গাজায় যুদ্ধবিরতির সম্ভাবনা, কিন্তু স্থায়িত্ব নিয়ে শঙ্কা বিশ্লেষকদের

যুদ্ধ বিরতির প্রথম ধাপে সম্মত হামাস ও ইসরাইল
যুদ্ধ বিরতির প্রথম ধাপে সম্মত হামাস ও ইসরাইল | ছবি: সংগৃহীত
0

আপাতত গাজায় জিম্মি ও বন্দিবিনিময়ের মধ্য দিয়ে যুদ্ধবিরতির সম্ভাবনা দেখা দিলেও তা কতদিন পর্যন্ত কার্যকর থাকবে-এ নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করছেন মধ্যপ্রাচ্য বিশ্লেষকরা। আর ইসরাইলি বিশ্লেষকদের দাবি, গাজায় দীর্ঘস্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হামাসকে নিরস্ত্রীকরণ করা। তারা বলছেন, ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী এই সংগঠনকে নিরস্ত্রীকরণ সম্পর্কে এখনও মেলেনি কোনো সমাধান সূত্র; যা ট্রাম্পের গাজা পরিকল্পনার অন্যতম প্রধান বিষয়।

গাজায় যুদ্ধ বন্ধে কার্যকর হয়েছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শান্তি প্রস্তাব। নোবেল শান্তি পুরস্কার ঘোষণার ঠিক আগের দিন এমন ঘোষণা আসায়-এর গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে নানা মহলে। ট্রাম্পের প্রস্তাব অনুযায়ী, প্রথম ধাপে সব জিম্মিদের মুক্তি দেবে ইসরাইল, বিনিময়ে ফিলিস্তিনি বন্দিদের রেহাই করবে হামাস। এর আগে দুইবার কার্যকর হয়ে ভেস্তে যাওয়া যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবেও জিম্মি আর বন্দিবিনিময় করেছে উভয়পক্ষ।

ট্রাম্পের এই প্রস্তাবের আলাদা দিক হচ্ছে, হামাস সব জিম্মিদের মুক্তি দেয়ার পর সুনির্দিষ্ট লাইন থেকে সেনা প্রত্যাহার করবে ইসরাইল। এটাই হবে গাজায় দীর্ঘমেয়াদি শান্তি প্রতিষ্ঠার প্রথম ধাপ। তবে বিশ্লেষকরা মনে করেন, গাজার শান্তি পরিকল্পনায় এখনো কিছু অস্পষ্টতা রয়েছে। বিশেষ করে যুদ্ধবিরতি ও জিম্মি বিনিময় পরিকল্পনা-ট্রাম্পের ২০ দফা শান্তি প্রস্তাবের শুধুমাত্র একটি অংশকে অন্তর্ভুক্ত করে। বাকি ১৯টি পয়েন্ট কোন প্রক্রিয়ায় বাস্তবায়িত হবে-এ নিয়ে নেই কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্য।

আরও পড়ুন:

এমন প্রেক্ষাপটে এই যুদ্ধবিরতি কী কী কারণে ভেস্তে যেতে পারে এ নিয়ে চলছে নানা বিশ্লেষণ। ইসরাইলি বিশেষজ্ঞদের একটি বড় অংশ মনে করে, ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাসকে কীভাবে নিরস্ত্রীকরণ করা হবে এমন কোনো ধারণা দিতে পারেননি মার্কিন প্রেসিডেন্ট। আর হামাস যেখানে স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার আগ পর্যন্ত অস্ত্র ত্যাগ করতে অসম্মতি জানিয়েছে, সেখানে এই অস্ত্রবিরতি কতদিন কার্যকর থাকবে সে প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে।

এরপরে আছে, ভবিষ্যৎ গাজার শাসনভার নিয়ে অস্পষ্টতা। ট্রাম্পের ২০ দফা পরিকল্পনায় বলা হয়েছে, গাজা উপত্যকার ভবিষ্যৎ প্রশাসনে কোনো ভূমিকায় থাকবে না হামাস। প্রস্তাব অনুযায়ী, অন্তর্বর্তী সময়ে অঞ্চলটি পরিচালনা করবে একটি 'ট্যাকনোক্রেট, অরাজনৈতিক ফিলিস্তিনি কমিটি', পরবর্তীতে যার দায়িত্ব হস্তান্তর করা হবে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের কাছে। এই কমিটি কারা নির্বাচন করবে আর হামাস তা মেনে নেবে কী না- এমন আশঙ্কা বাদ দিতে পারছেন না বিশ্লেষকরা।

এছাড়াও, সব জিম্মিদের ফেরত পেলে নেতানিয়াহু আবারও যুদ্ধং দেহি মনোভাবে ফেরত যাবেন কী না, হামাস সুর্নির্দিষ্ট যে বন্দিদের মুক্তির দাবি তুলছে তাদের রেহাই পাওয়ার সম্ভাবনা কতখানি কিংবা জীবিত জিম্মিদের শারীরিক অবস্থা নিয়ে ইসরাইল আদৌ সন্তুষ্ট হবে কী না- যুদ্ধবিরতির স্থায়িত্ব বিবেচনায় এসব প্রশ্ন এড়ানোর সুযোগ নেই বলে দাবি বিশ্লেষকদের।

সেজু