‘জেন-জি’র বিক্ষোভে শহরগুলোতে হাজারো তরুণ-তরুণী অংশগ্রহণ করেন; যাদের মূল স্লোগান ছিল ‘আমরা বাঁচতে চাই, কেবল জীবিত থাকতে চাই না।’ খবর বিবিসির।
জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধান বলছেন, সরকারী নিরাপত্তা বাহিনী অপ্রয়োজনীয় বল প্রয়োগ করেছে, যা কমপক্ষে ২২ জন নিহত এবং ১০০ জনেরও বেশি আহত হওয়ার ঘটনায় প্রমাণিত। তবে মাদাগাস্কার সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ সংখ্যা প্রত্যাখ্যান করেছে এবং দাবি করেছে যে, এসব তথ্য ‘গুজব বা ভুল তথ্যের ভিত্তিতে’ প্রকাশিত।
বিক্ষোভ মূলত রাজধানী আন্তানানারিভোতে শুরু হলেও এটি দেশটির ৮টি শহরে ছড়িয়ে গেছে। সহিংসতা ও লুটপাটের খবর পাওয়ার পর আন্তানানারিভোতে সন্ধ্যা থেকে ভোর পর্যন্ত কারফিউ জারি করে সরকার। পুলিশ রাবার বুলেট ও টিয়ার গ্যাস ব্যবহার করে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে।
পড়ুন-
জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থার প্রধান ভল্কার টার্ক বলেন, ‘নিরাপত্তা বাহিনী বিক্ষোভ দমন করতে যে অপ্রয়োজনীয় ও অপ্রতুল বল প্রয়োগ করেছে, তা আমাকে ব্যথিত করেছে। আটক সকল বিক্ষোভকারীকে অবিলম্বে মুক্তি দেয়া উচিত।’ তিনি আরও উল্লেখ করেছেন, নিহতদের মধ্যে রয়েছে বিক্ষোভকারী ও সাধারণ পথচারী।
গত সপ্তাহে রাষ্ট্রপতি বিদ্যুৎ মন্ত্রীকে তার দায়িত্বে অবহেলার জন্য বরখাস্ত করেছিলেন। কিন্তু বিক্ষোভকারীরা চান রাষ্ট্রপতি নিজেও পদত্যাগ করুক এবং পুরো সরকারও পদত্যাগ করুক। সোমবারও হাজার হাজার মানুষ রাস্তায় নেমে এ দাবি পুনরায় তুলেছেন।
রাষ্ট্রপতি রাজোএলিনা বলেন, ‘আমি বিদ্যুৎ ও পানি সরবরাহে যে সমস্যাগুলো রয়েছে, তা নিয়ে মানুষের ক্রোধ, দুঃখ ও অসুবিধা বুঝতে পারছি।’ তিনি আরও জানিয়েছেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর ও সরকারের দায়িত্ব শেষ করা হয়েছে’ এবং আগামী তিন দিনের মধ্যে নতুন প্রধানমন্ত্রীর জন্য আবেদন গ্রহণ করা হবে। বর্তমান মন্ত্রীরা অস্থায়ীভাবে দায়িত্ব পালন করবেন, নতুন সরকার গঠিত না হওয়া পর্যন্ত।
রাষ্ট্রপতি তরুণদের সঙ্গে আলোচনা করতে চান। গত সপ্তাহে আন্তানানারিভোর এক বিক্ষোভে একটি ব্যানারে লেখা ছিল, ‘আমরা সমস্যা চাই না, আমরা শুধু আমাদের অধিকার চাই।’ তবে কিছু প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিক্ষোভকারীরা অন্তত দুইজন সংসদ সদস্যের বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। ‘জেন-জি’রা অভিযোগ করেছে, কিছু পেশাদার দুষ্কৃতকারীরা তাদের অভিযুক্ত করতে বিভিন্ন স্থাপনায় লুটপাট চালিয়েছে।
মাদাগাস্কার স্বাধীনতা অর্জনের পর থেকে ১৯৬০ সালে থেকে বিভিন্ন সময়ে দেশ বিপর্যস্ত হয়েছে। এর মধ্যে ২০০৯ সালের গণবিক্ষোভে সাবেক রাষ্ট্রপতি মার্ক রাভালোমানানা পদত্যাগ করতে বাধ্য হন এবং রাজোএলিনা ক্ষমতায় আসেন। এ বিক্ষোভ বর্তমান রাষ্ট্রপতির জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ, যা তার ২০২৩ সালের তৃতীয় পুনঃনির্বাচনের পর থেকে দেখা দিয়েছে।





