রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ: আত্মরক্ষায় সামরিক প্রশিক্ষণ বাধ্যতামূলক করেছে পোল্যান্ড

পোল্যান্ডের সামরিক বাহিনীর সদস্যরা
পোল্যান্ডের সামরিক বাহিনীর সদস্যরা | ছবি: সংগৃহীত
0

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে উদ্বেগে পোল্যান্ড। অনিশ্চিত ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে আত্মরক্ষায় নিজ দেশের নাগরিকদের সামরিক প্রশিক্ষণ বাধ্যতামূলক করেছে দেশটির সরকার। ‘ট্রেইন উইথ দ্য আর্মি’ কর্মসূচির আওতায় অস্ত্র উৎপাদন ও ব্যবহার এবং প্রতিরক্ষা কৌশলের ওপর প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে বাসিন্দাদের।

৩ কোটি ৮০ লাখ জনসংখ্যার দেশ পোল্যান্ড প্রতিবেশী ইউক্রেনের যুদ্ধ নিয়ে গভীর উদ্বিগ্ন। পোলিশদের আশঙ্কা যুদ্ধে ইউক্রেন পরাজিত হলে পোল্যান্ডের মতো দেশগুলোর ওপর কর্তৃত্ব খাটানোর চেষ্টা করবে রাশিয়া। এছাড়াও, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পরোক্ষ সমর্থনের ইঙ্গিতও রয়েছে রাশিয়ার দিকে। যা পোল্যান্ডসহ ইউরোপের বেশিরভাগ অংশকে রুশ সাম্রাজ্যবাদের মুখে ফেলেছে।

এমন অনিশ্চিত ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে বেসামরিক নাগরিকদের সামরিক প্রশিক্ষণের কর্মসূচি হাতে নিয়েছে পোল্যান্ড সরকার। ‘ট্রেইন উইথ দ্য আর্মি’ কর্মসূচির আওতায় নাগরিকদের শেখানো হবে অস্ত্র উৎপাদন ও ব্যবহার, প্রতিরক্ষা কৌশলসহ প্রাথমিক চিকিৎসা পদ্ধতি। এর মাধ্যমে একটি রিজার্ভ ফোর্স তৈরি করবে পোল্যান্ড। যা সম্ভাব্য হুমকি মোকাবিলায় কাজ করবে।

ইউরোপের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে বাধ্য হয়েই সামরিক প্রশিক্ষণে আগ্রহী হচ্ছেন দেশটির নাগরিকেরা। এ বিষয়ে তরুণদেরও উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে।

এ বিষয়ে একজন বলেন, ‘সামরিক জ্ঞান ও প্রশিক্ষণ যেকোনো পরিস্থিতি সহজ করতে আমাদের সাহায্য করবে। কঠিন পরিস্থিতিতেও একজন ব্যক্তি যুক্তিসঙ্গত সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন।’

আরেক তরুণ জানান, ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও অনিশ্চয়তার মধ্যে এ ধরণের প্রশিক্ষণ আমাদের সহায়তা করবে। ভবিষ্যতে কী অপেক্ষা করছে এবং কী চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে সে সম্পর্কে ধারণা থাকবে।

অন্য এক অধিবাসী বলেন, ‘এই সুযোগের সদ্ব্যবহার করা উচিত। সামনে দিনগুলো আসলেই কঠিন। পরিস্থিতি যেকোনো দিকেই যেতে পারে। যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া উভয়ই পোল্যান্ডের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ।;

পোলিশ সরকার জানায়, তার দেশে কমপক্ষে ৫ লাখ সেনা প্রয়োজন। যার মধ্যে বিশাল একটি অংশ রিজার্ভ সদস্য হিসেবে থাকবে। চলতি বছরে সেনা সংখ্যা ২ লাখ থেকে ৩ লাখে উন্নীত করার পরিকল্পনা নিয়েছে দেশটি। প্রতিরক্ষা সক্ষমতা বাড়াতে দেশটি এরইমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দুইশ' কোটি ডলারের একটি সামরিক চুক্তিও করেছে।

পোল্যান্ডের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ওলাদিস্লাভ কোসিনিয়াক-কামিজ বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সামরিক চুক্তিটি পোল্যান্ডের নিরাপত্তাকে আরেক ধাপ এগিয়ে নেবে। এটি একটি বড় বিনিয়োগ। আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা পোল্যান্ডের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ, তবে তা ব্যয়বহুল। যদিও শত্রুর ওপর পাল্টা আক্রমণের চেয়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলা অনেক সাশ্রয়ী।’

গেল বছর পোল্যান্ড তার মোট জিডিপির ৪.১ শতাংশ প্রতিরক্ষা খাতে ব্যয় করে। চলতি বছরে তা বাড়িয়ে ৪.৭ শতাংশে উন্নীত করা হয়েছে। জাতীয় সম্পদের অনুপাতে ন্যাটোতে শীর্ষ বিনিয়োগকারী দেশ পোল্যান্ড।

এএইচ