলো কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট গুস্তাভো পেট্রোর নাম।

শুধু পেট্রো নয়, তার স্ত্রী,পুত্র এবং কলম্বিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরমান্দো বেনেদেত্তিও মার্কিন নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়লো। যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধ মাদক ব্যবসায় অনুমতি দেয়ার অভিযোগে ট্রাম্পের রোষানলে পড়েছেন তারা।

নিজের মালিকানাধীন সামাজিক মাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে দেয়া এক পোস্টে পেট্রোকে অবৈধ মাদক নেতা অ্যাখা দিয়ে ট্রাম্প বলেন, ‘অবৈধ মাদক চোরাচালান বন্ধের পরিবর্তে পেট্রো কলম্বিয়াজুড়ে ব্যাপক পরিসরে মাদক উৎপাদনকে উৎসাহিত করে আসছে।’

তবে, ট্রাম্পের এমন অভিযোগ অস্বীকার করেছেন কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট। সামাজিক মাধ্যম এক্সে দেয়া এক পোস্টে তিনি বলেন, কয়েক দশক ধরে তিনি মাদকবিরোধী সংগ্রাম করছেন। ট্রাম্পের অভিযোগের বিষয়ে আইনি পদক্ষেপ নেয়ার ইঙ্গিত দেন। নিজের পক্ষে একজন মার্কিন আইনজীবী নিয়োগ করার কথাও জানান পেট্রো।

প্রেসিডেন্টের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়ার প্রতিবাদ জানিয়েছে কলম্বিয়ার সাধারণ মানুষ। দেশটির রাজধানী বোগোটার বলিভার স্কয়ারে হাজার হাজার কলম্বিয়ান পেট্রোকে সমর্থন জানাতে সমাবেশ করে। এ সময় কলম্বিয়ার পতাকা এবং পেট্রো মাদক পাচারকারী নয় লেখা ব্যানার হাতে দেখা যায় পেট্রো সমর্থকদের।

আরও পড়ুন:

মার্কিন নিষেধাজ্ঞা আরোপের এক সপ্তাহ আগে সংবিধান সংস্কার প্রচেষ্টাকে সমর্থন করার জন্য ডাকা একটি সমাবেশে পেট্রো জানান, কলম্বিয়ার বিরোধী রাজনীতিবিদ এবং ব্যবসায়ীরা তার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপের জন্য মার্কিন সমর্থন চান।

কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট গুস্তাভো পেট্রো বলেন, ‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কলম্বিয়ায় মাফিয়াদের মিত্র হিসেবে বেছে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে এবং যারা মাফিয়াদের ওপর আক্রমণ করেছে তাদের উপর আক্রমণ করেছে। যাতে উত্তর আমেরিকান সমাজ এত বেশি পরিমাণে কোকেন খাওয়া বন্ধ করে দেয়’।

এ ঘটনার পর এক সপ্তাহ পার হওয়ার আগের পরিবারসহ নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়লেন পেট্রো। এদিকে শুধু কলম্বিয়া নয়, ক্যারিবিয়ান সাগরে মাদকবিরোধী অভিযানের অংশ হিসেবে নিয়মিত ভেনেজুয়েলার জাহাজগুলোকে টার্গেট করছে ট্রাম্প প্রশাসন। গেল সেপ্টেম্বর থেকে ক্যারিবীয় অঞ্চলে এ অভিযান শুরু করে মার্কিন সেনাবাহিনী। এখন পর্যন্ত চালানো ১০টি অভিযানে মাদক কারবারি সন্দেহে নিহত হয়েছে অন্তত ৪০ জন।

তবে শুধু মাদক বিরোধী অভিযানই নয়, ভেনেজুয়েলায় সরকার উৎখাতের চেষ্টার মধ্যে অঞ্চলটিতে নিজের সামরিক উপস্থিতি আরও জোরদার করছে ওয়াশিংটন। এরইমধ্যে লাতিন আমেরিকায় বিমানবাহী রণতরী ইউএসএস জেরাল্ড আর ফোর্ড ও পাঁচটি ডেস্ট্রয়ার যুদ্ধজাহাজ মোতায়েনের নির্দেশ দিয়েছেন মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ।

ওই অঞ্চলে এরইমধ্যে আটটি যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন করেছে যুক্তরাষ্ট্র। রয়েছে ছয় হাজার নাবিক ও মেরিন সেনা। নতুন এ বহরে ইউএসএস জেরাল্ড আর ফোর্ড ও পাঁচটি ডেস্ট্রয়ারের সঙ্গে যুক্ত হবে অতিরিক্ত সাড়ে চার হাজার কর্মী।

এফএস