প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অভিবাসন বিরোধী অবস্থানে উত্তপ্ত যুক্তরাষ্ট্র। প্রতিবাদ জানাতে প্রায়ই হচ্ছে বিক্ষোভ। বিদেশিদের বিতাড়িত করার দায়িত্বে থাকা মার্কিন অভিবাসন বিষয়ক সংস্থা-আইসের সদস্যদের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটছে বিক্ষুব্ধ অভিবাসীদের।
বিশেষ করে ডেমোক্রেটদের আধিপত্য থাকা অঙ্গরাজ্য ও শহরগুলোতে চলছে অভিবাসন বিরোধী চিরুনি অভিযান। বর্তমানে সবচেয়ে বেশি উত্তেজনা বিরাজ করছে অরেগনের পোর্টল্যান্ড এবং ইলিনয়ের শিকাগো শহরে।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নির্দেশে শিকাগোতে জড়ো হয়েছে ন্যাশনাল গার্ডের শত শত সদস্য। সেনা উপস্থিতি দেখে মনে হবে শহরটিতে যেন যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এরমাঝেই ট্রাম্পের অভ্যুত্থান দমন আইন প্রয়োগের হুমকিতে উদ্বেগ বাড়ছে।
বিক্ষুব্ধ অভিবাসীরা বলেন, ‘আমার মনে হচ্ছে শিকাগোর প্রতিটি পাড়ায় ন্যাশনাল গার্ড সহিংস হয়ে উঠছে। এটা বর্ণবাদী! এটা বর্ণবাদী! প্রেসিডেন্টের এই সিদ্ধান্ত নেয়া কিছুটা হাস্যকর। এটা বিপজ্জনক। কারণ, শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিবাদ জানানোর জন্য আমাদের যে কয়টি পথ আছে তা কেড়ে নেয়া হচ্ছে।’
আরও পড়ুন:
পোর্টল্যান্ডে ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েনে আদালত স্থগিতাদেশ দিলেও; শিকাগোয় অনুমোদন দেয়ায় আইনি লড়াইয়ে নেমেছে ইলিনয়। সেনা মোতায়েনের আদেশকে রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে মনে করছেন ডেমোক্র্যাটরা। এমনকি শিকাগোতে আইস সদস্যদের কর্মকাণ্ডের বৈধতা তদন্ত করা উচিত বলে দাবি তুলেছেন ইলিনয়ের গভর্নর জেবি প্রিটজকার। ট্রাম্পের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে এমন কঠোর অবস্থানের কারণে ইলিনয়ের গভর্নর জেবি প্রিটজকার ২০২৮ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী হতে পারেন বলে সম্ভাবনা তুঙ্গে।
এ অবস্থায় প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প আরও বেশি করে ক্ষোভ ঝাড়বেন বলে শঙ্কা করা হচ্ছে। এরইমধ্যে আইস কর্মকর্তাদের সুরক্ষা দিতে ব্যর্থতার অভিযোগ তুলেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। এর দায়ে ইলিনয়ের গভর্নর জেবি প্রিটজকার এবং শিকাগোর মেয়র ব্র্যান্ডন জনসনকে জেলে পাঠানো উচিত বলে মন্তব্যও করেছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ব্যাপক আপত্তি উপেক্ষা করে শিকাগোতে ন্যাশনাল গার্ডের সেনা পাঠানোর পর ট্রুথ সোশ্যাল দেয়া এক পোস্টে এই মন্তব্য করেন তিনি।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের চালানো এক জরিপেও সেনা মোতায়েনের বিরোধিতা করেছেন বেশিরভাগ মার্কিন নাগরিক। ১০ জনের মধ্যে ৭ জন ডেমোক্র্যাট এবং অর্ধেক রিপাবলিকান মনে করেন, বহিঃশত্রুর হুমকি ছাড়া যে কোনো শহরে সশস্ত্র সেনা মোতায়েন অস্বস্তিকর পরিবেশ সৃষ্টি করে। সব মিলিয়ে ৫৮ শতাংশ জনগণই প্রেসিডেন্ট ট্রাস্পের এই আদেশের বিরোধিতা করেছেন। এমনকি অভিবাসন ইস্যুতে ট্রাম্পের জনপ্রিয়তাও এক শতাংশ কমে ৪০ শতাংশে নেমে এসেছে।





