গাজা উপত্যকায় যুদ্ধবিরতি পর্যবেক্ষণে ড্রোন ব্যবহার করছে যুক্তরাষ্ট্র। নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এ তথ্য। ওয়াশিংটনের এমন তদারকির খবরের মধ্যেও গাজার মানুষের দুর্ভোগ যেন কমছে না কিছুতেই।
উপত্যকার ১৫ লাখ মানুষের সাহায্যের প্রয়োজন বলে তথ্য দিয়েছে জাতিসংঘ। কিন্তু হামাসের সঙ্গে প্রথম পর্যায়ের যুদ্ধবিরতি সত্ত্বেও ইসরাইল সীমান্ত পর্যাপ্ত ত্রাণ ঢুকতে না দেয়ায় এবং সব সীমান্ত না খোলার কারণে এখনও খাদ্য সংকট চরম পর্যায়ে আছে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।
ইসরাইলি আগ্রাসনে ধ্বংসস্তুপে রূপ নেয়া নগরীতে সুপেয় পানি, খাবার ও জ্বালানি পেতে অমানবিক জীবন সংগ্রাম চালিয়ে যেতে হচ্ছে ফিলিস্তিনিদের। নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের সরবরাহ ঘাটতিতে গাজায় থাকা জাতিসংঘসহ অন্যান্য বেকারিগুলোর স্বাভাবিক কার্যক্রম বন্ধের পথে।
গাজাবাসীদের একজন বলেন, ‘উত্তর গাজার একটি মাত্র বেকারি রয়েছে, সেখানে আমরাই রুটি তৈরি করে বিক্রি করি। কিন্তু নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের সরবরাহ সীমিত থাকায় খাদ্য সংকট পরিস্থিতি থেকে রক্ষার কোনো লক্ষণ দেখতে পাচ্ছি না।’
গাজার আরেক ব্যক্তি বলেন, ‘প্রায় পাঁচ কিলোমিটার হেঁটে ১৫টি রুটি কিনতে হয়েছে। কিন্তু এটি পরিবারের জন্য যথেষ্ট নয়। আমরা আশা করি সব সীমান্ত খুলে দেয়া হবে। ফলে বেকারিগুলো পর্যাপ্ত রুটি তৈরি করতে পারবে। আমরাও পর্যাপ্ত রুটি পাবো। গাজাবাসী স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারবে।’
আরও পড়ুন:
ইসরাইলি আগ্রাসনে ৮৩ শতাংশ ভবন ধ্বংস হওয়ায় ৬১ মিলিয়ন টনেরও বেশি ধ্বংসস্তূপের নিচে গাজা ভূখণ্ড চাপা পড়ে আছে বলে তথ্য তুলে ধরেছে জাতিসংঘ। যা নিউইয়র্কের বিখ্যাত এম্পায়ার স্টেট বিল্ডিংয়ের ওজনের প্রায় ১৭০ গুণ। এমন পরিস্থিতিতে শীতের আগেই বাস্তুচ্যুত মানুষদের নিরাপদ আশ্রয়স্থল এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সরবরাহ নিশ্চিতের ব্যবস্থা করতে আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা।
এদিকে যুদ্ধবিরতি তদারকির জন্য গাজায় দ্রুত একটি আন্তর্জাতিক বাহিনী গঠন করার আশা প্রকাশ করেছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। গত শুক্রবার ইসরাইল সফরকালে তিনি এ কথা বলেছেন। তবে তুরস্কের অংশগ্রহণ নিয়ে আপত্তি তুলেছে ইসরাইল। এমন পরিস্থিতিতে মার্কো রুবিও বলেছেন, ইসরাইল যাতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে এমন দেশকে আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা বাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত করা হবে।
যুক্তরাষ্ট্র পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বলেন, ‘আমরা এখনও বাহিনীটিকে অবহিত করিনি। এটি নিয়ে কার্যক্রম এখনও চলমান। অনেক দেশকে প্রস্তাব দেয়া হচ্ছে। স্পষ্টতই, যখন এ বাহিনী তৈরি করা হচ্ছে, তখন এমন লোক থাকতে হবে যাদের সঙ্গে ইসরাইল স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করবে। অথবা দেশগুলো ইসরাইলকে নিয়ে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করবে’।
দুই বছরের ইসরাইলি আগ্রাসনে গাজায় ৬৮হাজার ২০০ বেশি ফিলিস্তিনির প্রাণ গেছে। গাজায় যুদ্ধবিরতির মধ্যে অধিকৃত পশ্চিমতীরে দখলদারিত্ব অভিযানও বাড়িয়েছে ইসরাইল। তবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, পশ্চিমতীরকে ইসরাইলের অংশ করতে দেবেন না তিনি।





